বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা ৯ মার্চ থেকে পরিশোধ করা শুরু হবে-এ কথা জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আর দেয়া হবে মোট ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আর শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের লে-অফকৃত ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিক ও কর্মচারীদের ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত যাবতীয় পাওনাদি ৯ মার্চ হতে পর্যায়ক্রমে পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ম্যানেজিং ডিরেক্টর (বেক্সিমকো লিমিটেড)। চলতি মাস-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের লে-অফকৃত ১৪টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য ৩১,৬৬৯ জন শ্রমিক এবং ১,৫৬৫ জন কর্মকর্তার পাওনা বাবদ মোট ৫২৫.৪৬ (পাঁচশত পঁচিশ কোটি ছেচল্লিশ লাখ) টাকা প্রয়োজন। এরমধ্যে অর্থ বিভাগের পরিচালন ব্যয় খাত হতে ৩২৫ কোটি ৪৬ (তিনশত পঁচিশ কোটি ছেচল্লিশ লাখ) টাকা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কেন্দ্রীয় তহবিলের বিভিন্ন হিসাব হতে ২০০ (দুইশত) কোটি টাকা ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঋণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ কর করবে অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় তহবিলের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাব হতে প্রদত্ত ২০০ (দুইশত) কোটি টাকা পুনর্ভরণ (Liquidity Guarantee) এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বলেও জানান তিনি।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২০০৮-২০২৪ পর্যন্ত জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক হতে ঋণ প্রদানের সাথে দায়ী/ জড়িত কর্মকর্তা, ব্যাংকের বোর্ড সদস্য, কোম্পানির বোর্ড সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয় যে, ঋণ প্রদানের সাথে জড়িত দায়ী বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাংক ও কোম্পানিসমূহের কর্মকর্তা/ বোর্ড সদস্য ও ব্যক্তিগণ যাতে দেশের বাহিরে যেতে না পারে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তাদের পাসপোর্ট জব্দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রতিষ্ঠানসমূহের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
উচ্চপর্যায়ের কমিটিতে আছেন-
১. লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত (উপদেষ্টা পদমর্যাদা)-আহ্বায়ক;
২. বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি-সদস্য;
৩. বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি-সদস্য;
৪. অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষে একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি-সদস্য;
৫. রিসিভার, বেক্সিমকো লিমিটেড-সদস্য; এবং ৬. চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সদস্যসচিব।