Mawlawi Hibatullah Akhundzada, supreme leader of the Taliban.
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দুই দিন পর মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলন হাজির হয়েছে তালেবান।
কাবুলে এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। খবর বিবিসির।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ও নিজের দেশের নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন বার্তা নিয়ে হাজির হন তিনি।
মুজাহিদ বলেন, ‘২০ বছরের সংগ্রামের পর আমরা দেশকে মুক্ত করেছি এবং বিদেশিদের তাড়িয়ে দিয়েছি। এটা পুরো জাতির জন্য গর্বের মুহূর্ত।’
মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আফগানিস্তান আর সংঘাতের যুদ্ধক্ষেত্র নয়। যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের সবাইকে আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। শত্রুতা শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের বাইরে বা অভ্যন্তরীণ কোনো শত্রু চাই না।’
মুখপাত্র বলেন, আমরা কাবুলে বিশৃঙ্খলা দেখতে চাইনি। আমাদের পরিকল্পনা ছিল কাবুলের গেটে থামার, যাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়।
‘কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আগের সরকার এতটাই অযোগ্য ছিল ... তাদের নিরাপত্তা বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছুই করতে পারেনি। আমাদেরই করতে হয়েছে। আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাবুলে প্রবেশ করতে হয়েছিল,’ বলেন মুজাহিদ।
তিনি বলেন, আফগানিস্তানে শরিয়া অনুযায়ী নারীদের অধিকার দেওয়া হবে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
তালেবান মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কোনো সমস্যা করতে চাই না।’
তিনি বলেন, আমাদের ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী কাজ করার অধিকার আমাদের আছে। অন্যান্য দেশের বিভিন্ন পন্থা, নিয়ম ও প্রবিধান আছে ... আমাদের মূল্যবোধ অনুযায়ী নিজস্ব নীতি ও বিধি থাকার অধিকার আছে।
মুজাহিদ বলেন, আমরা শরিয়া ব্যবস্থার অধীনে নারীর অধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতীবদ্ধ। তারা আমাদের কাঁধে কাঁধ রেখে কাজে যাবে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিশ্চয়তা দিতে চাই যে, এখানে কোনো ধরনের বৈষম্য হবে না।
মুখপাত্র বলেন, আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক কাঠামোর মধ্যে মিডিয়ার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। গণমাধ্যমের কাজের ক্ষেত্রে কোনো কিছুই ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে হওয়া উচিত নয়। মিডিয়ার উচিত আমাদের ত্রুটির দিকে মনোযোগ দেওয়া, যাতে আমরা জাতির সেবা করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, মিডিয়ার আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করা উচিত নয়। তাদের জাতির ঐক্যের জন্য কাজ করা উচিত।
তালেবান মুখপাত্র নারীর অধিকার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা নারীদেরকে কাঠামোর মধ্যে কাজ ও পড়াশোনার অনুমতি দিতে যাচ্ছি।’
‘আমাদের সমাজে, আমাদের কাঠামোর মধ্যে নারীরা খুব সক্রিয় হতে চলেছে,’ তিনি বলেন।
তালেবান মুখপাত্র পুনর্ব্যক্ত করছেন যে বেসরকারি মিডিয়া তাদের নিয়মানুযায়ী চলবে।
মুজাহিদ বলেন, ‘আমি গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক কাঠামোর মধ্যে মিডিয়ার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।’
মুজাহিদ বলেছেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা বা শান্তির জন্য সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি। শত্রুর সাথে লড়াইয়ের ফলে যাদের জীবন নষ্ট হয়েছে, এটা তাদেরই দোষ ছিল। আমরা কয়েকদিনের মধ্যে পুরো দেশ জয় করেছি। সরকার গঠনের পর সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
তালেবান মুখপাত্র বলেন, সরকার গঠনের পর আমরা জাতির সামনে কোন আইন উপস্থাপন করা হবে তা নির্ধারণ করতে যাচ্ছি। আমার একটা কথা বলা দরকার; আমরা সরকার গঠনে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছি। এটি গঠনের পরে ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, পুরো সীমানা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। - বিভিন্ন মিডিয়া