News update
  • Bangladesh Faces $1.25 Billion Export Loss from US Tariffs     |     
  • Israel Expands Gaza Assault as UN Warns of ‘Genocide’     |     
  • World Ozone Day Highlights Progress and Future Action     |     
  • DG Health Services gives 12 directives to treat dengue cases     |     
  • Stock market shows recovery as investors back: DSE chairman     |     

আধুনিক শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত চরের শিশুরা, বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিবিধ 2025-03-02, 6:54pm

trw5252-898bf414246507dcaea7f4a382894ad91740920062.jpg




আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। শিশুর সুশিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। লালমনিরহাটের চরাঞ্চলের প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু বঞ্চিত আধুনিক শিক্ষার আলো থেকে। এরমধ্যে ২০ ভাগ ঝড়ে পড়ছে প্রাথমিক স্তরে। চরাঞ্চলের এই শিশুদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। তাই অধিকাংশ চরাঞ্চলের শিশুরা শিশুশ্রমে নিয়োজিত।

সম্প্রতি জেলার আদিতমারি উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের গোবর্ধন চরে গিয়ে শিশুদের এ অবস্থা দেখা যায়। লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়ন। তিস্তা নদী বেষ্টিত এ ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যার ২০ হাজার মানুষের বসবাস গোবর্ধন চরে। ওই এলাকায় শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। এর মধ্যে শতাধিক শিক্ষার্থী  প্রতিদিন নদী পাড় হয়ে এসে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। আর বাকি প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী নিয়োজিত চরাঞ্চলের ফসলি জমির কাজে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, গোবর্ধন চড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৭ জন, গোবর্ধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০ জন, গোবর্ধনহাট ইসমাইলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫ জন, গোবর্ধন ইসমাইলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮ জন বিভিন্ন শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। 

প্রাথমিকের গণ্ডি পেরুতেই নানা চড়াই উৎরাই পাড় হতে হয় এই চড়ের অধিকাংশ শিশুকে। শুষ্ক মৌসুমে বালুময় প্রান্তর আর বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব কিংবা পরিবারের অভাব অনটনের কারণে মাঝ পথেই বন্ধ হচ্ছে অনেকের পড়াশুনা। নিজ এলাকায় বিদ্যালয় না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে। তাই নিজ এলাকায় স্কুল স্থাপনের দাবি স্থানীয়দের।

গোবর্ধন চর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মো. জমির আলী বলেন, দূরত্ব বেশি হওয়া ও যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে এই চরের শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না। শিশুর সুশিক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ করবো এখানে একটি স্কুল স্থাপন করার জন্য। স্কুল স্থাপন সময় সাপেক্ষ হলে আপাতত প্রি-প্রাইমারী শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে আগামীতে এ এলাকার বৃহৎ সংখ্যক শিশু শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকবে।

ওই এলাকার পেয়ারুল ইসলাম (৪২) বলেন, এখানে ছয় মাস খরা আর ছয় মাস বন্যা হয়। খরার সময় হেটে বালি পাড় হয়ে স্কুলে যেতে বাচ্চাদের কষ্ট হয়। আমাদের এখানে একটা স্কুল থাকলে ভালো হতো।

গোবর্ধন চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছা. রোবায়দা বেগম বলেন, বন্যার সময় শিশুরা নদীর ওপাড়ে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লাসের সময় পাড় হয়ে যায়। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের বই পানিতে ভিজে যায়। ঝুঁকি মনে করে অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠাতে চায় না।

তিস্তার চরে কাজ করতে যাওয়া এরশাদুল ইসলাম (৮) বলেন, বাবার সঙ্গে তামাক বাড়িতে কাজ করছি। রাস্তা ভালো নাই, অনেক দূর যেতে হয় তাই স্কুল যাই না। এখানে স্কুল থাকলে আমি নিয়মিত পড়াশোনা করতাম।

সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিক আবু হাসনাত রানা বলেন, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থাই চরাঞ্চলের শিশুদের উন্নয়নে প্রধান বাধা।চরাঞ্চলের এই শিশুদের মূল ধারায় আনার দায়িত্ব সরকারের। স্কুল স্থাপন সময় সাপেক্ষ হলেও বিকল্প ব্যবস্থায় চরের শিশুদের পাঠদান জরুরী।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লিটন দাস বলেন, নদীর ওপার থেকে অনেক শিক্ষার্থী এপারের স্কুলে অনেক কষ্ট করে আসে। এদের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এপারে আসা দুরূহ। সে হিসেবে নদীর ওপারে প্রাক প্রাথমিক ও শিশু শ্রেণির জন্য কোনো কেন্দ্র করা যায় তাহলে ওখানকার শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে না। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।আরটিভি