News update
  • US tariffs move could see 3% fall in global trade: Top UN economist     |     
  • Myanmar Military strikes on amid earthquake response works     |     
  • Countries reach historic deal to cut shipping emissions     |     
  • ‘With Science, We Can Feed the World of 9.7 Billion by 2050′     |     
  • WHO warns of severe disruptions to health services for funding cuts     |     

ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর টহল নিয়ে যা জানাল রিউমর স্ক্যানার

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2025-01-01, 7:49am

img_20250101_074707-21689c72c063d5435fe0c256a69ba32e1735696160.jpg




বাংলাদেশের একটি আদালত এলাকার ভিডিওকে ঢাকার রাস্তার দৃশ্য বলে প্রচার করেছে ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘আজতক বাংলা’সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। পরে সেই সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিও প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের পাঞ্জাবের সোয়াত টিমের সদস্যরা ঢাকায় এসে টহল দিচ্ছে।

ভিডিওতে বাংলাদেশের আইনজীবী নিঝুম মজুমদার দাবি করেন, (৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড থেকে), ঢাকার রাস্তাতে এই ধরনের পাকিস্তানি আর্মিরা এসে সোয়াতের ছদ্মবেশে পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ছেলেরা বা পাকিস্তানি সৈন্যরা এসে বাংলাদেশের রাস্তায় নেমে মহড়া দিচ্ছে, এটা আমার কাছে নজিরবিহীন মনে হয়েছে।

একই ভিডিওর আরেকটি অংশে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জঙ্গি সরদার বলে দাবি করেন নিঝুম মজুমদার। তিনি জানান, সেনাপ্রধানের শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে তিনি খোঁজখবর নিয়ে জেনেছেন যে জেনারেল ওয়াকার ছাত্রজীবনে ক্যাডেট কলেজে পড়তেন। তিনি সে সময় শিবিরের সাথী ছিলেন।

তবে এই ভিডিও সংবাদ সঠিক নয় বলে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভিডিওটি বাংলাদেশে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর টহলের কোনো দৃশ্য নয়। বরং, ভিডিওটিতে যে বাহিনীর সদস্যদের দেখা যাচ্ছে তারা বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত দল ক্রাইসিস রেসপন্স টিম বা সিআরটির সদস্য। এই সদস্যরা গত ১২ ডিসেম্বর রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ নেওয়ার সময় নিরাপত্তা প্রদানের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

রিউমর স্ক্যানার জানায়, ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর টহল দেওয়ার দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম ভিডিওতে থাকা একজন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের পোশাকের পেছনে CRT লেখা দেখতে পায়। পাশাপাশি আরেকজন সদস্যের পোশাকে বাংলাদেশের পতাকাও দেখতে পাওয়া যায়। এসবের সূত্রে National Dialogue Bangla (NDB) নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ ডিসেম্বর এই সেই বাংলাদেশ CRT (Crisis Response Team) শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্টস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

রিউমর স্ক্যানার আরও জানায়, ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সঙ্গে এর হুবহু মিল রয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওর শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওটি রাজশাহী আদালত প্রাঙ্গণে ধারণ করা হয়েছে এবং ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া বাহিনীর নাম Crisis Response Team বা CRT।

পরে অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ ডিসেম্বর প্রিজন ভ্যান ঘিরে উত্তেজনা- ডিম হামলার শিকার হন সাবেক এমপি আসাদ। মূলত সেই ঘটনার ভিডিও নিয়ে এডিট করে অপপ্রচার চালায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। মূল ভিডিওতে Jago News শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদকে রাজশাহীর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ নেওয়ার সময় তার প্রিজন ভ্যানে হামলা করে বিএনপি-জামায়াতের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ সময় তাকে নিরাপত্তা প্রদানকারী বাহিনীর পোশাকের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর বাহিনীর পোশাকের হুবহু মিল রয়েছে। তাদের পোশাকের পেছনেও CRT লেখা রয়েছে। পরে CRT এর বিষয়ে অনুসন্ধানে জাগোনিউজ২৪-এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, CRT বা Crisis Response Team হলো বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত দল। দলটি জঙ্গি দমন ও মাদক চোরাচালান প্রতিরোধসহ বড় ধরনের সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করে।

এ ছাড়া প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর পর সিলেটে আনুষ্ঠানিক মহড়ার মাধ্যমে এ যাত্রা শুরু করে পুলিশের এই বিশেষায়িত দলটি। অর্থাৎ পুলিশের বিশেষায়িত দল ক্রাইসিস রেসপন্স টিম বা সিআরটিকে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এদিকে, আইনজীবী নিঝুম মজুমদার আজতক বাংলায় সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বিষয়ে যেসব অভিযোগ করেছেন, তার বিপরীতে তিনি কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেননি বলে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থাটি। গত জুনে জেনারেল ওয়াকার সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার খবর দিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) ওয়েবসাইটে তার একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। এই জীবনী পর্যালোচনা করে তার ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনার কোনো তথ্য মেলেনি, যা নিঝুম মজুমদার দাবি করছেন।

এ বিষয়ে জানতে আইএসপিআর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা রিউমর স্ক্যানারকে জানায়, জেনারেল ওয়াকার কখনও ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেননি।

সুতরাং বাংলাদেশে পাকিস্তানের বাহিনী টহল দিচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা যেমন মিথ্যা তেমনি সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে নিয়ে আইনজীবী নিঝুম মজুমদারের অভিযোগও সত্য নয়। আরটিভি