ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচীব জবাইদুল কবিরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলা শহরে এ ঘটনাটি ঘটে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের উপস্থিতিতে এসব ওষুধ জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, এ ঘটনায় যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে কারণেই তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এভাবে সরকারি ওষুধ নষ্ট করতে পারে না। তার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই জড়িতদের।
জানা যায় রাতে ঠাকুরগাঁও সার্কিট হাউজ চত্বরে রাখা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মৌসুমী আক্তারের গাড়ির পেছনে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলো উদ্ধার করা হয়। এসময় গাড়িচালক মো. জয়নাল আবেদীনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে সার্কিট হাউজে জেলার মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানার সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মৎস্য অধিদফতরে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. আবদুর রউফ, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইজাহার আহম্মেদ, জেলা মৎস কর্মকর্তা আরাফাত উদ্দীন আহম্মেদ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মৌসুমী আক্তারসহ অনেকে।
এ সভায় অংশ নেয়া খামারিদের তথ্য সূত্রে, সভা শেষে সার্কিট হাউজ চত্বরে রাখা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মৌসুমী আক্তারকে বহনকৃত ঢাকা মেট্রো-ঠ ১৩৭৬৩৫ গাড়িটি সবার উপস্থিতিতে তল্লাশি চালানো হয়।
তল্লাশি চলাকালে দেখা গেছে, সরকারের বরাদ্দকৃত ওষুধ প্রান্তিক খামারিদের না দিয়ে গাড়ির পেছনে ফেলে রাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। ফলে প্রান্তিক খামারিরা এতে থেকে বঞ্চিতের পাশাপাশি সরকারের অর্থ ভেস্তে গেছে।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেট গোলাম ফেরদৌস ওষুধগুলো জব্দ করেন। একই সাথে তদন্ত সাপেক্ষে চালক জয়নাল আবেদিনকে আটক করা হয়। শুধু তাই নয় আগামী সাত দিন অভিযুক্ত প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মৌসুমী আক্তারকে জেলার বাইরে না যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসময় প্রান্তিক খামারিরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ওষুধ খামারিদের জন্য আসলেও সবাইকে দেয়া হয় না। সরকারি ওষুধ প্রান্তিক খামারিদের দিলে বেসরকারি ওষুধ প্রতিনিধিদের সাথে চুক্তি হওয়া কর্মকর্তাদের কমিশন কমে যাবে। কর্মকর্তাদের সাথে ওষুধ কোম্পানির যোগসাজশের কারণেই এমন কাজে লিপ্ত হন তারা। এর দায়ে চালককে সাময়িকভাবে আটক করা হয়েছে। এখানে চালকের কোন দোষ আছে বলে মনে হয় না। তিনি কর্মকর্তার একজন সহকারী, ধরা দরকার কর্মকর্তাকে। সেই সাথে দায় এড়াতে পারেন না জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ইজাহার আহম্মেদ।
এরই মধ্যে প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচীব জবাইদুল কবিরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। দ্রুতই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।