Bangladesh Muslim League observing the 150th birth anniversary of Nawab Sir Salimullah on June 06
ব্রিটিশ শাসিত ভারতের নির্যাতিত ও বঞ্চিত মুসলমানদেরকে রাজনৈতিক ভাবে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ করার বীজটি নবাব স্যার সলিমুল্লাহ বাহাদুর ১৯০৬ সালের ৩০শে ডিসেম্বর ঢাকায় রোপণ করেছিলেন যা ১৯৪০ সালের মধ্যে মহীরুহে পরিণত হয়। সাম্প্রদায়িক হিন্দু নেতাদের এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধিতার কারণে ১৯১১ সালের ১২ই ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গ রহিত করার পর ব্রিটিশ সরকার ক্ষুব্ধ নবাব সলিমুল্লাহর দাবী মেনে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নবাব সলিমুল্লাহ নিজের দুইশত বিঘা জমি দান করেন। পূর্ব বঙ্গের পশ্চাৎপদ ও ‘শিক্ষা বঞ্চিত চাষা ভূষা’ মুসলমানরা যাতে শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারে সে জন্য পূর্ববঙ্গে মুসলিম প্রজা শোষক কোলকাতা প্রবাসী বর্ণবাদী হিন্দু জমিদাররা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে নেমে পড়ে বলেন ‘এটি প্রতিষ্ঠিত হলে বাঙালী জাতি বিভক্ত হয়ে পড়বে এবং শিক্ষার অবনতি ঘটবে’। প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে সাম্প্রদায়িক ও মুসলিম বিদ্বেষী বাঙালী হিন্দু নেতারা বললেন যে, ‘পূর্ব বাংলার মুসলমানরা অধিকাংশই কৃষক, তাই তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কোন দরকার নেই’।
নবাব সলিমুল্লাহ যদি তৎকালীন সময়ে মুসলমানদের রাজনৈতিক আশ্রয়স্থল মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা না করতেন এবং এঅঞ্চলের মুসলিম ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ না করতেন তবে নিশ্চিত করেই বলা যায় বর্তমান পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলমানদের দিল্লীর শাসনাধীন হয়ে ভারত ও কাশ্মীরের মুসলমানদের ভাগ্য বরণ করতে হত। জমিদারী বন্ধক রেখে-ঋণ নিয়ে মুসলিম জাতিসত্তার বুনিয়াদ প্রতিষ্ঠার জন্য- মুসলমানদের শিক্ষা বিস্তারের জন্য লাগাতার কাজ করে নবাব সলিমুল্লাহ, কার্যত দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অথচ জাতির ভবিষ্যত বিনির্মাণে সর্বস্ব ত্যাগী ইতিহাসের এই মহানায়ককে আমরা তার যোগ্য সন্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছি যা পুরো জাতির জন্য লজ্জাস্কর।
উপমহাদেশে মুসলিম জাতিসত্তার জনক, নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা নবাব স্যার সলিমুল্লাহ বাহাদুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ আজ বাদ যোহর বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে দলীয় পল্টনস্থ প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন। দলীয় নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আজিজ হাওলাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, এনডিপির মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, অতিঃ মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, কাজী এ.এ কাফী, কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম, এড. হাবিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গনী, শেখ এ সবুর, এড. আফতাব হোসেন মোল্লা, মোঃ নূরআলম, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক - কাজী এ. এ কাফী, অতি: মহাসচিব ০১৮১৭০১৪৪৪০