বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিনামূল্যের অনলাইন বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া শনিবার বলেছে, ধর্ম অবমাননামূলক বিষয়বস্তু বলে অভিহিত করা কিছু নিবন্ধ অপসারণ না করার জন্য উইকিপিডিয়ার ওয়েবসাইটটিকে অবরুদ্ধ করেছে পাকিস্তান।
উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন আশা করেছে, পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি (পিটিএ) অবিলম্বে তাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে। ফাউন্ডেশন বলছে, "তারা বিশ্বাস করে, জ্ঞানের সুযোগ একটি মানবাধিকার।"
প্ল্যাটফর্মটি এক বিবৃতিতে বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে "বিশ্বের পঞ্চম সর্বাধিক জনবহুল দেশটি বিনামূল্যে বৃহত্তম জ্ঞান ভান্ডারে ঢোকার সুযোগ বঞ্চিত করে ফেলেছে।"
পিটিএ মুখপাত্র মালাহাত ওবায়েদ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত ডন সংবাদপত্রকে বলেছেন, “উইকিপিডিয়া নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ দ্বারা চিহ্নিত করা ধর্মবিশ্বাসমূলক বিষয়বস্তু মুছে ফেলার পরেই কেবল সিদ্ধান্তটি পর্যালোচনা করা যেতে পারে।”
উইকিপিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে সরকারের সমালোচনা করেছে পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট এবং এর ব্যবহারকারীরা। তারা সরকারের কাছে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে এবং এই সিদ্ধান্তকে দেশটির বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্য "পশ্চাত্গামী" এবং "ক্ষতিকর" বলে তীব্র নিন্দা করেছে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি তার সম্পাদকীয় নীতি সমর্থন করে বলেছে, উইকিপিডিয়ার নিবন্ধ গুলি বিশ্বজুড়ে প্রায় তিন লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক দ্বারা প্রণীত। আমরা বিশ্বজুড়ে সম্পাদক সম্প্রদায়ের নেওয়া সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান করি এবং সমর্থন করি।"
পাকিস্তান এর আগেও, ইসলামের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বলে বিবেচিত বিষয়বস্তু পোস্ট করার জন্য ফেইসবুক, ইউটিউব এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোর উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
প্রায় ২২ কোটি জনসংখ্যার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে ধর্ম অবমাননা একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় এবং এই আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান পর্যন্ত রয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তানের প্রতিটি সরকার ভিন্নমতকে দমন করতে এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয়-ভীতি দেখানোর জন্য এবং তাঁদের বাকস্বাধীনতা হরণ করতে অজুহাত হিসেবে ধর্ম অবমাননা আইন ব্যবহার করছে। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।