News update
  • Munshiganj General Hospital catches fire; no injury reported     |     
  • Dhaka’s air records ‘unhealthy’ on Monday morning     |     
  • Dhaka seeks global pressure on Myanmar for lasting peace     |     
  • BSEC Chairman’s resignation urged to stabilise stock market     |     
  • Rain, thundershowers likely over 8 divisions: BMD     |     

ময়মনসিংহে স্থাপিত হলো হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রথম মসজিদ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2024-04-01, 8:21am

screenshot_520240330133102-f253d73f458d92087fe58037226045801711938169.jpg




ময়মনসিংহ নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চর কালিবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পান ৪০জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। এদের প্রত্যেকেই মুসলমান। তারা এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে নানা বাধার সম্মুখীন হন। এই পরিস্থিতিতে, আলাদা একটি মসজিদ নির্মাণের কথা চিন্তা করেন তারা।

এমন ভাবনা থেকে ময়মনসিংহে প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে মসজিদ। এলাকায় কিছু আলোচনা-সমালোচনা আছে; তার পরও, এখন এই মসজিদে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত নামাজ পড়ছেন এলাকার মুসল্লিরা।

নামাজ পড়া, মৃত্যুর পর জানাজাসহ নানা জটিলতা ও বাধার সম্মুখীন হয় ময়মনসিংহের তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ‘সেতু বন্ধন হিজরা কল্যাণ সংঘ’ এর সদস্যদের জন্য মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

প্রয়োজন দেখা দেয় জমি ও অর্থের। তার কোনোটাই নেই তাদের। এর পর তারা দেখা করেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে। বিভাগীয় কমিশনারের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাছেই ৩৩ শতক জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। সঙ্গে কিছু অনুদানও পায় তারা। রমজান মাসকে টার্গেট করে মসজিদের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা হয়।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বড়ইকান্দী গ্রামে স্থাপিত এই মসজিদটির নাম দেয়া হয়েছে ‘তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ও দক্ষিণ চর কালিবাড়ি আশ্রয়ণ জামে মসজিদ’।

নবনির্মিত এক কক্ষবিশিষ্ট মেঝে পাকা মসজিদটির দেয়াল ও চাল টিনের। সামনে ছোট্ট বারান্দা। পাশেই বসানো হয়েছে সাবমারসিবল পাম্প। পাশে ওজুখানা ও বাথরুম। উঁচুতে টানানো হয়েছে ৩টি মাইক।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে মসজিদে আসছেন বয়স্ক ও তরুণ মুসল্লি। তারা সবাই এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে কথা হয় স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে। কথা হয় সেতু বন্ধন হিজড়া কল্যাণ সংঘের কয়েক সদস্যের সঙ্গে।

আখি নামে একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বলেন, “সারা জীবন শুনে আসছি, হিজরা কেউ মারা গেলে তাদের নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। না হয় নদীর তীরে কোথাও কবর দেয়া হয়। কোনো গোরস্থান ছিলো না। এখন আমাদের মসজিদের পাশাপাশি কবরস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে।”

সেতু বন্ধন হিজড়া কল্যাণ সংঘের সভাপতি জয়িতা তনু বলেন, “বড়ইকান্দী গ্রামে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে আমরা ৪০ জন হিজড়া বসবাস করি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এলাকার মসজিদে আমাদের কয়েকজন নামাজ পড়তে গেলে অনেকেই হাসাহাসি ও কটূক্তি করে।”

“পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেই;” জানান তিনি।জয়িতা তনু আরো বলেন, “আমরা বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়ার সঙ্গে দেখা করি। তার পরামর্শে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ৩৩ শতক জমি বরাদ্দ পাই। সেই সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার আমাদের মসজিদের জন্য ২ লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করে দেন। এটা দিয়েই আমরা এ মসজিদের প্রাথমিক কাজ করেছি।”

জয়িতা তনু জানান, হাফেজ মাওলানা কারিমুল ইসলাম নামের একজনকে ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি গত ২০ দিন ধরে এ মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতি করছেন। এখানে হিজড়াসহ এলাকাবাসী নামাজ পড়ছেন।’

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মোতালেব জানান, এলাকার মানুষ হিজরাদের কাজ-কর্মে সাহায্য-সহযোগিতা করছে।

তিনি বলেন, “তারা আমাকে এই মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। আমরা মিলে-মিশে এই মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, জুম্মার নামাজ আদায় করি।”

ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, স্থানীয় হিজড়া জনগোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্য আমার কাছে এসে মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য জমি চাইলে, তাদের ৩৩ শতক জমি বরাদ্দ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

“সম্প্রতি তারা মসজিদের ঘর নির্মাণের জন্য সহযোগিতা চান। আমি তাদের জন্য একজন বিত্তবান মানুষের কাছ থেকে কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারা এখন মসজিদ নির্মাণ করে নামাজ পড়ছেন। এটা ভালো উদ্যোগ;” জানান বিভাগীয় কমিশনার। ভয়েস অফ আমেরিকা।