Farakka Long March. Moulana Abdul Hamid Khan Bhasani addressing a rally Rajshahi Madrasah Maidan at the start of the Historic Farakka Long March on 16 May 1976
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে আয়োজিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ থেকে শিক্ষা নিয়ে ৫৪টি অভিন্ন নদী রক্ষায় এবং দেশের পরিবেশ বাঁচাতে বাংলাদেশ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বুধবার আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) আহ্বান জানিয়েছে। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ফারাক্কা লংমার্চের আয়োজন করেছিলেন।
ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে বুধবার ১৫ মে প্রেরিত এক যৌথ বিবৃতিতে, আইএফসির নিউইয়র্ক এবং বাংলাদেশের নেতারা মওলানা ভাসানীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তাঁর আন্দোলনের ফলে ১৯৭৭ সালের গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরের দ্বার উম্মুক্ত হয় এবং বৃহৎ প্রতিবেশী ভারত কতৃক একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহারের সমাপ্তির পথ প্রশ্বস্থ হয়।
এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ৫৪টি অভিন্ন নদী থেকে পানি সরিয়ে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাব, এবং বর্ষামওসুমে একদিকে তিস্তায় মারাত্মক বন্যা অন্যদিকে মেঘনা ও গঙ্গা অববাহিকাসহ অন্যান্য অঞ্চলে স্বাভাবিক মৌসুমি প্লাবন না হওয়ায় পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। ৫৭টি যৌথ নদী বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যার মধ্যে ৫৪টি ভারত হয়ে এবং তিনটি মিয়ানমার থেকে আসে।
৩০ বছর মেয়াদী ১৯৯৬ সালের গঙ্গার পানি চুক্তি যা দুই বছরের মধ্যে শেষ হবে, শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে সম্মত পরিমাণ পানি প্রবাহের গ্যারান্টি দেয় না, কারণ এটি ফারাক্কা পয়েন্টের উজানে পানির গতি পরিবর্তনের বিষয়ে নীরব। তিস্তার ক্ষেত্রে পুরো শুষ্ক মৌসুমের প্রবাহ পশ্চিমবঙ্গের গজল ডোবা ব্যারেজ থেকে তুলে দেওয়া হয় অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে খরস্রোতা এই পাহাড়ি নদীর উপর নির্মিত ব্যারাজের সমস্ত স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়, যার ফলে অববাহিকার বাংলাদেশের অংশ ধ্বংসাত্মক বন্যা এবং তীর ভাঙনের শিকার হয়। এটি শুধু ফসলের ক্ষতি করে না, প্রতি বছর হাজার হাজার পরিবারকে গৃহহীন করে।
মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর মাত্র ছয় মাস আগে আয়োজিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ তাই আজও প্রাসঙ্গিক। এই মহান নেতা গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবির পক্ষে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। নদীমাতৃক এই দেশকে পরিবেশগত বিপর্যয় এবং জীবন ও জীবিকার ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য এখন ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য অংশ বুঝে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আইএফসি নেতৃবৃন্দ সহস্রাব্দ ধরে নদী দ্বারা সৃষ্ট বাংলাদেশকে রক্ষা করতে এবং নদীগুলোকে সাগর পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখতে নদীর অববাহিকা ব্যাপী টেকসই ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার পথ অনুসরণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন - আইএফসি নিউইয়র্কের মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা; আইএফসি বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর জসিম উদ্দিন আহমাদ, সাধারণ সম্পাদক, সৈয়দ ইরফানুল বারী এবং আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।