উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয় স্বপ্নের মতো। প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী বাহরাইনকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশের মেয়েরা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা স্বাগতিক মিয়ানমারকেও হারিয়ে দেয় তারা। তবে তুর্কমেনিস্তান-বাহরাইন ম্যাচ ড্রয়ের পর বাংলাদেশ দলের কারো জানা ছিলো না যে, টুর্নামেন্টের মূল পর্বে উঠে গেছেন তারা। খবরটি শোনার পর দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঋতুপর্ণা চাকমা বললেন, এই প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস প্রকাশের ভাষা জানা নেই তারও।
টানা দুই ম্যাচ জিতে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে উঠেছিলো বাংলাদেশ। এরপর দিনের অন্য ম্যাচে তুর্কমেনিস্তান ও বাহরাইন ড্র করলে নিশ্চিত হয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা। ওই দিনের অনুভূতি নিয়ে কথা বলেছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঋতুপর্ণা চাকমা।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ফেসবুক পেইজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ঋতুপর্ণ বলেন, ‘(এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার) অনুভূতি আসলে বলে প্রকাশ করতে পারবো না। আমরা যখন জানতে পারি যে, আমরা কোয়ালিফাই করেছি; এটা আসলে কল্পনার বাইরে ছিলো। আমরা বহু বছর পর এত কষ্ট করে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছি। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।’
‘জেতার পর মাকে কল দিয়েছি। পরিবারের সবাইকে। তারা সবাই খুব খুশি দুটি গোল করেছি দেখে। মা তো অসুস্থ। আমার গোল করার কথা শুনে সে অনেক খুশি, বলছিল যে তার আর নিজেকে অসুস্থ লাগছে না। আমরা আসলে কোনো উদযাপনই করিনি। আরেকটা ম্যাচ বাকি আছে। তারপর উদযাপন করার পরিকল্পনা আছে।’
বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে শনিবার (৫ জুলাই) তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তবে এখনও ঘুরে ফিরে আসছে মিয়ানমারের বিপক্ষে পাওয়া ২-১ গোলের জেতা ম্যাচের স্মৃতি। ওই ম্যাচেই জোড়া গোল উপহার দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। দ্বিতীয় গোলটি করার পর দুই হাতে মুখ ঢেকে অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে করেছিলেন উদযাপন। ওই ভঙ্গি নিয়েও কথা বললেন তিনি।
‘(অমন উদযাপনের) কোনো কারণ নেই। যখন আমি দ্বিতীয় গোলটা করি। এটা আমি আসলে........ এই অনুভূতি আমি আসলে বলে প্রকাশ করতে পারবো না। আমি খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম।’
আগামীর পথচলায় সমর্থকদের পাশে চাইলেন ঋতুপর্ণা। বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন এই ফরোয়ার্ড। ‘বাংলাদেশের সমর্থকদের অবশ্যই বলব, যেভাবে আমাদের সমর্থন করে যাচ্ছেন, আগামীতেও যেন এভাবে সমর্থন দিয়ে যান। ইনশাল্লাহ আপনাদের সমর্থনে আমরা আরও ভালো রেজাল্ট এবং আরও ভালো একটা জায়গায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারব।’
‘আমাদের একটা লক্ষ্য ছিলো আমরা যেহেতু দুবার সাফ চ্যাম্পিয়ন, এখন আবার কোয়ালিফাই করলাম। ধীরে ধীরে আমার লক্ষ্য ছিল এশিয়ান কাপ খেলার। বাংলাদেশ দলকে একটা ভালো পর্যায় ও ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। সেটাই আমরা ধীরে ধীরে করছি।’
দলের বর্তমান কোচ পিটার বাটলারকেও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ঋতুপর্ণা। গত উইমেন’স সাফ জয়ের পর এই কোচের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ করা ১৮ জনের মধ্যে ছিলেন তিনি নিজেও। মিয়ানমার ম্যাচের পরই বাটলার বলেছিলেন, ঋতুপর্ণা মধ্যপ্রাচ্য বা আরও ভালো মানের লিগে খেলার সামর্থ্য রাখে। এ নিয়েও ঋতুপর্ণা তুলে ধরলেন নিজের ভাবনা।
‘আমরা একটা ভালো কোচ পেয়েছি। উনি সবসময় আমাদের ভালোই চান। উনি যে প্রশংসা করেছেন, জানি না এর কতটুকু (আমার) প্রাপ্য।’