গত নভেম্বরে ইথিওপিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের এক শিবিরে নিরাপত্তারক্ষী ও গ্রামবাসীরা টিগ্রায়-এর ৮৩ জন বন্দিকে হত্যা করেছে বলে এক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ঐ প্রতিবেদনটিতে এই হত্যাকাণ্ডকে, দুই বছর আগে টিগ্রায় যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পর থেকে বন্দি সৈন্যদের ভয়াবহতম হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট বলে যে পূর্বে অপ্রকাশিত এই হত্যাকাণ্ডটি ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর সংঘটিত হয়েছে। ঘটনাটি মিরাব আবায়া শহরের কাছের এক শিবিরে ঘটে। ঐ শিবিরে টিগ্রায় এর ২,০০০ এরও বেশি আটক সৈন্যকে বন্দি রাখা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছে যে, ঐ শিবিরের ১৬ থেকে ১৮ জন রক্ষী দুপুরের শেষদিকে বন্দিদের উপর গুলি চালানো আরম্ভ করে। এর ফলে অনেকেই জঙ্গলে পালিয়ে যায়। ইথিওপিয়ার সৈন্যরাও তাদেরকে ধাওয়া করে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয় যে, একঘন্টা দৌঁড়ানোর পর পালিয়ে যাওয়া কিছু ব্যক্তি কিছু স্থানীয় মানুষের সাক্ষাৎ পায়। তারা তাদের কাছে সাহায্য ভিক্ষা করে। কিন্তু তার পরিবর্তে, অন্তত ১৫০ জন মানুষের একটি দল টিগ্রায় এর ঐ মানুষদের উপর দা, লাঠি ও পাথর দিয়ে আক্রমণ চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলে যে, ঐ আক্রমণকারীদের দলটিকে ভুলভাবে বোঝানো হয় যে, টিগ্রায় এর ঐ ব্যক্তিরা যুদ্ধবন্দি, যারা কিনা সামরিক বাহিনীতে নিযুক্ত স্থানীয় মানুষদের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলে যে, হত্যার শিকার হওয়া ঐ সৈন্যদের কেউই ইথিওপিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে যোদ্ধা ছিলেন না।
আক্রমণটি এমন সময়ে হয়েছিল যখন কিনা টিগ্রায় এর বাহিনী ইথিওপিয়ার রাজধানী আদিস আবাবা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছিল। এই প্রতিবেদনের জন্য সাক্ষাৎকার নেওয়া বন্দিরা অনুমান করেন যে, প্রতিশোধের আশঙ্কা বা ইচ্ছা থেকে আক্রমণটি চালানো হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, ঐ বন্দি শিবিরের বাইরে এক গণকবরে টিগ্রায় এর ৮৩ জনের মরদেহ ফেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায় যে, সোমবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের জন্য তারা দুই ডজনেরও বেশি মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, যাদের মধ্যে বন্দি, চিকিৎসা কর্মী, কর্মকর্তা ও স্থানীয় আত্মীয়-স্বজনরা রয়েছেন। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।