News update
  • Japan PM’s son to quit: Outrage over pvt party at residence     |     
  • Dhaka's air ranks worst in the world for 3rd day in a row     |     
  • Two drug shops fined in Kalapara for selling chemicals     |     
  • Menstrual Health-Hygiene Unaffordable for Poor Girls, Women      |     
  • Colombo Freedom Pride Parade, June 4 to celebrate democracy     |     

রোজার বাজারে দামের ভারে চাহিদার চেয়ে কম পণ্য কিনছেন ক্রেতারা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক error 2023-03-23, 10:51pm

aab5ed40-c98b-11ed-be2e-754a65c11505-1-8c09cba51085ae280882f714cc2540601679590309.jpg




রমজানের শেষ মুহূর্তের কেনাবেচা সারতে অন্যান্য বছর যেখানে ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় জমে থাকতো সেখানে মহাখালী ও বনানী কাঁচাবাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা দেখা যায়নি। যারাও বা আসছেন তারাও পরিপূর্ণ বাজার করতে পারছেন না।

ঢাকার ওই দুটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। আগুন জ্বলছে মাংসের বাজারেও। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবির হিসেবে গত বছরের রমজানের চেয়ে এবারের রমজানে প্রতিটি পণ্যের দাম ১০ থেকে ৫১ শতাংশ বেশি রাখা হচ্ছে।

রমজানে ছোলার চাহিদা থাকায় কেজিতে দাম বেড়ে ৮৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুরের ডাল ৯৫ থেকে ১৩৫ টাকা, বিভিন্ন ধরণের বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকায়, শসার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, লেবুর হালি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেসনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, সয়াবিন তেল কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১২- ১২০ টাকা কেজি দরে।

এছাড়া ডিম প্রতি ডজন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে।

ইফতারে প্রধান উপকরণ খেজুর। সেটাও বলা যায় নাগালের বাইরে। খেজুরের মধ্যে আজওয়া খেজুর কেজি-প্রতি ১৬০০, মরিয়ম খেজুর ৮০০ এবং মাশরুম খেজুর ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মাংসের দামেও যেন আগুন। গরুর মাংস দোকান ভেদে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি, ব্রয়লার মুরগি ২৭০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি ৩৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মূলত রমজানকে কেন্দ্র করে বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আগেই বেড়েছিল, এরমধ্যে মুরগির মাংসসহ কয়েকটি পণ্যের দাম গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা বেড়েছে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, তারা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনছেন, তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

ইফতারে প্রধান উপকরণ খেজুর। সেটাও বলা যায় নাগালের বাইরে। খেজুরের মধ্যে আজওয়া খেজুর কেজি-প্রতি ১৬০০, মরিয়ম খেজুর ৮০০ এবং মাশরুম খেজুর ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মাংসের দামেও যেন আগুন। গরুর মাংস দোকান ভেদে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি, ব্রয়লার মুরগি ২৭০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি ৩৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মূলত রমজানকে কেন্দ্র করে বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আগেই বেড়েছিল, এরমধ্যে মুরগির মাংসসহ কয়েকটি পণ্যের দাম গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা বেড়েছে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, তারা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনছেন, তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পরিমাণে কম কিনছেন

এদিকে, দ্রব্যমূল্য এমন লাগামহীন বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

একেকটি পণ্যের দাম শুনে বেশিরভাগ ক্রেতা চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পরিমাণে কম কিনে বাড়ি ফিরছেন।

মহাখালীর বাসিন্দা মিতু বেগম বাজার করতে এসে তার বাজেটের সাথে চাহিদা যেন কুলিয়ে উঠতে পারছেন না।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “আমার স্বামী বাইক চালিয়ে ইনকাম করে। যা ইনকাম হয়, তার চেয়ে খরচা বেশি। জিনিষের দাম তো বেশি। টাকা কম, কিনতে তো পারি না। আমার জিনিষ লাগে তিনটা, খাইতেছি একটা। খাওয়া কমায় দিসি। কষ্ট হইতেসে। কিচ্ছু করার নাই।”

আবার মহাখালী দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মর্জিনা বেগমও জানান, আয় আর ব্যয়ের ভারসাম্য হারিয়েছে তার সংসারেও।

“অন্যান্য দেশে রমজান আসলে দাম কমে, আমাদের এখানে ডবল হয়। যারা সরকারি চাকরি করে তাদের আয় বেড়েছে। বাকি মানুষের আয় তো বাড়েনাই। আমি যদি ১০ টাকা ইনকাম করি তাহলে খরচ থাকে ২০ টাকা। তাহলে বুঝতেই পারছেন চাহিদার পুরোটা পূরণ করা যাচ্ছে না। আংশিক করতে হচ্ছে।” তিনি বলেন।

অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক আহমেদও বাজারের লিস্ট অনুযায়ী সব কেনাকাটা সারতে পারেননি।

তিনি আক্ষেপের স্বরে বলেন, “সবকিছুর দামই বেশি। আজকে আর কোন সদাই নিবো না। লেবু, শসার দাম এতো বাড়তি। যেই খেজুরের গুড় ধরেন ২০০ টাকায় কিনতাম সেটা এখন সাড়ে তিনশর নীচে পাচ্ছি না। আমি রিটায়ার্ড পারসন। মনে চায় কিছু গরুর মাংস নিবো, ইলিশ মাছ নিবো। দামের জন্য পারি না। বাজেটে মিলে না। অবস্থা যে কী হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।”

চাকুরীজীবী ইকরামুল হাসান বলেন, “দাম অনেক বেশি। আগের মতো একসাথে বেশি কেনাকাটা করতে পারি না। গত বছর যেই গরুর মাংস ৬০০/৬৫০ কেজি ছিল সেটা আজকে ৮০০ টাকায় কিনলাম। গত সপ্তাহেও ছিল সাড়ে সাতশ। আমাদের ইনকাম তো বাড়েনাই। এজন্য ব্যয় সংকোচন করতে হচ্ছে।”

ক্রেতাদের ভিড় নাই

ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বছরের অন্য সময় যে হারে ক্রেতারা ভিড় করেন এবারে তার চেয়ে বিক্রি অনেক কম।

বনানী কাঁচা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী শেখ মিরাজ বলেন, “রমজানের আগে যেমনে বেচা-বিক্রি হয়। এবারে তার কিছুই নাই। আগে যে কাস্টমার ১০ কেজি মুরগি নিতো। এখন নেয় তিন কেজি। মানুষের চাহিদা আছে। কিন্তু দাম বেশি, তাই চাহিদা মিটাইতে পারে না। মানুষ খাওয়াই কমায় দিসে। মুরগির দাম বাড়লেও আমাদের প্রফিট (লাভ) কমে গেসে। কাস্টমাররা কথা শুনায়। ফিডের দাম ৬০০ টাকারটা ১৩০০ টাকা। এইভাবে দাম তো বাড়বেই। ”

মাংস বিক্রেতা মোহাম্মদ মফিজুর জানান, “কাস্টমার তো দেখতেই আছেন। সকাল থেকে তেমন বেচা-বিক্রি নাই। শবে বরাতের পর থেকে গরুর দাম বেশি। সাপ্লাই কম। বেচা কিনা ভালো যায় না। মানুষ দাম শুইনা চইলা যায়। যারা কিনে তারা হাফ কেজি, এক কেজি কিনে। বেশি নিতে পারে না। মানুষের হাতে পয়সা নাই।”

মহাখালী কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জানান, “রমজানের আগে কাস্টমারের মাল দিয়ে সারতে পারতাম না। এবারে কোন কাস্টমার নাই। সকাল থেকেই খালি। মাসের শেষ মানুষের পকেটে টাকা নাই। সবকিছুর রেটই বেশি। এখন মানুষ আর কেজিতে জিনিষ কিনে না। ৫০০ গ্রাম, আড়াইশ গ্রাম কিনে। পরিমাণে কমায় দিসে। আগে দিনে মিনিমাম তিরিশ হাজারের সেল হইতো আজকে ১০ হাজার সেলও হয় নাই।”

এর আগে, ১৯শে মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভায় বলা হয়েছিল বাজারে পণ্য-মূল্য বেশি থাকায় এই রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা আগের বছরের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে।

সরকারের বাজার মনিটরিংয়ে দুর্বলতার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভোক্তা। তবে ব্যবসায়ীরা দুষছেন যোগান কম থাকা, ডলার সংকট ও এলসি করতে না পারাকে।

গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান

তবে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট যেন বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সেজন্য ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৪২টি বাজারের সাতটি বাজারে ডিজিটাল মূল্য তালিকা স্থাপনের কথা জানিয়েছেন সেখানকার মেয়র আতিকুল ইসলাম।

দশ ফুট বাই ছয় ফুট আকারের এসব ইলেকট্রিক বোর্ডে ৪১টি নিত্য-পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা থাকবে। নির্ধারিত সেই মূল্যের বাইরে কোন ব্যবসায়ী বেশি নেয় কি না, তা দেখার জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট মনিটরিং টিম কাজ করবে বলে তিনি জানান।

তবে সেই মূল্য তালিকাতেও দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ পণ্যের দাম ভোক্তাদের নাগালেও বাইরে। ২৩শে মার্চ সরকার নির্ধারিত কয়েকটি পণ্যের বাজার দর হচ্ছে, মসুরের ডাল ১৩০ টাকা কেজি, ছোলার কেজি ৮৫ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮৭ টাকা, চিনি কেজি-প্রতি ১০৭ টাকা।

তবে এই ইলেকট্রিক বোর্ডে বাজারদরের চাইতে কিছুটা কম মূল্য দেখা গিয়েছে কয়েকটি পণ্যে। এরমধ্যে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৩২-৩৯ টাকা, বেগুন কেজি-প্রতি ৩৮ থেকে ৬৩ টাকা, ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৫৫ থেকে ২৬৫ টাকা, সোনালী মুরগি ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি, টমেটোর কেজি ২৩ থেকে ৪৩ টাকা।

দুপুরে মেয়র আতিকুল ইসলাম মহাখালী বাজার পরিদর্শন করে সরকারি দরের সাথে বাজারে বসানো মূল্য তালিকা মিলিয়ে দেখেন এবং কোন ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত বাজার মূল্যের চাইতে বেশি দাম রাখলে এবং তা প্রমাণিত হলে দোকান বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

বাজারে দোকানীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সব পণ্যের দাম আমরা বাইরে ইলেকট্রিক ডিজিটাল বোর্ডে দিয়ে দিচ্ছি। প্রতিদিন মূল্য নির্ধারণ করে দিবো। এটার বাইরে বেশি দামে কেউ কোন পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। যদি আমরা অভিযোগ পাই বেশি দাম রাখছে। আমরা ওই দোকান বন্ধ করে দেবো।”

প্রতিদিন বেলা তিনটায় পণ্যের দাম জানিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ডিএনসিসির মনিটরিং টিমের কাছে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হবে। সেই মূল্য পাওয়ার পর ডিজিটাল বোর্ডে সেই মূল্য তুলে দেয়া হবে।

রমজানের চাহিদা মেটাতে সরকারের কাছে খাদ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে তাই গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানান।

মূলত, কৃষি বিপণন অধিদফতর সারা দেশের বাজার যাচাই করে এই মূল্য তালিকা তৈরি করছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

মেয়র আতিকুল বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বাজারে এই প্রথম ইলেক্ট্রনিক বোর্ড বসানো হয়েছে, যেন ভোক্তারা প্রতারিত না হন। বোর্ডে বাজারের সভাপতির নম্বর, সিটি কর্পোরেশন প্রধান রেভিনিউ কর্মকর্তার ফোন নম্বর বোর্ডে থাকবে। যদি ভোক্তারা ওই নম্বরে অভিযোগ করেন যে এই দোকানে বেশি দাম রেখেছে। আমরা এসে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সেই দোকান বন্ধ করে দেবো। ”

বেশি দাম নিলে যেকোনো ক্রেতা ভোক্তা অধিকার অধিদফতর বা ডিএনসিসির হটলাইন নম্বরেও যোগাযোগ করতে পারবেন বলে জানানো হয়। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।