News update
  • UNRWA Situation Report on Crisis in Gaza & Occupied West Bank     |     
  • Intimidation or bloodshed cannot halt Bangladesh’s march to democracy     |     
  • Khaleda Zia integral to an important chapter in BD history: Yunus     |     
  • Enthusiasm marks Victory Day celebrations across Bangladesh     |     
  • Dhaka-Delhi ties deep; to be shaped by trust, dignity, mutual respect     |     

ফারাক্কা লংমার্চ দিবসের ডাকঃ যৌথ নদী রক্ষায় সোচ্চার হোন

পানি 2023-05-17, 11:46am

farakka-long-march-day-dicussion-meeting-by-ifc-on-16-may-2023-3603e2262d29d7ce9aef102a77c9117a1684302391.png

Farakka Long March Day dicussion meeting by IFC on 16 May 2023.



ঢাকা, ১৬ মে ২০২৩ - বাংলাদেশের যৌথনদী ও পরিবেশ রক্ষার জন্য জনগনকে সাথে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে। ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ আহবান জানান। জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খান হলে আলোচনা সভার আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)।

১৬ মে মঙ্গলবার ছিল ঐতিহাসিত ফারাক্কা লংমার্চ দিবস। ১৯৭৬ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী গঙ্গার পানি একতরফা প্রত্যাহারের প্রতিবাদে এবং বাংলাদেশের পানি প্রাপ্তি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে রাজশাহী থেকে সীমান্তের কাছে কানসাট পর্যন্ত এই লংমার্চের আয়োজন করেছিলেন। তার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৭৭ সালের প্রথম গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু পরবর্তিতে এই চুক্তির মূল রক্ষাকবচ গ্যারান্টি ক্লজ বাদ দিয়ে সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। উজান থেকে পানি না আসলে বাংলাদেশের কিছুই করার থাকেনা। অন্যদিকে তিস্তাসহ ৫৪ যৌথ নদীর উজানে বাঁধ নির্মান করায় বাংলাদেশে এখন আর স্বাভাবিক বন্যা হচ্ছেনা। শুষ্ক মওসুমে বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল শুকিয়ে গিয়ে মরুকরণের প্রক্রীয়া শুরু হয়েছে। তাই মাওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ আজো প্রাসংগিক।

বক্তারা বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশ নদীর বয়ে আনা পলি থেকে সৃষ্ট। নদীমাতৃক এই দেশের উপর দিয়ে সাগরে যাওয়া নদীগুলোর প্রবাহ ব্যাহত হওয়ায় বাংলাদেশের ভৌগলিক অস্তিত্ব বিপন্ন। বিগত কয়েক দশক ধরে নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ না আসায়, বাংলাদেশের পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। মারাত্মক ক্ষতিকারক সাগরের পানির লবনাক্ততা উপকুল থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। দেশের প্রাকৃতিক প্লাবনভূমির অধিকাংশ এলাকায় এখন আর বর্ষার পানি আসেনা। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছসহ অনেক জলজ প্রানী; শেওলা, শালুক, শাপলা এবং আরো অনেক জলজ উদ্ভিদ বহু জেলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অন্যদিকে শুষ্ক মওসুমে পানিবঞ্চিত গঙ্গা ও তিস্তা অববাহিকায় অনেক নদী মরে গেছে এবং মরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এমন অবস্থায় মানুষের জীবন জীবিকা বিপন্ন। 

আন্তর্জাতিক নদী ও পানি বিষয়ক আইন মেনে চললে ভাটির দেশ বাংলাদেশে এমন পরিবেশগত বিপর্যয় দেখা দিতনা। প্রাকৃতিক সম্পদ নদীকে রাজনৈতিক বর্ডারে ভাগ করা বা আটকে দেয়া যায়না। উজানে এমন কিছু করা সমিচীন নয় যার ফলে ভাটির দেশ ক্ষাতগ্রস্ত হয়। সকল যৌথ নদী উৎস থেকে সাগর পর্যন্ত প্রবাহমান থাকতে হবে। নাহয় নদীগুলো মরে যাবে। বাংলাদেশের নদী-পরিবেশগত বিপর্যয় সম্পর্কে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতসহ সারা দুনিয়ার পানি বিশেষজ্ঞরা অবহিত ও সোচ্চার। এ নিয়ে কথা বলা কারো বিরুদ্ধে শত্রুতা নয়। যৌথ নদীর পানি সঠিক ব্যবহার এবং নদী-অববাহিকার উজান ও ভাটির অধিবাসিদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপি চলছে গবেষনা। কারণ তাছাড়া নদী বাঁচবেনা। বাংলাদেশের উচিত একথা বলিষ্টভাবে বলা এবং বিপর্যয় এড়ানো এবং প্রবাহ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।

বক্তারা মাওলানা ভাসানীর দূরদৃষ্টির ভূয়সি প্রসংশা করেন এবং সকলকে দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার অন্দোলনে ৯৬ বছর বয়সে দেয়া তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে আইএফসি নিউ ইয়র্ক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালুর অসুস্থতায় সমবেদনা জানানো ও তাঁর আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া করা হয়। 

উক্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন জাতীয় পার্টি (জামাল) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবি ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা কাফি রতন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এলাহি নেওয়াজ খান, মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা নূরুল হুদা চৌধুরী, স্যাম্যবাদী দল নেতা কাজী মোস্তফা কামাল, আইএফসির সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ।

জাতিসংঘের সাবেক পানি ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং আইএফসি বাংলাদেশ-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ডঃ এস আই খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সভাপতিত্ব করেন আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।