রংপুরের পীরগঞ্জের রবিউল খন্দকার মাহি। সমাজের চোখে যিনি তৃতীয় লিঙ্গের একজন মানুষ। তবে দৃঢ় সংকল্প আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করছেন একজন শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে। তিনি সম্প্রতি রংপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে মাস্টার্স (প্রথম বর্ষ) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
২৭ বছর বয়সী মাহির জন্ম রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। বাবা-মায়ের বড় সন্তান হলেও কৈশোরে তিনি নিজের মধ্যে ভিন্নতা উপলব্ধি করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে পীরগঞ্জ উপজেলার খালাশপীর হাটে চলে আসেন এবং দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তৃতীয় লিঙ্গের সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতির সঙ্গে বসবাস করছেন।
শিক্ষাজীবনে প্রাথমিক থেকে বিএসএস পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ সফলভাবে পেরিয়ে বর্তমানে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে মাস্টার্স করছেন মাহি। সেশন জটের কারণে ২০২২ সালের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে ২০২৫ সালে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত রক্তদান, সমাজসেবামূলক কার্যক্রম এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন।
২০১৯ সালে সরকারিভাবে তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি পাওয়া মাহি বর্তমানে সরকারি ভাতা ভোগ করছেন। তবে তার বড় স্বপ্ন- মাস্টার্স শেষ করে পরিবার পরিকল্পনা বা সমাজসেবা বিভাগে সরকারি চাকরি নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
নিজের জীবন সম্পর্কে রবিউল খন্দকার মাহি বলেন, আমরা প্রতিটি পদে বৈষম্যের শিকার হই। আমি বিয়ে করতে পারবো না। তাই মানুষের সেবাই হবে আমার জীবনের মূল লক্ষ্য।
তৃতীয় লিঙ্গের সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতি বলেন, সরকারিভাবে পীরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ৫৪ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ নিবন্ধিত রয়েছেন। আমরা সকলে সামাজিক মর্যাদা চাই।