Grapes are sour. Pinot Gris grape. Creative Commons
"পঞ্চাশ বছরেও বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে শেখেনি। এখনো বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়," সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশে লবিং-তদবির নিয়ে রাজনীতিতে পাল্টাপাল্টি অবস্থান প্রসঙ্গে বিবিসির সাথে আলাপকালে এমনই প্রতিক্রিয়া জানান পঞ্চাশোর্ধ একজন কর্মজীবী।
তার প্রশ্ন: "এখনো কেন আমরা বিদেশিদের মুখাপেক্ষি হবো বলেন? অন্য দেশের কাছে আমরা নালিশ করবো কেন?"
আর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ শিক্ষার্থী সানজিদা বলছিলেন, "বিদেশিরাতো অবশ্যই চেষ্টা করবে তাদের স্বার্থে এখানে কীভাবে হস্তক্ষেপ করা যায়, কিন্তু আমরা কেন তাদের সেই সুযোগটা করে দেব?"
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের লবিং-তদবির এবং তার পেছনে অর্থ খরচ নিয়ে বাংলাদেশে চলছে পাল্টাপাল্টি রাজনীতি। সংসদ অধিবেশনে এ নিয়ে হয়েছে সমালোচনা ও তর্ক-বিতর্ক।
সব দলের মধ্যেই বিদেশমুখীতা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরোধী দলের অবস্থান থেকে সব দলই ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশে নানারকম প্রচার প্রচারণা চালিয়েছে বলে সমালোচনা রয়েছে।
বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক সংকটে বিদেশিদের নানাভাবে ভূমিকা রাখতেও দেখা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই বিদেশমুখীতা সব দলের বিরুদ্ধেই আছে।
"এটা আসলে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থাহীনতারই একটা প্রতিফলন আমি বলবো। তারা জনগণের ওপর আস্থা না রেখে বিদেশিদের ওপর আস্থা রাখতে চায়। এবং এই সুযোগটা নিয়ে আমি বলবো বিদেশিরাও তাদের সীমার বাইরে পা বাড়ায়।"
সম্প্রতি জাতীয় সংসদ এবং রাজনৈতিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আসলেও রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টিকে বেআইনি বলে মনে করেন না।
এছাড়া রাজনৈতিক সংকটকালে আন্তর্জাতিক ভূমিকার প্রয়োজন আছে বলেও সব সময় মনে করেছে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলগুলো।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "এখানে বার বার মার্শাল ল এসেছে, স্বৈরাচাররা এসে সামরিক শাসন জারি করে দেশ পরিচালনা করেছে। তখন কিন্তু সংবিধান ছিল না।"
"এই সকল ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিতে বিদেশিদের সহযোগিতা লেগেছে, তাদের অভিজ্ঞতা এটাকে আমরা শেয়ারিং করেছি। তবে তার অর্থ এই না যে আমরা চাই যে তারা এখানে হস্তক্ষেপ করুক"।
এ ব্যাপারে বিএনপির গবেষণা সেলের ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, "আপনি কিন্তু কখনোই নিজে থেকে সবকিছু করে নিতে পারবেন না। আপনার স্বীকৃতি লাগবে বা আপনার বিরুদ্ধে কিছু একটা লাগবে।"
"আউটার ওয়ার্ল্ডের [বর্হিবিশ্বের] যে একটা ইনফ্লুয়েন্স [প্রভাব] বা আউটার ওয়ার্ল্ডের একটা এইড [সহায়তা] বলেন বা তাদের ইনফ্লুয়েন্স বলেন, তাদের আমাদের প্রতি তদারকি বলেন এটা সব দেশের জন্যেই কিছু না কিছু হয়। একেবারেই আলাদা করে বাংলাদেশকে দেখার কোনো সুযোগ আসলে নেই।" - বিবিসি বাংলা, ঢাকা