News update
  • Japan Issues Tsunami Alert After Strong 7.6 Quake     |     
  • Bangladesh Plans Record Flag-Parachute Display on Victory Day     |     
  • UN Launches $33 Billion Appeal to Aid 135 Million People     |     
  • CA urges united efforts to stop food contamination voicing concern     |     
  • Tarique obliquely slams Jamaat for ‘propaganda’ against BNP echoing AL     |     

প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্যাম্পাস 2025-12-08, 7:41pm

rtwerwerwer-713fc0caa2cb02dd24ab9048593d8ace1765201299.jpg




রাজধানীর বড় সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন চলার মধ্যেই এ নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া পরিমার্জন করে চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। এ কাজ সম্পন্ন করে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিমার্জিত খসড়ার ওপর আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে মন্ত্রণালয়।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই ব্যাখ্যা দিয়েছে। আসন্ন শীতকালীন ছুটি শেষে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে বলে ব্যাখ্যায় আশার কথা জানানো হয়।

রাজধানীর বড় সাত কলেজ ঘিরে সৃষ্ট সংকট আরও জটিল হচ্ছে। এই কলেজগুলো নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর পক্ষে-বিপক্ষে এখন অন্তত পাঁচটি পক্ষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে সোমবারও রাজধানীর শিক্ষা ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের একদল শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে কলেজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবিতে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ করে আসছেন ঢাকা কলেজসহ একাধিক কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। গতকাল তারা কলেজ ক্যাম্পাসসহ আশপাশের এলাকার সড়কে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পাঁচটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র স্কুলিং মডেলভিত্তিক খসড়া অধ্যাদেশ উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলবে—দাবি করে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে আসছেন কলেজগুলোর শিক্ষকেরা। আর ইডেন মহিলা কলেজকে কেবল নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে আসছেন এই কলেজের ছাত্রীদের অনেকেই। এর মধ্যে গত শনিবার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ প্রস্তাবিত কাঠামোর (স্কুলিং) বিরোধিতায় নামেন। সব মিলিয়ে সাত কলেজ নিয়ে সৃষ্ট সংকট বেশ জটিল রূপ নিয়েছে।

এ রকম পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ব্যাখ্যায় বলা হয়, মানসম্মত শিক্ষা, সময়মতো পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও ফল প্রকাশ এবং প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনাগত উৎকর্ষ নিশ্চিত করার বিষয়ে ঢাকা শহরের সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাচ্ছে। এর খসড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আগে পাঠিয়েছে, তা পরিমার্জন করে চূড়ান্ত করার কাজ চলমান রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, অংশীজন ও সর্বসাধারণের মতামত গ্রহণের জন্য খসড়া অধ্যাদেশটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। খসড়া বিষয়ে বিভিন্ন মহল হতে পাঁচ হাজারেরও বেশি মতামত পাওয়া গেছে। পাশাপাশি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে তিনটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে, নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মতামত সংগ্রহের কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাপ্ত প্রতিটি মতামত আইনি ও বাস্তবতার নিরিখে পর্যালোচনা করে খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে।

আশা করা যাচ্ছে, পরিমার্জনের কাজ সম্পন্ন করে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিমার্জিত খসড়ার ওপর আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা সম্ভব হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে খসড়া চূড়ান্ত করার কাজ চলমান রাখার পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন, সাত কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করাসহ সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্যবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়, সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন ও ক্লাস পরিচালনার বিষয়ে গত ১১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি, অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন এবং সাত কলেজের অধ্যক্ষদের অংশগ্রহণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করে নির্দেশনা দেয়া হয়।

ব্যাখ্যায় আরও জানানো হয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন ইউনিটে ১০ হাজার ১৯৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে ৯ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তির নিশ্চয়ন সম্পন্ন করেন। এই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন ও পাঠদানের জন্য একটি পরিচালন ম্যানুয়েলও অনুমোদন করা হয়েছে।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন, তাদের ক্লাস শুরুর বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে ৪ ডিসেম্বর অধ্যক্ষ এবং ৭ ডিসেম্বর শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। ভর্তি বিজ্ঞপ্তির আলোকে বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর জন্য নিজ নিজ কলেজের শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন শীতকালীন ছুটি শেষে ১ জানুয়ারি এই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে বলে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ব্যাপকতা, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদ সংরক্ষণ, কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য রক্ষা, নারীশিক্ষার সুযোগ সংকোচন না করা, নারীদের জন্য নির্ধারিত কলেজগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রাখা, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে কলেজগুলোর মালিকানা সংরক্ষণ, কলেজগুলোর বিদ্যমান উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না করা, সর্বোপরি প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সাত কলেজের সম্পৃক্ততার ধরন বিষয়ে উপযোগী কাঠামো নির্ধারণসহ সব সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে। সময়সাপেক্ষ এ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সব মহলের ধৈর্যশীল আচরণ ও বিবেচনা একান্ত কাম্য। সবার সহযোগিতায় সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ও সমন্বিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিশ্বাস করে।

ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ  ও সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকসহ সব অংশীজনের ন্যায্য স্বার্থ রক্ষা এবং দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে ইতিবাচক একাডেমিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা এ বিভাগের প্রধান লক্ষ্য। ব্যক্তিগত ধারণা, অসম্পূর্ণ তথ্য বা গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি বা পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি না করে সরকারি কর্মচারী হিসেবে শিক্ষকেরা পেশাদারি বজায় রাখবেন এবং শিক্ষার্থীরা নিজের অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করবেন বলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ প্রত্যাশা করে। শিক্ষার্থীদের মূল্যবান শিক্ষাজীবন এবং সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য বিশেষভাবে আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।