News update
  • CA Yunus pays homage to Liberation War martyrs on Victory Day     |     
  • Bangladesh capital market extends losing streak for second day     |     
  • Bangladesh celebrates Victory Day Tuesday     |     
  • 'Different govts presented history based on their own ideologies': JU VC     |     

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে : ট্রাম্প

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2025-03-15, 11:39am

trump-6ad5d29de368db3dcf6f9d8e133a223a1742017199.jpg




ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনাকে ‘ভালো ও ফলপ্রসূ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় মস্কোতে পুতিন ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের সাক্ষাতের পর এমনটি জানান ট্রাম্প। বৈঠকের পর ক্রেমলিন অবশ্য বলেছে, তারা শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সতর্ক আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। খবর বিবিসির।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, আলোচনা ‘এই ভয়ঙ্কর, রক্তাক্ত যুদ্ধের অবসান ঘটানোর একটি খুব ভালো সুযোগ’ প্রদান করেছে। 

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আলোচনা টেনে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে ‘খেলা খেলতে’ দেওয়া হবে না।

এই সপ্তাহের শুরুতে ইউক্রেন মার্কিন প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে, তবে রাশিয়া এখনও এতে সম্মতি জানায়নি। বৃহস্পতিবার পুতিন বলেন, যুদ্ধবিরতির ধারণাটি ‘সঠিক এবং আমরা এটি সমর্থন করি। তবে এতে কিছু মতপার্থক্যও রয়েছে।’ একইসঙ্গে তিনি শান্তির জন্য বেশ কিছু কঠিন শর্ত আরোপ করেন। জেলেনস্কি অবশ্য পুতিনের এই প্রতিক্রিয়াকে ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন।

শুক্রবার ইউক্রেনের নেতা জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একাধিক পোস্টেও পুতিনের সমালোচনা অব্যাহত রাখেন। তিনি লেখেন, ‘পুতিন এই যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না, কারণ এতে তার কিছুই থাকবে না। এ কারণেই তিনি এখন যুদ্ধবিরতির আগে থেকেই অত্যন্ত কঠিন এবং অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি করে কূটনৈতিক (প্রক্রিয়াকে) ধ্বংসের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।’

জেলেনস্কি আরও বলেন, পুতিন সবাইকে ‘অন্তহীন আলোচনায় টেনে আনবেন... অর্থহীন আলোচনায় দিন, সপ্তাহ ও মাস নষ্ট করবেন, যখন তার বন্দুক মানুষ হত্যা করতে থাকবে’। 

‘পুতিন যেকোনো শর্ত উত্থাপন করেন, তা কেবল কূটনীতিকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা হিসেবে। রাশিয়া এভাবেই কাজ করে এবং আমরা এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলাম’, যোগ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। 

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতি ক্রেমলিনের ‘সম্পূর্ণ অবজ্ঞা’ প্রমাণ করে, পুতিন ‘শান্তির বিষয়ে আগ্রহী নন’।

কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘যদি রাশিয়া অবশেষে আলোচনার টেবিলে আসে, তাহলে আমাদের অবশ্যই যুদ্ধবিরতি (প্রক্রিয়া) পর্যবেক্ষণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যাতে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত হয়। যদি তারা তা না করে, তাহলে এই যুদ্ধের অবসানের জন্য রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে আমাদের প্রতিটি উপায়ে চেষ্টা করতে হবে।’

শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জেলেনস্কি জোরালোভাবে ‘রাশিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রত্যেককে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করতে পারে এমন শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ পুতিন নিজে থেকে যুদ্ধ বন্ধ করবেন না।

জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘পুতিন যুদ্ধক্ষেত্রের প্রকৃত পরিস্থিতি... হতাহতের সংখ্যা’ এবং ‘তার অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা’ সম্পর্কে মিথ্যা বলছেন।’ পুতিন কূটনীতিকে ব্যর্থ করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

তবে হোয়াইট হাউস বিশ্বাস করে, উভয় পক্ষ ‘শান্তি প্রচেষ্টায় এত কাছাকাছি কখনও ছিল না’। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, বৃহস্পতিবার মস্কোতে পুতিন ও উইটকফের মধ্যে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প ‘পুতিন ও রাশিয়ানদের ওপর সঠিক কাজটি করার জন্য চাপ দিচ্ছেন’।

ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে পুতিনকে ‘জোরালোভাবে অনুরোধ’ করা হয়েছে যেন তিনি ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জীবন রক্ষা করেন, যাদের তিনি রাশিয়ার বাহিনী দিয়ে বেষ্টিত বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি হবে ‘ভয়াবহ গণহত্যা’, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেখা যায়নি।

এর আগে বৃহস্পতিবার পুতিন বলেন, কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনারা ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে এবং তারা সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। গত বছর ইউক্রেন দখলকৃত অঞ্চলটি পুনরুদ্ধারের জন্য রাশিয়া প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।

এদিকে শুক্রবার ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ তাদের সৈন্যদের ঘেরাও করার বিষয়টি অস্বীকার করে এটিকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলে অভিহিত করেছেন। এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের ইউনিটগুলোকে ঘেরাও করার মতো কোনো হুমকি আসলে নেই।’  

ট্রাম্পের অনুরোধের জবাবে পুতিন অবশ্য বলেছেন, কুরস্কে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা যদি অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে তাদের সঙ্গে ‘আন্তর্জাতিক আইনের নিয়ম এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের আইন অনুসারে মর্যাদার সহিত আচরণ করা হবে’। 

ইতোমধ্যে জি৭ জোটের সদস্যরা কুইবেকে বৈঠক করছেন, যেখানে আয়োজক দেশ কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছেন, সব সদস্য ইউক্রেনীয়দের সমর্থিত যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। তিন বলেন, ‘আর আমরা এখন রাশিয়ার প্রতিক্রিয়াগুলো দেখছি, তাই বল এখন রাশিয়ার কোর্টে।’

বৈঠকে উপস্থিত থাকা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, সদস্যরা ‘কোনো শর্ত ছাড়াই’ যুদ্ধবিরতির আহ্বানে ঐক্যবদ্ধ। 

বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বা সংবাদ সম্মেলনে নেতারা যা বলেছেন, তার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র নীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই যুদ্ধের অবসানের একমাত্র উপায় হলো আলোচনার প্রক্রিয়া।