News update
  • Hadi is no more, state mourning on Saturday: CA     |     
  • Bangladesh capital market falls; weekly turnover lowest     |     
  • Sharif Osman Hadi No More     |     
  • Tarique Rahman to Return Home With Daughter on Dec 25     |     
  • ILO praises Bangladesh’s labour reforms, new milestones     |     

তিস্তায় পানি বাড়তে থাকায় ভারতে রেড অ্যালার্ট, সতর্কতা বাংলাদেশেও

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2025-05-31, 6:56pm

f0b55f8d422320f9efcc7476bd3a251758895967202bce5d-76db1591d97e39c27daa50bc966a2cbd1748696161.jpg




কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীতে পানির স্তর বাড়তে থাকায় শনিবার (৩১ মে) রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি)। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বৃষ্টিপাত ও নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে সিকিমের মাঙ্গান, গিয়ালশিং ও সোরেং জেলায় বন্যা ও ভূমিধস হতে পারে।

ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন মতে, গ্যাংটকের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এক জরুরি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছেন, সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সময়োপযোগী আপডেট বা হালনাগাদ তথ্য প্রদান অব্যাহত রাখবে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাঙ্গান জেলার জন্য রেড অ্যালার্ট গ্যাংটক জেলার মধ্যে অবস্থিত ডিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত তিস্তা নদী অববাহিকাকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারে, বিশেষ করে উত্তর সিকিমে বন্যার মতো পরিস্থিতির ক্ষেত্রে।

জেলা প্রশাসকের বার্তায় বলা হয়েছে, গ্যাংটক জেলার আওতাধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সমস্ত নোডাল অফিসারদের উচ্চ সতর্কতায় থাকতে এবং তিস্তা নদীর এই অঞ্চলে নিযুক্ত মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।

উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুরে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী ৩ দিন বাড়বে তিস্তার পানি। ফলে ঈদুল আজহা সামনে করে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুরে তিস্তা পাড়ের হাজারো মানুষের মধ্যে বন্যা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, উজানে ভারতের সিকিম ও উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তার পানির স্তর হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। 

বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, পানি এখনও বিপদসীমার নিচে থাকলেও তারা সতর্ক অবস্থানে আছেন এবং প্রতি ঘণ্টায় পানির গতি-প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, আপাতত সরাসরি বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যেতে পারে।

এদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদী তীরবর্তী কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। একদিকে ভাঙন ও অন্যদিক বন্যার আশঙ্কায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছে।

উজানের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর ১২টার দিকে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ১৫ মিটার, যা বিপদসীমার মাত্র এক মিটার নিচে।

অন্যদিকে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে রেকর্ড হয়েছে ২৮ দশমিক ১১ মিটার, যেখানে বিপদসীমা ২৯ দশমিক ৩০ মিটার। তবে রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর পানি আগামী ৩ দিন বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে তিস্তার পানি বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু রংপুর বিভাগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে রংপুরে দুদিন ধরে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শুক্রবার দিন ও রাতে রংপুর বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হলেও দিনে ভারী বৃষ্টি হয়নি।

এ ধরনের আবহাওয়া পহেলা জুন পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে বলে জানিয়েছে রংপুর আবহাওয়া কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান। অন্যদিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

তিস্তার পানি বাড়লে সবচেয়ে আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। তিস্তাপাড়ে প্রায় ৯৫টি চর রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব এলাকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি নদীর চরজমিতে নিচু হওয়ায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সহজেই প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা ফজলার রহমান বলেন, বন্যা এলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাঠের ফসল, গরু-ছাগল, বাড়ির জিনিস সব ভেসে যায়। এবারও ভয়ে আছি, অনেকেই উঠোনে পলিথিন টানিয়ে মালপত্র রাখছে।

দ্রুত বাড়তে থাকা পানি পরিস্থিতি এবং উজান থেকে আসা ঢলের কারণে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষ এখন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।