News update
  • BSEC Chairman’s resignation urged to stabilise stock market     |     
  • Rain, thundershowers likely over 8 divisions: BMD     |     
  • First freight train leaves Mongla carrying molasses     |     
  • 2 dead, six hurt in Sherpur micro-autorickshaw-motorbike crash     |     
  • One killed over loud music row at wedding party in Natore     |     

৩০ বছর বয়সে ১৪ নারীর স্বামী আবু সাঈদ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2024-04-24, 6:02pm

lsfjoireiwop-898c88c5d564194c23a3560113593d991713960283.jpg




নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের তালবারিয়া গ্রামের মো. সোহেল রানার ছেলে মো. আবু সাঈদ। বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট, পুলিশের বড় কর্মকর্তা, এনএসআই কর্মকর্তা, অভিজাত হোটেলের ম্যানেজারসহ বিভিন্ন পরিচয় রয়েছে অষ্টম শ্রেণি পাস এই যুবকের। এসব পরিচয়ে ৩০ বছর বয়সেই ১৪টি বিয়ে করেছেন তিনি।

জানা গেছে, বাবার স্টুডিওর দোকান থেকে ফটোশপে দক্ষ সাঈদের প্রতারণার প্রধান অস্ত্র টিকটক, ফেসবুকসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। যে নারী প্রতিষ্ঠিত, অর্থ-সম্পদ আছে সেই নারীদের টার্গেট করে সাঈদ টিকটক ও ফেসবুকে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের পর বিয়ে করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে পালিয়ে যান তিনি। শুধু বিয়েই নয়, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে স্ত্রীর স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এসব কারণে একাধিক মামলার আসামি হয়ে পলাতক রয়েছেন তিনি।

ছোট থেকেই ধূর্ত আবু সাঈদ ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি গুরুদাসপুরের একটি ক্লিনিকে দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় আটক হয়ে গত ৪ বছর এলাকা ছাড়া। তবে ফেসবুক ও টিকটকে কখনও পাইলটের পোশাকে, কখনও পুলিশের পোশাকে নিয়মিত দেখা যায় তাকে। পরিবারের সঙ্গে গত চার বছরে দেখা করতে আসেননি তিনি। তবে বিভিন্ন সময়ে দূর-দূরান্ত থেকে আবু সাঈদের স্ত্রী পরিচয়ে অনেক নারী তার সন্ধানে আসেন।

২০১০ সালে জামালপুরের মাউশি এলাকার বৃষ্টি বেগম নামে একজনকে বিয়ে করেন আবু সাঈদ। তাদের দেই ছেলে রয়েছে। ২০১২ সালে রাজশাহীতে বিয়ে করেন। ওই বছরেই পাবনার চাটমোহর এলাকায় একজনকে বিয়ে করেন। ২০২১ সালে মানিকগঞ্জ জেলার এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি।

এরপর ২০১৩ সালে ঢাকার একজনকে বিয়ে করেন। ২০২২ সালের ১০ আগস্ট টাঙ্গাইল সদর উপজেলা খাদিজা আক্তার সাদিয়াকে বিয়ে করেন।

২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর নাটোরের লালপুর উপজেলার এক নারীকে বিয়ে করেন। ২০২২ সালে আবারও টাঙ্গাইল মধুপুরের এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি।

২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রামপুরায় এক নারীকে বিয়ে করেন। ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের এক নারীকে বিয়ে করেন। ২০২৩ সালেই আবার ঢাকার সাভারের এক নারীকে বিয়ে করেন সাঈদ। ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিয়ে করেন তিনি। ২০২৪ সালে ১৩তম স্ত্রী বরিশালে বিয়ে করেন। ঠাকুরগাঁওয়ে বিয়ে করে ১৪তম স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুরে সংসার করছেন আবু সাঈদ।

এ বিষয়ে পঞ্চম স্ত্রী দাবি করা খাদিজা আক্তার সাবিনা জানান, বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কমার্শিয়াল পাইলট পরিচয়ে প্রায় আড়াই বছর আগে টিকটকে আবু সাঈদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন তিনি জানিয়েছিলেন তার বাবা-মা কেউ নেই, এতিমখানায় বড় হয়েছেন। এরপর প্রেমের পর ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ে হয়। টাঙ্গাইল সদরে আমার একটি বিউটি পার্লার ও একটি এনিজও পরিচালনা করি। বিয়ের পর আবু সাঈদ আমার দুই বোন ও এক ভাতিজিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৩০ লাখ টাকা চান, আমরা তাকে সেই টাকা দিই। কয়েক দিন পর আমার কাছ থেকে আরও ১০ লাখ টাকা নেন তিনি। কিছুদিন পরে তিনজনকেই নিয়োগপত্র দেন এবং বলেন তিন মাস পর চাকরিতে যোগদান করতে হবে।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে সাঈদের আসল ঠিকানা এবং তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারি। তবে সাঈদ বুঝতে পেরেছিল আমি সব জেনে গেছি। এমনকি চাকরির জন্য যে নিয়োগপত্র দিয়েছিল সেগুলোও ভুয়া ছিল। এ কারণে আমার বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সাঈদ। তারপর থেকে তাকে খোঁজার চেষ্টা করেও পাইনি। এসব ঘটনায় টাঙ্গাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে সাঈদের নামে মামলা করেছি। সাঈদের সন্ধান করতে গিয়ে তার আরও চার স্ত্রীর খোঁজ পাই। তাদের সবার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। সবার কাছ থেকেই বিয়ের পর বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।

সাঈদের চতুর্থ স্ত্রী দাবি করা এক নারী বলেন, আমি কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে চাকরি করি। তিন বছর আগে আমাদের টিকটকে পরিচয় হয়। এনএসআই কর্মকর্তার পরিচয়ে সে আমার সঙ্গে কথা বলতো। এরপর প্রেম ও বিয়ে হয় আমাদের। বিয়ের পর চাকরি করে জমানো প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় সে। তখন থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ। আজ পর্যন্তও তার সন্ধান পাইনি।

একই কথা জানিয়েছেন সাঈদের আরও পাঁচ স্ত্রী।

সাঈদের প্রতিবেশী মাসুদ রানা বলেন, সাঈদ ফটোশপে নিজের ছবি এডিট করে পাইলট, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তার পরিচয় দেয়। তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের পোশাক পরে ছবি তুলে তা ফেসবুক ও টিকটকে পোস্ট করত। এতে সুন্দরী মেয়েরা অল্প সময়ে তার প্রেমের ফাঁদে পড়ে যায়।

সাঈদের বাবা সোহেল রানা বলেন, সাঈদের জন্য কোথাও মুখ দেখাতে পারি না। লজ্জা হয়, মাঝে মাঝে মরে যেতেও মন চাই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান থেকে মেয়েরা তার সন্ধানে আসে এবং ছেলের বউ হিসাবে পরিচয় দেয়। কিন্তু সাঈদের সঙ্গে গত চার বছরে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। পাশের গ্রামে সাঈদকে বিয়ে দিয়েছিলাম। সেই ঘরে ২টি সন্তান রয়েছে। ওই মেয়েটা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় করেছে। কিন্তু সাঈদ না আসায় বউমা এখন বাবার বাড়িতে চলে গেছে।

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরটিভি নিউজ।