News update
  • Intimidation or bloodshed cannot halt Bangladesh’s march to democracy     |     
  • Khaleda Zia integral to an important chapter in BD history: Yunus     |     
  • Enthusiasm marks Victory Day celebrations across Bangladesh     |     
  • Dhaka-Delhi ties deep; to be shaped by trust, dignity, mutual respect     |     
  • EU deploys election observation mission to Bangladesh     |     

কালো টাকা সাদা করার বিধান সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন : টিআইবি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সংগঠন সংবাদ 2025-06-03, 6:45am

tib-060b5f3c5859a1e1d6e9323ff6eeb1431748911521.jpg




নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করে বলেছে, এটি রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। একই সঙ্গে এই সিদ্ধান্তকে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ কালো টাকা সাদা করার এই প্রস্তাব করেন।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্র সংস্কার—বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, করহার যাই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে, অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ একইসঙ্গে বৈষম্যমূলক। কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সবচেয়ে আশঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হলো, সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে। এর মাধ্যমে সরকার বাস্তবে পুরো বছর জুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়ার অঙ্গীকার করছে।

বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, বৈধতা দেওয়ার অজুহাত হিসেবে যে খাতের তোষণ করা হচ্ছে, সেই আবাসন খাতই দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের একটি হিসেবে চিহ্নিত। অবিলম্বে কালো টাকা সাদা করার এই দুর্নীতিবান্ধব সুযোগ চিরতরে বাতিল করার জোর দাবি জানাই আমরা। যার সূচনা হওয়া উচিত সংশোধিত বাজেটে এ সুযোগ বাতিলের মাধ্যমে। পাশাপাশি কালো টাকার উৎস অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং করব্যবস্থায় সমতা ও ন্যায় নিশ্চিতের দাবিও জানান তিনি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, সরকার যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান বাস্তব ও কার্যকর বলে দাবি করতে চায়, তবে কালো টাকা বৈধ করার যাবতীয় পথ চিরতরে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম ও নীতিনির্ধারণী উদ্যোগগুলোকে জনগণ শুধুই লোকদেখানো মনে করবে। পরিণতিতে দুর্নীতির স্বাভাবিকতার সংস্কৃতি আরও গভীরতর হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র লোক দেখানো হিসেবেই থেকে যাবে। তিনি বলেন, এই সরকারের গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের অন্যতম সুপারিশ হলো— কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়ার সব পথ চিরতরে বন্ধ করা। সব রাজনৈতিক দল এরইমধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। অথচ, অন্তর্বর্তী সরকার এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে স্ববিরোধীতা করছে, সরকার নিজেকে বিব্রত করছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ বাজেটে প্রত্যাশা ছিল, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারের অগ্রগতির একটি ধারণা দেওয়া। কিন্তু সে ব্যাপারে মাত্র একটি বাক্য ব্যবহার করেই দায় সেরেছেন অর্থ উপদেষ্টা। 'দেশ থেকে অর্থসম্পদ পাচার করে পরবর্তীতে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করা ব্যক্তিদের অর্থ-সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান করা হয়েছে। কিন্তু কী প্রক্রিয়ায় তা বাস্তবায়ন করা হবে—তাও পরিষ্কার করা হয়নি', বলে জানান তিনি।

এছাড়া, রাজস্ব আদায় বাড়াতে এর ব্যবস্থাপনা থেকে নীতিকে আলাদা করার সঙ্গে এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের কৌশলগুলো কী হবে—সে উত্তরও পাওয়া যায়নি বাজেট বক্তৃতায়, যা সত্যিই হতাশার বলে মনে করে টিআইবি।