News update
  • Protests in India over Waqf (Muslim gift) Amendmdment Bill     |     
  • China slaps 34% tax on US imports retaliating Trump tariffs     |     
  • Dhaka’s air quality marks ‘unhealthy’ on Saturday morning     |     
  • Israeli strikes kill at least 17 in Gaza; ground troops enter Strip     |     
  • One lynched in Rajshahi for reportedly killing fish trader     |     

৪২ জন চেয়ারম্যানের বার্ষিক আয় কোটি টাকার অধিক: সুজন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংগঠন সংবাদ 2024-07-04, 5:31pm

jhewfhiuwer-eee1b23d7b7c46bde1720132d7b688461720092703.jpg




ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪৭০ জন বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৩৬ জনের বার্ষিক আয় ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা। ৪২ জন চেয়ারম্যানের আয় কোটি টাকার অধিক।

এছাড়াও ৮ জনের বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার কম। ১২৪ জনের বার্ষিক আয় ২ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা। ২০৪ জন চেয়ারম্যানের বার্ষিক আয় ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা। ২৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় করেন ৫১ জন চেয়ারম্যান।

বৃহস্পতিবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যানদের তথ্যের বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন শীর্ষক’ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সম্প্রতি পাঁচ ধাপে ৪৬৯ উপজেলায় ভোট শেষ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। এছাড়া বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলা ভোট স্থগিত হলেও সেখানে ১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকায় ৪৭০ জন চেয়ারম্যান নিয়ে এ বিশ্লেষণ করে সুজন। দেশে উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী ৪৭০ উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৩৬০ জন পেশায় ব্যবসায়ী। যা বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। ৪৮ জন চেয়ারম্যান নিজেদের পেশা হিসেবে কৃষিজীবী বলে উল্লেখ করেছেন।

বিজয়ী চেয়ারম্যানদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ৭৬ দশমিক ৬০ শতাংশ ব্যবসায়ী জানিয়ে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরাও জানি মূল সংখ্যাটা আরও বেশি। অনেকে আসলে ব্যবসাই করেন। ব্যবসার সংখ্যা আরও বেশি। ব্যবসায়ী হতে পারে তাতে সমস্যা নাই। তবে এখানে টাকার খেলা থাকলে সমস্যা। যদি টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে, ভোট কিনে।

ভোটার উপস্থিতির হার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যা দেখানো হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে, প্রশ্ন আছে? তাও সন্তোষজনক না। ৫০ শতাংশ পার হয়নি।

নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যা বলা হয়েছে তা ছিল কি না বলে সংশয় প্রকাশ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের অনীহা ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো ভোট বর্জন করছে। এটা একই সুতোয় গাঁথা। মূল কারণ হলো আস্থাহীনতা। জনগণের আস্থাহীনতা নির্বাচন কমিশনের ওপর।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও সুজনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, কৌশলগত দিক ছিল আওয়ামী লীগের। সেখানে তারা কিছুটা হলেও সাকসেসফুল। কারণ ভোটটা ওপেন করে দেওয়ায়।

উপজেলায় নির্দলীয় প্রতীকে ফিরে যাওয়া উচিত হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। বলেন, জনগণ এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকে। সেই জিনিসটা রাখতে পারলে ভালো। দলীয় মার্কা নিয়ে না আসাই ভালো। যে কারণে জনগণ এত সম্পৃক্ত হয়েছে। না হলে ৩৬ শতাংশ হতো না। ১৬ শতাংশ হতো।

বিরোধীদলের স্থানীয় সরকারের ভোটে অংশ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন মনসুর। তিনি বলেন, নির্দলীয় ব্যক্তি হিসেবে এসে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করে নিতে পারতেন।

স্থানীয় সরকারের এসব প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতায়িত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চাইলে তাদের যা খুশি করতে পারে। এটা ঠিক নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সব কর্তৃত্ব, সেটা হওয়ার কথা নয়। উপজেলার আর্থিক সক্ষমতা নাই। সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

কেন্দ্র থেকে বিকেন্দ্রীকরণের চিন্তা করে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ক্ষমতায়িত করতে হবে বলে মনে করেন মনসুর। যা সয়ংক্রিয়ভাবে হবে যেটা রাজনৈতিকভাবে ঠিক করতে পারবে না বলে জানান তিনি।

৭৭ শতাংশ চেয়ারম্যান পেশায় ব্যবসায়ী

৪৭০ জন বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে ৩৬০ জন পেশায় ব্যবসায়ী। যা বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। ৪৮ জন চেয়ারম্যান পেশায় কৃষিজীবী। আইনজীবী পেশায় রয়েছে ১৯ জন। ১৫ জন শিক্ষক ৭ জন চাকরিজীবী, ১ জন গৃহিণী, ২৮ জন অন্যান্য পেশার সঙ্গে জড়িত। পেশার ঘর পূরণ করেনি ৭ জন।

এসএসসি পাস করেনি ৬৭ চেয়ারম্যান

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫ ধাপে ৪৭০ জন বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে ১০৩ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর। বিজয়ী চেয়ারম্যানদের ২১.৯১ শতাংশ। স্নাতক পাস করেছেন ১৬৫ জন যা বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৩৫.১১ শতাংশ। ৮৩ জন চেয়ারম্যান এইচএসসি পাস এবং ৫১ জন প্রার্থী এসএসসি পাস করেছেন। এসএসসির নিচে রয়েছে ৬৭ জন। ১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘর পূরণ করেনি।

১১৪ বিজয়ী চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে ২২৩ মামলা

৪৭০ জন বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে ১১৪ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং ১৮২ জনের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ৭৫ জনের অতীতে মামলা ছিল এবং বর্তমানেও আছে।

পেনাল কোডের ৩০২ ধারা হলো খুনের শাস্তি। ২৫ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩০২ ধারায় মামলা ৩৬ জনের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ৪ জনের অতীতে মামলা ছিল। বর্তমানেও আছে। বর্তমানে ১১৪ জন বিজয়ীদের মধ্যে ২২৩টি মামলা রয়েছে। অতীতে মামলা সংশ্লিষ্ট ১৭৬ জন বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৫২১টি মামলা ছিল।

৪২ চেয়ারম্যানের বার্ষিক আয় কোটির অধিক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪৭০ জন বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৮ জনের বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার কম। ১২৪ জনের বার্ষিক আয় ২ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা। ২০৪ জন চেয়ারম্যানের বার্ষিক আয় ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা। ২৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় করেন ৫১ জন চেয়ারম্যান। ৩৬ জনের আয় ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা। ৪২ জনের চেয়ারম্যানের আয় কোটি টাকার অধিক। ৫ জন আয়ের ঘর পূরণ করেনি।

সুজনের যেসব সুপারিশ

দেশের গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে নির্বাচন ব্যবস্থাকে পরিশুদ্ধকরণের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করে সুজন। নির্বাচন ব্যবস্থাকে পরিশুদ্ধকরণ এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণের জন্য প্রয়োজন বড় ধরনের রাজনৈতিক সংস্কার। রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য ও সমঝোতা। আর এই সমঝোতার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা ও সংলাপ।

নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা নির্ধারণের বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে মনে করে সুজন।

সংগঠনটির মনে করে, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিষয়টি সংস্কারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয়করণমুক্ত করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানসমূহকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা মনে করে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। আরটিভি