তোয়াব খান
জাতীয় প্রেস ক্লাব গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে, ক্লাবের আজীবন সদস্য, দৈনিক বাংলার সম্পাদক তোয়াব খান আর নেই। তিনি আজ শনিবার দুপুর ১২ টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক কন্যা ও নাতিনাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্ব^জন, বন্ধুু-বান্ধব, সহকর্মী এবং গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল, সাতক্ষীরার রসুলপুর গ্রামে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ’৯১ এর অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ এবং রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জনাব খান দৈনিক পাকিস্তান ও সংবাদ-এর বার্তা সম্পাদক ছিলেন। স্বাধীনতার পরে তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদক, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ছিলেন। জনকণ্ঠের প্রকাশনার শুরু (১৯৯২) থেকেই তিনি পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন।
সফল, বর্ণাঢ্য ও কর্মনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব তোয়াব খানের জন্ম ঐতিহ্যবাহী এক সাংবাদিক পরিবারে। কলকাতায় বাঙালি মুসলিম সাংবাদিকতার জনক হিসেবে পরিচিত স্বনামধন্য মওলানা আকরম খাঁর উত্তরপুরুষ তিনি। তাঁর দীর্ঘ, ঘটনাবহুল ও সৃজনশীল সাংবাদিকতা জীবনের সূচনা হয়েছিল সংবাদে। স্বাধীনতার আগে তোয়াব খান এদেশের সংবাদপত্রে নতুন ধারা ও যুগের প্রবর্তক ‘দৈনিক পাকিস্তান’ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
পেশা জীবনের শুরু থেকেই তোয়াব খান সাংবাদিকতায় নতুনত্ব, আধুনিকতা ও সৃষ্টিশীলতার উজ্জ্বল এবং অননুকরণীয় প্রমাণ রেখেছেন। তিনি এদেশের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতায় অনন্য একটি প্রতিষ্ঠান। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত বহু প্রতিষ্ঠিত ও খ্যাতিমান সাংবাদিকের প্রতিভা লালন ও বিকাশে তাঁর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। সাংবাদিকতার মাধ্যমে অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোসহীন ও অবিচল সংগ্রামী তোয়াব খান পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চাকরিচ্যুত এবং কারা নির্যাতনও ভোগ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের নাম ‘ফিরে দেখা আজ এবং কাল’।
তাঁর মরদেহ মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছে। কন্যা তানিয়া খান দেশে ফিরলে দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল আলম এক বিবৃতিতে আজীবন সদস্য তোয়াব খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, তোয়াব খান এদেশের সাংবাদিকতার পথিকৃত ও প্রতিষ্ঠান। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হল। নেতৃবৃন্দ শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। - প্রেস বিজ্ঞপ্তি