News update
  • Fire at UN climate talks in Brazil leaves 13 with smoke inhalation     |     
  • 5mmcfd gas to be added to national grid from Kailashtila gas field     |     
  • ArmArmed Forces Day: Tarique's message draws on historic closeness     |     
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     

ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2025-07-09, 5:32am

75daed0efb34b4bf9d42977acab6707720f23e4171105d4d-3b7ce4215ece11cc3d1bc160d1d65eb31752017547.jpg




ফেনীতে ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ‍্য মতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ১২.৫৫ মিটার। মঙ্গলবার রাত ১০টায় সবশেষ ১৩.৯২ মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। অর্থাৎ বিপদসীমার ১.৩৭ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

মঙ্গলবার সকাল ৭টায় নদীটির পানি প্রবাহ ছিল ৭.০০ মিটার উচ্চতায়। রাত ১০টা পর্যন্ত গত ১৫ ঘণ্টায় মুহুরী নদীর পানি বেড়েছে ৬.৯২ মিটার। অর্থাৎ ২২ ফুট ১০ ইঞ্চি বেড়েছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সর্বোচ্চ ফেনীতে ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। যা চলতি বর্ষা মৌসুমের সর্ব্বোচ রেকর্ড।

পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধর এলাকায় একটি, ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগর এলাকায় একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুটি স্থানে ভেঙেছে।

এছাড়া কহুয়া নদীর পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়ায় দুটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি ও ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি স্থানে ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

এদিকে, ফেনীর বিদ‍্যুত বিতরণ বিভাগ ও ফেনীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ‍্য মতে, শহরে ও পরশুরাম এবং ফুলগাজীর অনেক বাসা, বাড়ি ও ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার এবং সাব স্টেশন পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে এর পরিধি বাড়তে পারে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

পরশুরামের চিথলিয়া এলাকার বাসিন্দা জাকিয়া আক্তার বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে পানি ঘরে ঢুকতে শুরু করেছে। এক পর্যায়ে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। গেল বছরের বন্যায়ও সব জিনিসপত্র হারিয়ছি। ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই আবারও স্বপ্ন ডুবেছে পানিতে।’

মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙামাটিয়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাউবোর কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে বল্লামুখা বাঁধের প্রবেশ মুখটি বন্ধ করা হয়নি। সময়মতো বাঁধের এ স্থানটি বন্ধ করা হলে পানি ঢোকার সুযোগ ছিল না। প্রতিবছরই কিছু মানুষের দায়সারা কাজের কারণে বড় একটি জনগোষ্ঠীর ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে থেকে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মানুষজন এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে না। বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। এরইমধ্যে শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

বুধবার (৯ জুলাই) উপজেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘জেলায় টানা দুদিন ধরে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে মাঝারি বা ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত ১২টার পর মুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। উজানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি প্রবাহ বাড়বে। আরও নতুন বাঁধ ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ফুলগাজী উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এরইমধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।