News update
  • Dhaka urges Delhi: uphold mutual respect on internal matters     |     
  • Meeting between diplomats from EU member states, CA underway     |     
  • 431 sacks of smuggled sugar seize, 2 arrested     |     
  • Indian FS arrives in Dhaka for bilateral talks amid tension     |     
  • Trump taps Attorney Alina Habba as his counselor     |     

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির ১০ দফা সুপারিশ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংগঠন সংবাদ 2024-11-30, 12:45am

img_20241130_004240-c79bcba82a032488755f13c77ab3188d1732905959.jpg




সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে ১০ দফা সুপারিশ করেছে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী ও নাগরিকের ভূমিকা নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব সুপারিশ করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সুপারিশে নির্বাচনে পেশীশক্তি, টাকার ব্যবহার ও নমিনেশন বাণিজ্য বন্ধে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে দিক নির্দেশনা প্রদান করতে নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন আয়োজন করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব।

তিনি বলেন, যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, এটা আর থামবে না। কিন্তু এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে তা জনগণ জানতে পারলে ভালো হয়। বর্তমান সরকারের বিবেচনায় নেয়া উচিত, নির্বাচন বিলম্বিত হলে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য সরকারকে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে না জাতীয় নির্বাচন আগে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পূর্বে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করা জরুরি। সরকারের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কথা বলা হচ্ছে। এতে বেশ সময় লাগতে পারে। তবে, এনআইডি হাল নাগাদ থাকলে পৃথক ভোটার তালিকার প্রয়োজন আছে কি না, তা ভেবে দেখতে হবে। এসব নানামুখী জল্পনা—কল্পনার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা কিন্তু এখনো স্পষ্ট নয়।

বর্তমান সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দূরত্ব বাড়লে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে পারে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোকেও জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ হয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান এরপর বলেন, শুধু নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। এখনও বাংলাদেশকে বিপদে ফেলতে দেশি-বিদেশি শক্তি তাদের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সংখ্যালঘু ধর্মীয় কার্ড ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে এইসব অপশক্তিরা। তবে, আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে দেশকে ধ্বংস করে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের অতি সহজে গ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। তাই আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত রাজনীতি অন্ধকার।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এই দেশে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল পতিত সরকার। বাংলাদেশে শতভাগ ভোট পেয়েও নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের ভোট প্রদানের ঘটনাও ঘটেছে। পতিত সরকারের অধীনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাকশালি কায়দায় একতরফা নির্বাচন হয়েছিল। আমি আর ডামি, দিনের ভোট রাতে ও একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ এ দেশে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত কয়েকটি নির্বাচনে ভোটকক্ষে ডাকাত ছিল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ডাকাতরা নিজেদের ইচ্ছামতো সিল মেরে পতিত সরকারের পক্ষে ভোটের বাক্স ভরেছে। তাই গত তিনটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতদের সহযোগিতাকারী নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, প্রশাসন, রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ যে ১০ দফা সুপারিশ করেন, সেগুলো হলো—

১) নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের কাজ শেষ করার পর দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা।

২) জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে পতিত সরকার দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার শঙ্কা রয়েছে। তাই স্থানীয় সরকার নয়, জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৩) নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে বিগত কয়েকটি নির্বাচনের যেসব কমিশন ও প্রশাসনের ব্যক্তিরা নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের বিচারের আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকারকে গাইডলাইন প্রদান করা।

৪) নির্বাচনে পেশীশক্তি, টাকার ব্যবহার ও নমিনেশন বাণিজ্য বন্ধে করণীয় সম্পর্কে কমিশন সরকারকে দিক নির্দেশনা প্রদান করা।

৫) দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, ঋণখেলাপিরা যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার উদ্যোগ নেওয়া।

৬) আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া।

৭) নির্বাচনকালীন সময়ে সন্ত্রাস, ভীতি সঞ্চার, বা অন্য কোনো ধরনের নির্বাচনী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

৮) যেসব আইনের দ্বারা নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশনে বাঁধার সম্মুখীন হতে পারে, সেসব আইন বাতিল করা।

৯) সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নবগঠিত কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোসহ নাগরিক সংগঠনের সঙ্গে এজেন্ডা ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা।

১০) নির্বাচন কমিশনকে সব মতভেদের উর্ধ্বে থেকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কোন চাপে মাথানত না করা।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার।

তিনি বলেন, নির্বচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। এই প্রতিবেদনের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা যেতে পারে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। নিবার্চন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য জরুরী সংস্কারের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে এবং সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়া উচিত। আগামী নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো রাজনৈতিক চাপ থাকবে না, তাই কমিশন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করবে বলে আশা করা যায়।

আরটিভি