Prof. M Zahidul Haque
এম জাহিদুল হক
ওদেরকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিলো “হ্যালোউইন” পর্যন্ত। তারপর থেকে চার্লি (১৯) এবং নাইগা (২০), যারা একে-অপরকে ভালোবাসতো, তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর কিছুদিন পর পুলিশ চার্লি ও নাইগাকেসানলেই উডল্যান্ড , হার্টফোর্ডশায়ারে এর দূরবর্তী এলাকা থেকে একই সাথে একটি বৃক্ষে ঝুলন্ত
অবস্থায় খুঁজে পায়। এই দুই অনুরক্ত যুগল এক সাথেই মৃত্যুবরণ করে। এদের সন্ধান পেতে পুলিশের কুকুর এবং নাইগার মোবাইল যথেষ্ট সহায়তা করে।
চার্লি ছিল একজন ভালোমাপের গিটারিস্ট ও গায়ক। সে "ডেসার্ট স্মোক" নামের মেটাল ব্যান্ড এর বাদকছিল। সুন্দরী নাইগাও একজন নামি ট্যাটু শিল্পী ছিল। চার্লি তার নিজেকে তেমন ভালোবাসতো না। কিন্তুনাইগার প্রতি ছিল তার গভীর এবং অকৃতিম ভালোবাসা। এই দুই প্রেমিক-প্রেমিকা একসাথে বসবাস করতো,একসাথে মৃত্যুবরণ করে এবং তাদের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী চার্লি ও নাইগাকে একই সাথে সমাধিস্থ করাহয়েছে।
এই সত্য ঘটনাটি ইউ কে এর ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু কেন এই দু’জন তরুণ দম্পতি একসাথে তাদের জীবনাবশন করলো তাও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
উভয় চার্লি ও নাইগা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। চার্লি ১২ বছর বয়স থেকে সাইকোসিস রোগে এবং নাইগা অ্যাসপারগার সিনড্রোম (অটিজম) এ ভুগছিল। চার্লির জন্য নাইগার ছিল গভীর ও একনিষ্ট ভালোবাসা। তবে
তাদের কেউই তাদের শরীরের প্রতি যত্নশীল ছিল না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের উভয়ের দেহেতে কোকেন ও ক্যানাবিস পাওয়া গিয়েছিলো। তাদের মৃত্যুর কারণ বলা হয়েছে অ্যাসফিক্সিয়া (শ্বাসকষ্ট)।
সত্যি কথা বলতে কি চার্লি ও নাইগার মানসিক ব্যাধির মতো অনেক দেশেরই যুবক-যুবতীরা এসব রোগে আক্রান্ত । এ ধরেন রোগগুলো অনেকাংশেই বংশগত; অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে মাদক সেবন,
হতাশা , সামাজিক ম্যাল-অ্যাডজাস্টমেন্ট। সাইকোসিস একটি গুরুতর মানসিক ব্যাধি, যার ফলে রোগী হ্যালুসিনেশন (দৃষ্টি ভ্রম ) বা ডিল্যুশন (বিভ্রম ) এ ভোগে। এই মানসিক ব্যাধি আক্রান্ত মানুষরা সবসময়
আত্মহত্যার চিন্তা করে এবং বাস্তব জগতের সাথে যোগসূত্রতা হারিয়ে ফেলে। অ্যাসপারগার সিনড্রোম (অটিজম)ও একটি জটিল মানসিক ব্যাধি যার ফলে রোগীর স্নায়ুবিক কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এর ফলে
ব্যক্তি স্বাভাবিক সামাজিক আচরণ করতে বার্থ হয়।
এই লেখক মনে করে যে, আমাদের দেশেও মানসিক ব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতএব, মানসিক ব্যাধিসমূহের সঠিক সনাক্তকরণ ও চিকিৎসার উপর আরো জোর দেয়া প্রয়োজন।
(লেখক-শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন প্রফেসর ও ডিন )