News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে কী ঘটে, হাজার বছরের রহস্যের জট খুলল

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2025-02-11, 7:17am

img_20250211_071743-25a5eea179c8e52de1fbd6830f13087a1739236680.png




কেউ যখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়, তখন তার মস্তিষ্কে কী ঘটে, এই রহস্য শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীদেরও ভাবিয়েছে। যদিও বিষয়টি পুরোপুরি উন্মোচিত হয়নি, তবে সম্প্রতি একটি গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করেছে। সেখানে নতুন এক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে, যা মৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তগুলোর রহস্য উন্মোচনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে।

'এনহ্যান্সড ইন্টারপ্লে অব নিউরোনাল কোহেরেন্স অ্যান্ড কাপলিং ইন দ্য ডাইং হিউম্যান ব্রেইন' শিরোনামের এই গবেষণাটি সম্প্রতি ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং নিউরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।  মৃত্যুর ঠিক আগে এবং পরে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হয় গবেষণাটিতে।

গবেষকদের মতে, মৃত্যুর মুহূর্তে মস্তিষ্ক দ্রুত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোকে স্মরণ (রিক্যাপ) করতে পারে। অনেকে জানিয়েছেন, যেন ‘স্মৃতিচারণের মতো জীবনের খণ্ডচিত্রগুলো চোখের সামনে একে পর এক ভেসে ওঠার’ অভিজ্ঞতা।

'মৃত্যুর ঠিক আগে মস্তিষ্ক এমন মস্তিষ্কতরঙ্গ (ব্রেন ওয়েব) তৈরি করে, যা স্মৃতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি এমন এক প্রক্রিয়া, যা প্রায় নিশ্চিত মৃত্যুর কাছ থেকে বেঁচে ফিরে আসা মানুষের অভিজ্ঞতার মতো হতে পারে,' বলেছেন গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক ড. আজমল জেমার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকির ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিলের সঙ্গে জড়িত।

মৃত্যুর সময় মস্তিষ্কতরঙ্গ বিশ্লেষণ: এই গবেষণার সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো একজন ৮৭ বছর বয়সী রোগীর মৃত্যু খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ। ওই ব্যক্তি মৃগী রোগ বা এপিলেপসিতে আক্রান্ত ছিলেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হন। তার মাথায় সংযুক্ত এক বিশেষ ডিভাইস তার মৃত্যুর আগে-পরে ৯০০ সেকেন্ড বা ১৫ মিনিটের মস্তিষ্কতরঙ্গ রেকর্ড করে। গবেষকরা দেখতে পান, হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার আগের ৩০ সেকেন্ড এবং পরবর্তী ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে মস্তিষ্কে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে।

গবেষকরা লক্ষ্য করেন, নির্দিষ্ট কিছু নিউরাল অসিলেশন বা মস্তিষ্কতরঙ্গে পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে গামা তরঙ্গে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখা যায়।

গবেষণায় গামা, ডেল্টা, থিটা, আলফা, এবং বিটা তরঙ্গের পরিবর্তন ধরা পড়েছে। গামা তরঙ্গ উচ্চ-স্তরের মস্তিষ্কীয় কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত এবং বিশেষত স্মৃতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি জীবনে ঘটে যাওয়া খণ্ডিত এবং একান্ত ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠে।ডেল্টা ও থিটা তরঙ্গ সাধারণত গভীর ঘুমের সময় সক্রিয় থাকে। অন্যদিকে, মস্তিষ্কের সচেতন চিন্তা এবং মনোযোগের সঙ্গে যুক্ত আলফা ও বিটা তরঙ্গ।

এই গবেষণার ফলাফল থেকে বোঝা যায়, মৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তে আমাদের মস্তিষ্ক অতীতের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিগুলো রিক্যাপ বা স্মরণ করতে পারে, যা অনেক সময় মৃত্যুর আগের মুহূর্তের অভিজ্ঞতা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।

জীবন-মৃত্যুর সীমারেখার নতুন ব্যাখ্যা: এই গবেষণা বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। গবেষকদের মতে, মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট সময়সীমা সম্পর্কে আমাদের আগেকার সব ধারণা নতুনভাবে ভাবতে হতে পারে।

ড. জেমার বলেন, 'এই গবেষণা আমাদের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায় যে, কখন জীবন শেষ হয়। এটি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে, যেমন মানবদেহ থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করার সঠিক সময় কখন?'

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে গবেষণাটি: যদিও গবেষণার ফলাফল ২০২২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, সম্প্রতি এটি আবার অনলাইনে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। বিজ্ঞানীদের কাছে এটি মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের কাজে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে। যা ভবিষ্যতে আরও গবেষণার অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে আশা করা হচ্ছে। চ্যানেল ২৪।