News update
  • Israeli strikes kill 43, including children, in Gaza     |     
  • WFP Deputy Chief Warns of Deepening Crisis in Gaza     |     
  • UN Warns Gaza Fuel Crisis Threatens Humanitarian Collapse     |     
  • WHO’s Saima Wazed placed on indefinite leave amid graft probe     |     
  • UNRWA Commissioner-Gen. on Gaza: 800 starving people killed     |     

কানাডার গ্রীষ্মের ছুটি

প্রবাস 2025-07-06, 12:37am

nazrul-islam-enayetpur-d535aa1c26118458cd6080737a9f5aca1751740661.jpg

Nazrul Islam



নজরুল ইসলাম

ক) ক্যানাডা এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। এ দেশে চারটি স্বতন্ত্র মৌসুম : শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম এবং শরৎকাল। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মৌসুম পরিবর্তনে আবহাওয়া এবং তীব্রতা আলাদা আলাদা ভাবে দেখা দিয়ে থাকে ।কানাডার উত্তরাংশের অঞ্চল অতিরিক্ত ঠান্ডা যা তিনটি অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত : ইয়ুকন, নর্থওয়েস্ট টেরিটরিজ, এবং নুনাভুট ; এ সব অঞ্চলে অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য লোকবসতি কম ।

কানাডার চারটি মৌসুম প্রাকৃতিক শোভা, তাপমাত্রা এবং আবহাওয়া নির্ণয় করে ।

কানাডা সম্পর্কে ভাবলে তাত্ক্ষণিকভাবে শীত বা ঠান্ডা আবহাওয়ার কথা প্রথমেই মনে আসে, তা সত্ত্বেও এখানে আবহাওয়া ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। কানাডা একটি বিশাল দেশ, প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত,তবে এই দেশের লোকসংখ্যা চার কোটির ও কম । শীত বা ঠান্ডার সময় এ দেশে প্রচন্ড ঠান্ডা ও শুভ্র বরফে আচ্ছাদিত এবং গ্রীষ্মে সবুজ ও ফুলের মনোমুগ্ধকর শোভা যে কোনো ব্যক্তির প্রাণ কেড়ে নেবে।

সেপ্টেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত এ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকে এবং জুলাই -অগাস্ট এই দুই মাস ছেলেমেয়ে এবং শিক্ষক ও শিক্ষয়িত্রী ছুটি উপভোগ করে। গ্রীষ্মের ছুটি- স্কুল, কলেজ ও উনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা কিভাবে উপভোগ করে সে সম্পর্কে লিখতে গিয়ে উপরে এ দেশের চার ঋতু সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হয়েছে।

খ) এ দেশের স্কুল, কলেজ বা ইউনিভার্সিটি গ্রীষ্মের ছুটিতে বন্ধ থাকলে ও এ সময় স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে প্রচন্ড ভিড় থাকে এবং ছোট ছোট শিশু থেকে বয়স্ক বা নবাগতরা বিভিন্ন ধরণের আমোদ -প্রমোদজনক কোর্সে অংশগ্রহণ করে সময় অতিবাহিত করে ; আবার অনেকে এ সময় দেশ ভ্রমণ করে ও উপভোগ করে। সে যাই হোক নিম্নে এ দেশের কমিউনিটি সেন্টারে যে ধরণের কার্যকলাপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে তার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হলো :

১ ) ইমিগ্রান্টস বা শরণার্থী : সারা বছর জুড়ে এ দেশে নবাগত -বাহির দেশ থেকে আসে যাদের ইংরেজি ভাষা , কম্পিউটার, হাতে কলমে নানাহ কোর্স বা কাজের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয় । এ সব কমিউনিটি সেন্টারে বয়স্কদের জন্য ফ্রি নানাহ ধরণের পড়াশুনার ব্যবস্থা রয়েছে : ১ ) এ ছাড়া ইন্টারনেট প্রযুক্তি বিদ্যা যা বয়স্কদের ফ্রি ব্যবহার শিক্ষা দেয়া হয়।

২ ) স্বাস্থ্য সেবা : শারীরিক ফিটনেস এবং মানসিক সুস্থতার গুরুত্বপূর্ণ দিক, তা ছাড়া পাশাপাশি অন্যদের যত্ন নেওয়ার বিষয় শিক্ষা দেয়া হয় । যুবক বা বৃদ্ধ, স্বাস্থ্যবান বা অসুস্থ, জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার সঙ্গে জড়িত । নিজের সুস্থতা, প্রিয়জনদের জন্য, অথবা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ক্যারিয়ারের জন্য ফ্রি স্বাস্থ্য কোর্স শিখানো হয়।

৩ ) ছোট ছোট শিশুদের জন্য পেইন্টিং,কার্টুনিং আরও অনেক ধরণের কোর্স শিখানো হয়। 

৪ ) খেলাধুলা,বেকারি , রান্না এবং আরও অনেক কিছু শিখানো হয়।

গ) কানাডায় জুলাই -অগাস্ট স্কুল ,কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি বন্ধ থাকে তাই এ সময় কলেজ ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে ছোট ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্কদের পড়াশুনা শিখানোর কাজে ব্যস্ত এবং পয়সা রোজগার করে নিজেদের পড়াশুনা ও হাত-খরচের কাজে ব্যবহার করে। এ ছাড়া উনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন দেশে স্কুল বা কলেজে পড়াশুনা করিয়ে পয়সা রোজগার ও বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করে ।

কানাডিয়ান ছেলেমেয়ে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে পকেট মানির জন্য বিভিন্ন উপায়ে রোজগার করে : ১ ) বেবি সিটিং : বিভিন্ন বাসায় ছোট ছোট বাচ্চাদের দেখাশুনা,যে সময় মাবাবা কাজে ব্যস্ত থাক।

২ ) বৃদ্ধদের দেখাশুনা,ওদের ডাক্তার বা শপিং মলে নিয়ে যাওয়া, কেনাকাটা করা এবং বাসার যাবতীয় কাজ করে ।

৩ ) এ দেশে অনেকের বাসায় কুকুর, বিড়াল থাকে, নিজেরা ভোরে কাজে চলে যায় - কুকুরকে দৈনিক হাঁটানো এবং পরিষেবা প্রদান করার জন্য কাজ পাওয়া যায়।

৪ ) বাসার সামনে ঘাস কাটা,জামাকাপড় ধোয়া, কিচেনে রান্না ও বাড়ি পরিষ্কার এবং লন্ড্রি করানোর জন্য বাহিরের ছেলেমেয়েদের ব্যবহার করে। এ দেশে ছেলেমেয়েরা পয়সার বিনিময়ে যে কোনো কাজ করাকে পছন্দ করে ।

স্কুল,কলেজ বা ইউনিভার্সিটি ছুটি থাকায় - অনেকে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে নিজে বা বন্ধু অথবা ছেলেমেয়ে নিয়ে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে চলে যায়। এ দেশি লোকজন ভ্রমণ বিলাসী -গ্রীষ্মকাল বিশেষ করে যদি পরিবার সহ ভ্রমণ করতে চায় অথবা নিজেদের শিশুদের ক্যাম্পে পাঠাতে চায় তা ব্যয়বহুল হতে পারে,সে জন্য ওরা কিছু পয়সা জমিয়ে রাখে । অনেকে কানাডাতে ও বিভিন্ন স্থান যেমন নিয়াগারা ফলস বা মনোরম পরিবেশে ভ্রমণে যায় এবং এতে যাতায়াত, হোটেল এবং বেড়ানো খরচের পয়সা পূর্ব থেকেই জমিয়ে রাখে। বিশেষ করে সিনিয়র লোকজন ভ্রমণ বিলাসী - সময় পেলেই ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন শহর দেখা ও জানার আগ্রহ বেশি।

উপসংহার : বাংলাদেশে ও সরকার ইচ্ছে করলে শহরে বা উপজেলায় কমিউনিটি সেন্টারে বয়স্ক এবং ছেলেমেয়েদের শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে পারে। সব কিছুর আগে মানুষ গড়ার প্রকল্প তৈরী করা প্রয়োজন। শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে যাতে সব কিছুর আগে ছেলেমেয়েদের জানার আগ্রহ এবং জ্ঞান ও সভ্যতা শিখানো হয়। যদি বাস্তবমুখী পড়াশুনা এবং চিন্তাধারা তৈরী না হয়, যতই সংস্কার করা হোক না কেন, সব কিছু ভেস্তে যাবে।