News update
  • Cox’s Bazar Airport Upgraded to International Status     |     
  • With $80 per capita Bangladesh is getting trappeded in climate debt     |     
  • Dhaka’s air recorded ‘unhealthy’ Monday morning     |     
  • CA Urges IFAD to Launch Social Business Fund for Agri Youth     |     
  • OIC Condoles the Passing of Members of the Amiri Diwan     |     

মানুষের জন্য নদী, নদী রক্ষায় আমরা

error 2021-09-24, 4:42pm

River Titash Photo- Hasnat Md Alamgir (shuhag)



নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ, দূষণের প্রতিকার ও দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ এবং উজানের অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তিতে জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর এবং যৌথ নদী কমিশনে নেপাল ও চীনকে অন্তর্ভুক্তকরণ প্রসঙ্গে।

প্রথমত: ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটারের-এ দেশে নদ নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত সে ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা এখনো ঐক্যমত্যে পৌঁছুতে পারেননি। নদীমাতৃক আমাদের এ দেশের জন্য এটা চরম এক ব্যর্থতা। সরকারি সংস্থাগুলো বলছে ২৩০টি, উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে ৪০৫টি, শিশু একাডেমির শিশু বিশ^কোষে বলা হয়েছে ৭০০টি, লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতায় বলা হয়েছে ১৩০০টি, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলছি ১৫০০টির ওপর, গবেষক ম.ইনামুল হক বলছেন প্রায় ২০০০টি নদী রয়েছে।

অন্যদিকে উজানের অভিন্ন স্বীকৃত নদী ৫৭টি হলেও বাস্তবে রয়েছে ১০৭টি। বিভিন্ন সংখ্যার কারণে আমরা বিভ্রান্ত, তাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে অনুরোধ করবো নদ-নদী গুলো দখলমুক্ত, প্রবাহমান ও জীবন্ত রাখতে চাইলে এর প্রকৃত সংখ্যা জাতির সামনে তুলে ধরতে।

দ্বিতীয়ত: আপনারা নিঃসন্দেহে একমত হবেন যে, পৃথিবীর দূষিততম নদীগুলোর অবস্থান এখন নদীমাতৃক বাংলাদেশে। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, কর্ণফুলিসহ অসংখ্য নদী তীরবর্তী লক্ষ লক্ষ মানুষ, প্রাণী ও জীববৈচিত্র নদী দূষণের শিকার। ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জে বসবাসকারী প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এ দূষণের শিকার। অধিকাংশ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা প্রধানত; এ দূষণের জন্য দায়ী। তাই অপ্রিয় হলেও সত্য যে আমাদের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে দূষণের ওপর। আমরা এটার নিরসন চাই। তাই যেমনি ভাবে ৬০,০০০ নদী দখলদারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তেমনি করে যারা সরকারি

নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নদী দূষণ করছে তাদের তালিকা প্রকাশ করে বিচারের আওতায় আনা হোক।

আর ইতোমধ্যে যে নদীগুলো দূষিত হয়েছে এবং যার তলদেশে ১০/১২ ফুট পর্যন্ত ক্ষতিকর ধাতুর কঠিন স্তর পড়েছে সেগুলো অবিলম্বে দূর করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

তৃতীয়ত: স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনালগ্নেই (১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ভারত) যৌথ নদী কমিশনের যাত্রা শুরু হয়। যার লক্ষ হল উজানের অভিন্ন নদীগুলোর পানি সম্পদ বন্টন, সেচ, বন্যা ও ঘুর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার ইত্যাদি। 

বিগত ৪৯ বৎসরে মাঝে মাঝে ঝলসে উঠলেও বর্তমানে একবারে নিশ্চুপ এ প্রতিষ্ঠানটি । বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় এরকার্যক্রমকে আরো জোরালো করা এখন সময়ের দাবি। এ জন্য ‘নদী কূটনীতি’ কে যেমন বেগবান করতে হবে তেমনি এর পরিধি বাড়িয়ে নেপাল ও চীনকে এর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া মেকং নদী রক্ষা কমিশনের মত উজানের অভিন্ন বড় নদী গুলোর ক্ষেত্রে যেমন গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, মহানন্দা, সুরমা, কুশিয়ারা, ইত্যাদি নদী ভিত্তিক পৃথক নদী কমিশন গঠন করা দরকার, যাতে করে সত্যিকার অর্থেই নদীগুলোকে জীবন্ত স্বত্তা হিসেবে জিইয়ে রাখা যায়। আর এটা সম্ভব তখনই যখন বাংলাদেশ জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশনে (যা ইতোমধ্যে আইনে পরিণত হয়েছে) স্বাক্ষর করে ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি জাতিসংঘে তুলে ধরবে। পরিশেষে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় যারা নিরলস

ভাবে কাজ করছে তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা, পৃষ্টপোষকতা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করা উচিৎ যাতে করে এ ধরনের সামাজিক আন্দোলন যেন হারিয়ে না যায়।

মো: আনোয়ার সাদত

সভাপতি

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন