News update
  • BD, China hold talks on bilateral ties, "common concern"     |     
  • Rain, thundershowers likely across Bangladesh     |     
  • Interim govt has little time to think about reforms: Adviser     |     
  • Bangladesh Should Meticulously Plan to Send Workers to Malaysia     |     
  • Severe Storms, Tornadoes Kill Over 25 Across South-Central US     |     

ভারত- পাকিস্তান যুদ্ধ ও কিছু প্রসঙ্গ:

মতামত 2025-05-16, 12:22am

nazrul-islam-enayetpur-d535aa1c26118458cd6080737a9f5aca1747333342.jpg

Nazrul Islam



নজরুল ইসলাম

২০২৫ সালের (৭ই মে থেকে ১০ই মে) ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যার নামকরণ করা হয় অপারেশন সিন্ধূর। ভারত জানায় যে এই অপারেশনটি ২২ এপ্রিল পাহালগামের (কাশ্মীর) হামলার প্রতিক্রিয়া, যেখানে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ২৬ জন নাগরিক নিহত হন, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক। এই হামলাটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে কারণ ভারত পাকিস্তানকে সীমান্ত পারের সন্ত্রাসবাদ সমর্থনের অভিযোগ করে, যা পাকিস্তান অস্বীকার করে।

অপারেশন সিন্ধূর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশকের উত্তেজনা ও সংঘাতের সর্বশেষ ফ্ল্যাশপয়েন্ট।ভারত সরকার রাতভর অভিযান করে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে বহু হতাহত ও আহত করে।পহেলগাঁও,জুম্মু কাশ্মীর গণহত্যা হিমালয়ের সুন্দর পর্যটন নগরীতে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানকে দোষী সাব্যস্ত করে (যদিও কোনো প্রমাণাদি নেই) এই হামলা চালানো হয়।এর জের হিসাবে পাকিস্তান পাল্টা আক্রমণ করে ভারতের বিভিন্ন শহর ও সেনা নিবাসে ব্যাপক জানমালের ক্ষতিসাধন করে বলে খবরে প্রকাশ। তিনদিন যুদ্ধের পর আমেরিকার মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতি এবং আলোচনা করে তার মীমাংসা করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ক) ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে দারুন যন্ত্রণা নিয়ে এসেছে যখন দেশটি ভারত এবং পাকিস্তানে বিভক্ত হয়, যার ফলে ব্যাপক সহিংসতা,দুই মিলিয়ন লোক হতাহত এবং লক্ষ লক্ষ লোকের বাস্তুচ্যাৎ ঘটে।

খ) ভারতে ব্রিটিশ রাজত্বকাল (১৭৫৭ -১৯৪৭) ১৯০ বৎসর স্থায়ী ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে সারা ভারতে কয়েক শত ছোট বড়ো দেশীয় রাজ্য (Princely states ) এবং ফ্রেঞ্চ ও ফর্তুগীজ উপনিবেশ ছিল। ১৯৪৭ সনে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ভারত ও পাকিস্তানকে দুটি স্বতন্ত্র ও পৃথক রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার সময় ব্রিটিশ সরকার দেশীয় রাজ্যগুলিকে তিনটি বিকল্প পন্থা থেকে যে কোনো একটি বেঁচে নিতে সুযোগ দিয়েছিল : ১ ) ভারতে যোগদান করন , ২ ) পাকিস্তানে যোগদান করন ৩ ) তাদের নিজস্ব স্বাধীনতা বজায় রাখা । ৪ ) তাছাড়া ভারতে পর্তুগিজ ও ওলন্দাজ উপনিবেশ সম্পর্কে ব্রিটিশ যে কোনো সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকে। দেশীয় রাজ্যগুলির প্রায় সবগুলিই ভারতীয় সীমানার মধ্যে যা ভারত আপোসে বা জোর করে একত্রীকরণ করতে গিয়ে পুলিশি ও সামরিক হামলা করেছে । উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে জুনাগড় (গুজরাট), হায়দরাবাদ, ভোপাল,কেরালা,কাশ্মীর আর ও অসংখ্য দেশীয় রাজ্য আলাদা স্বত্বা নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আপোসে মিলেমিশে ছিল । ১৯৪৭ সনে ভারত ভাগ করার সময় জুনাগড় (গুজরাট), হায়দরাবাদ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে পাকিস্তানের সঙ্গে দেয়া হয়ে ছিল। কিন্তু ভারত পুলিশি হামলার মাধ্যমে দখল করে নেয় । এতে হাজার হাজার লোক প্রাণ দিয়েছে ;হায়দরাবাদ থেকে যে সব মুসলমান করাচী (পাকিস্তান) মাইগ্রেট করেছে,তাদেরকে মুহাজির বলা হয় এবং আজ ও এ সব লোক পাকিস্তানে মুহাজির হিসাবে পরিচিত। কাশ্মীর আর এক সমস্যা;১৯৪৮ সনে যখন ভারত জুনাগড় (গুজরাট) এবং হায়দরাবাদ দখল করে নেয়, তখন পাকিস্তান কাশ্মীরের কিছু অংশ দখল করে আজাদ কাশ্মীর নাম দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করে। কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে কয়েক দফা যুদ্ধ হয়েছে এবং আজ ও তার কোনো মীমাংসা হয় নি ; এ নিয়ে গত ৭৮ বৎসর দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ যার সমাধান হওয়া অত্যন্ত জরুরি। যদি জুম্মু ও আজাদ কাশ্মীর একত্রিত হয়ে আলাদা দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পায়, সে ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তান বন্ধু দেশ হিসাবে টিকে থাকতে পারবে ;এ ছাড়া বিকল্প আর কোনো সমাধান নেই।

গ) ১৯৪৬-১৯৪৭ সনে ভারত বিভক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে প্রায় ১৫ মিলিয়ন মানুষ  নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ এবং ২ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল; হিন্দু-অধিক্য ভারত ও মুসলিম-অধিক্য পাকিস্তানে ভাগ করাকে কেন্দ্র করে এই অযাচিত ঘটনা সংঘটিত হয়,যা নিয়ন্ত্রণ করা ব্রিটিশ রাজ্যের পক্ষে অসম্ভব বা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল।

সেই সীমান্ত, যেটিকে বর্তমানে “নিয়ন্ত্রণের লাইন” বলা হয়, প্রতিষ্ঠার পরও কাশ্মীরের জন্য

১৯৪৭-১৯৪৮, ১৯৬৫ এবং ১৯৯৯ সালে তিনটি যুদ্ধে আনুমানিক ২০,০০০ মানুষ মারা গেছে।

এ ছাড়া দুই দেশের সংঘর্ষ ভারত ও পাকিস্তানের জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়েছে। যে সম্পদ উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য গৃহীত হতে পারত তা পরিবর্তে সামরিক ব্যয়ের দিকে এবং সীমান্তে সেনা বজায় রাখতে বরাদ্দ করা হচ্ছে।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা লাইভ আপডেট: ভারত এবং পাকিস্তান বর্তমানে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গম্ভীর সীমান্ত উত্তেজনার মুখোমুখি হচ্ছে, যা অপারেশন সিন্ধুর শুরুতে উদ্ভাবিত হয়েছে।

ভারত তার স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৪৭-৪৮ সালে জম্মু কাশ্মীর , ১৯৪৮ সালে জুনাগড় , ১৯৪৮ সালে নিজামশাহী হায়দারাবাদ , ১৯৬১ সালে গোয়া , ১৯৭৫ সালে সিকিম সামরিক অভিযান চালিয়ে দখল করে।

অথচ ইন্ডিয়ানরা বলে ভারত শান্তিবাদী, অহিংস দেশ। পৃথিবীতে আর কোন আধুনিক রাষ্ট্র এতো বেশী এলাকা সামরিক আগ্রাসন চালায়ে দখল করর নজির নাই।ভারত ও পাকিস্তান মিলেমিশে নিজেদের স্বার্থে আলাপ -আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমাধানের একটা স্থায়ী ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে হবে; এতে দুই দেশের সামরিক উত্তেজনা হ্রাস পাবে।