News update
  • Israeli military tells Palestinians not to return to north Gaza     |     
  • 13 dead in bus-pickup van collision on Dhaka-Khulna highway     |     
  • Fire at Ctg slum leaves upto 200 families homeless     |     
  • Pubali Bank manager missing with over Tk 2.5 crore in Chandpur     |     

মগবাজার দূর্ঘটনা: নাগরিক নিরাপত্তা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা

খবর 2021-07-04, 11:11am

Screenshot (512)-d2c343d700c790640cef8b0be01cfba01625375688.png

EP Video Conference



ঢাকা, জুলাই ৩, ২০২১: রাজধানীতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ জনিত অগ্নিকান্ডসহ নানা ধরনের দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নাগরিক সচেতনতা, নজরদারি ও চাপ তৈরী ছাড়া সকল ইউটিলিটিকে এগুলো প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়াতে বাধ্য করা যাবেনা। কার্যত নগরকে নাগরিকদের নিরাপদ আবাসস্থল তৈরীর জন্য কমপ্লাসেন্স কমিশন গঠন করার কোনো বিকল্প নেই। এর আওতায় প্রতিটি স্থাপনার সকল সেবা যাচাই করে প্রতি বছর নবায়নযোগ্য সাটিফিকেট প্রদানের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। পাক্ষিক ম্যাগাজিন এনার্জি এন্ড পাওয়ার আয়োজিত “মগবাজার দূর্ঘটনা: নাগরিক নিরাপত্তা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা”র্শীষক ইপি টকস এ বক্তারা উপরের কথাগুলো বলেছেন।
ইপি সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলা ও বিপিসির সাবেক চেয়ারম্যান মুকতাদির আলী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইঞ্জি খন্দকার আবদুস সালেক। আলোচনায় অংশ নেন বুয়েটের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর নূরুল ইসরাম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সাবেক মহাপরিচালক ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান (অবসরপ্রাপ্ত), পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার আন্দোলন নেতা স্থপিত ইকবাল হাবিব, খনি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. মুশফিকুর রহমান, বসুন্ধরা এলপি গ্যাস এর হেড অব সেলস ইঞ্জি জাকারিয়া জালাল. বুয়েটের মেকিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইয়াসির আরাফাত খান এবং ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টাস বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকার।
মুকতাদির আলী বলেন, বিপুল গ্রাহকের বিপরীতে তিতাসের জরুরি রেসপন্স দলের সক্ষমতা সীমিত। এখনও তা ৭০ এর দশকের মতো থেকে গেছে। ফলে দূর্ঘটনা এড়াতে ভোক্তার যেকোনো অভিযোগ জরুরিভাবে মোকাবেলা করার জন্য প্রশিক্ষিত, প্রযুক্তি সমৃদ্ধ পর্যাপ্ত জনবল দিয়ে জরুরি রেসপন্স দল গঠন করা উচিত। আর জনগণকে যেকোনো সংকটে তিতাস বা অন্য গ্যাস কোম্পানিকে জানানো উচিত। সবপর্রি গ্যাস লিকেজ বন্ধ করার জন্য তিতাসের পুরোনো পাইপ লাইন নেটওয়ার্ক প্রতিস্থাপন করা জরুরি। আর এটার সাথে জনসচেতনা বাড়ানোর জন্য মিডিয়ায় প্রচারনা অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রফেসর নূরুল ইসলাম বলেন, মিথেন কিংবা প্রপেন বিউটেন সকল গ্যাস কোনো বদ্ধ স্থানে জমে গেলে তার বিধ্বংসী ক্ষমতা অনেক। ফলে সচেতন থেকে এটা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তিনি গ্যাস দূর্ঘটনায় মৃত ও আহত ব্যাক্তিদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য বিইআরসিকে একটি তহবিল গঠনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রতি ইউনিট গ্যাস থেকে এই তহবিলের জন্য ১ পয়সা করে কেটে রাখা উচিত। আর তিনি প্রতিটি দূর্ঘটনার কারণে প্রকাশ করারও পরামর্শ দেন।
আলী আহমেদ খান বলেন, বিদ্যুৎ এবং গ্যাস মনিটরিং থেকে নাগরিকদের নিরাপদ করতে প্রতিটি স্থাপনায় এর সঠিক ও নিরপাদ ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা তৃতীয় পক্ষের কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে মনিটরিং করানো বাধ্যতামূলক করা দরকার। আর ঐ প্রতিষ্ঠান যাতে যথাযথভাবে কাজ করে তার মনিটরিং ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। নইলে ঢাকা ধীরে ধীরে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি হয়ে ওঠবে। আর যে কোনো দূযোগের সময় গ্যাস সরবরাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করার প্রযুক্তি প্রচলনের পরামর্শ দেন।
ইকবাল হাবিব বলেন, রানা প্লাজা দূর্ঘটনার পর দেশের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার অদক্ষতা প্রকট হয়ে ওঠে। তার সুবাদে ক্রেতাদের চাপে দেশের পোষাক খাত ৯২ শতাংশ শিল্প এখন কমপ্লায়েন্স। তাহলে নগরবাসীর নিরপত্তা এবং নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা চাপ তৈরী করবো না কেন। আর এই চাপ দিতে হবে কমপ্লায়েন্স কমিশন গঠন করার জন্য। এই কমিশনের কাজ হবে নাগরিদের সুরক্ষায় সকলের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা।
ইঞ্জি আবদুস সালেক বলেন, আমাদের গ্যাস লাইনের সঠিক মনিটরিং করা হয় না। এই বিস্ফোরণের জন্য মিথেন গ্যাসই দায়ী। কারণ মিথেন গ্যাসের ঘনত্ব বাতাসের থেকে কম। এজন্য এর বিস্ফোরণ হয় অনেক মারাত্মক। মিথেন গ্যাস ধীরে ধীরে জমাট বাধার পরসেখানে সামান্য স্পার্কেই অনেক বড় বিস্ফোরণ হয়।
ড. ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, ঢাকা গ্যাস ছাড়া এক দিনও চলবেনা। আবার এর অনিরাপদ ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। ফলে যেকোনো দূর্ঘটনার পর তদন্ত করে প্রকৃত কারণ এবং দায় নির্ধারণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে এই প্রবণতা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাবে। তিনি এই ধরনের সকল ঘটনা তদন্তে একটি জাতীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন।
ড. মুশফিকুর রহমান, বাতাসে মিথেনের মাত্রা একটি নির্ধারিত পরিমাণের বেশি হলে তার বিধ্বংসী ক্ষমতা অনেক বড়। মগবাজার দূর্ঘটনাও মিথেন জনিত মনে হচ্ছে। কিন্তু তার উৎস কী নিশ্চিত হওয়া জরুরি। তার মধ্যে নিরাপদ বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সরবরাহ জোরদার কারার জন্য নাগরিক নজরদারির কোনো বিকল্প নেই।
জাকারিয়া জালাল, দাবি করেন মগবাজার দূর্ঘটনা এলপিজি সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে হওয়ার সুযোগ নেই। দূর্ঘগটনা হলেও এলপিজির উপর দোষ চাপানোর সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
অরুণ কর্মকার ফারার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর তথ্য তুলে ধরে বলেন ২০১৬ সালের তুলনায় অগ্নিকান্ডের জন্য গ্যাসের ভূমিকা বেড়ে ২২ শতাংশ হয়েছে। আর এতে বিদ্যুতের ভূমিকা ৪০ শতাংশ। কিন্তু বিদ্যুৎ গ্যাস ছাড়াতো আর চলবে না। তাই সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এর নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।