News update
  • 5mmcfd gas to be added to national grid from Kailashtila gas field     |     
  • ArmArmed Forces Day: Tarique's message draws on historic closeness     |     
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     

এক রাতে তলিয়ে গেল ফেনীর ২০ গ্রাম

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2025-07-10, 7:53am

2979f0c59fb6823606f1030218f4e938fffbe794bf843668-848deee51e41448d1275e56c9560cf101752112400.jpg




ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ত্রিপুরা রাজ্যে থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০টি স্থানে ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর কমপক্ষে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উজানের এসব গ্রামগুলোর পানি কমতে শুরু করলেও বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে নতুন করে ভাটির ফুলগাজীর মুন্সির হাট ও আনন্দপুর ইউনিয়নের ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার বাঁধের ৬টি স্থানে ভেঙে কমপক্ষে ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কের যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বুধবার রাতে নতুন করে ফেনী ছাগলনাইয়া সড়ক তলিয়ে গেছে। যেকোন সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

এদিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।

কোমর পানিতে তলিয়ে থাকা ফেনী শহরের পানি কমছে দ্রুত গতিতে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পানি নেমে গেলেও বিভিন্ন পাড়া মহল্লার অলিগলি এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। নতুন করে পাহাড়ি ঢলের পানি শহরে ঢুকলে আবারও তলিয়ে যেতে পারে শহর।

এরইমধ‍্যে অনেক মানুষ গত বছরের ভয়াবহ বন‍্যার আতঙ্কে বাড়ি ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। অনেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন।

ফেনীর অসংখ‍্য স্বেচ্ছাসেবী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা ও খাদ‍্য সহায়তায় নেমে পড়েছেন।

ফেনীর জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস বানভাসিদের উদ্ধার তৎপরতা, খাদ‍্য সহায়তা, আশ্রয় ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। বন্যার্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও নেটওয়ার্ক না থাকায় বিপাকে পড়েছে মানুষজন।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, পরশুরামের ১২টি ও ফুলগাজী উপজেলার ৮টিসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মোট ২০টি স্থান ভেঙে গেছে। তার মধ্যে মুহুরী নদীর ১০টি, কহুয়া নদীর ৬টি ও সিলোনিয়া নদীর ৪টি অংশে ভাঙনে অন্তত ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার রাতে নতুন করে ফুলগাজীর আনন্দপুর, ছাগলনাইয়ার রেজুমিয়া, বেতাকা, সতের এলাকায় ৬টি স্থানে বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। চার উপজেলায় পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছে।

বানভাসিরা জানান, গেল বছরের বন্যার বছর না ঘুরতেই আবারও পানিতে ডুবতে হয়েছে। সব জিনিসপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এ অঞ্চলে জুলাই-আগস্ট মাসে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

বাঁধের ভাঙন স্থানে তীব্র স্রোতে পানি ঢুকছে। সময়ের সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গেল বছরের বন্যার মতো এবারও বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা নিয়ে ভুগতে হচ্ছে। রাজনৈতিক দল বা ক্ষমতা পরিবর্তন হলেও তাদের ভাগ্য কখনো পরিবর্তন হয় না।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় টানা তিন দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, রাত ৯টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে নদীর পানি কমেছে। ভাঙন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরেই বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়ন, ফুলগাজী সদরের কিসমত ঘনিয়ামোড়া, উত্তর শ্রীপুর, পূর্ব ঘনিয়ামোড়া, উত্তর নিলক্ষ্মী, পশ্চিম ঘনিয়ামোড়া, দেড়পাড়া, নিলক্ষ্মী, গোসাইপুর, মন্তলা, গাবতলা, কহুমা, জগতপুর এবং পরশুরাম উপজেলার ধনীকুন্ডা, শালধর, বেড়াবাড়িয়াসহ বেশকিছু এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানুষজন।

জগৎপুরের বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, গত বছরের বন্যায়ও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। তারা জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল টাওয়ারগুলো সচল রাখলে মানুষ খুবই উপকৃত হতো। বিশেষ করে প্রবাসীরা বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

পরশুরাম পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. সোহেল আকতার বলেন, এ উপজেলায় ৩৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৬০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংযোগ দেয়া হবে। তবে বিদ্যুতের বিভিন্ন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সহসাই সংযোগ দেয়ার সম্ভাবনা নেই।

ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, পরশুরাম, ফুলগাজী ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার মানুষ দুর্যোগে পড়েছে। ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলার ছয় উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।