News update
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     
  • New gas reserve found in old well at Sylhet Kailashtila field     |     
  • Revenue earnings shortfall widens in October     |     

খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে হাইকমিশনে দেখতে চান না প্রবাসীরা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক Nation 2024-12-17, 3:07pm

img_20241217_150502-eb214b9983d5605943d70797dac036db1734426462.jpg




মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে মালয়েশিয়ায় দেখতে চান না প্রবাসীরা। একাধিক দুর্নীতি, আওয়ামী ঘনিষ্ঠতা ও প্রবাসীদের হয়রানির অভিযোগে তাকে দ্রুত হাইকমিশন থেকে প্রত্যাহার ও বিচারের দাবি করেছেন তারা।

৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিশ্বস্ত এই আমলাকে প্রবাসীদের দাবির প্রেক্ষিতে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বদলির অর্ডার করা হয়। পরে সমালোচনার মুখে সেই বদলির আদেশও বাতিল করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইস্ট এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র তৌফিক হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তারপর এখনও বহাল তবিয়তে তিনি আছেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে। অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে চেষ্টা করছেন স্বপদে বসে থাকতে।

এদিকে, অসংখ্য অভিযোগের পরেও মালয়েশিয়াতে এখনও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এই আমলা। সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছের লোক হলেও বর্তমান সময়ে তার খুঁটির জোর কোথায়, কেন তাকে দেশে ফেরত নিয়ে আইনের আওতায় নেওয়া হচ্ছে না—এমন প্রশ্ন বেশির ভাগ মালয়েশিয়া প্রবাসীর কণ্ঠে।

ছাত্র জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ নেওয়া খাস্তগীরের কুয়ালালামপুরের থার্ড পার্টি অফিস ইএসকেএল থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশেস্থ অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজসে পাসপোর্টের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের ক্ষেপিয়ে তুলে ফ্যাসিবাদি হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রাজনীতিবিদদের সুরে ছাত্র জনতার আন্দোলনকে কটাক্ষ করেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের হোয়াটসআপ গ্রুপ বিএফএসএ (BFSA)-তে।

বিএফএসএ গ্রুপে মালেয়শিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে অত্যন্ত নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা যায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয়ে।

খাস্তগীর মালয়েশিয়ায় ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে খুশি করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে প্রতিবাদকারী বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তিনি ওই সময় অন্দোলনকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেন এবং পরে তার তত্ত্বাবধানে কুয়ালালামপুরের কাজাং থানায় মামলাও করা হয়। পররাষ্ট্র ক্যাডারদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএসএ) হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ফাঁস হওয়া চ্যাটে দেখা যায়, খোরশেদ আলম খাস্তগীর প্রবাসে যারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের পাসপোর্ট বাতিলেরও সুপারিশ করেছিলেন।

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ই-পাসপোর্ট পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব পাওয়া সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ইএসকেএলের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, রাজস্ব ফাঁকি, প্রবাসীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মারধর, ১০ রিঙ্গিতে মোবাইল সিম ৩০ রিঙ্গিতে নিতে বাধ্যসহ নানান অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইএসকেএলের সাথে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে নির্দেশ দেয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তে চরম নাখোশ হয়ে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠেন দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর। কেননা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কিছুদিন আগেই ইএসকেএলে সাথে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি নবায়নের সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন ডেপুটি হাইকমিশনার। চুক্তির বাইরে গিয়ে ইএসকেলকে নানা অবৈধ সুবিধা দিতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন এই ডেপুটি হাইকমিশনার।

বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হওয়ায় ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে খোরশেদ আলম খাস্তগীরের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এই সংগঠনের সভাপতি হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া প্রবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করা, এমনকি আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রবাসীদের পাসপোর্ট বাতিলের সুপারিশ করলেও তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। খাস্তগীর মালয়েশিয়ায় ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে খুশি করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে প্রতিবাদকারী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

এদিকে প্রবাসীদের দাবীর প্রেক্ষিতে খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রত্যাহার করে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদুত করে প্রজ্ঞাপন জারী করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পরে নানান সমালোচনা হলে সেই আদেশ বাতিল হয়। এরই মাঝে হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনারের পদ শূন্য হলে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থানীয় মিশন, নিউ ইর্য়কে নিযুক্ত মিনিষ্টার (স্থানীয়) ও দক্ষ কুটনৈকি খ্যাত মোসাম্মৎ শাহানারা মনিকাকে বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরে মিনিষ্টার (স্থানীয়) ও ডেপুটি হাইকমিশনার পদে বদলির চিঠি ইস্যু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগ। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগদানের সব প্রস্তুতি থাকলেও অদৃশ্য কারণে আটকে যায় তা। এমনকি বদলির আদেশের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেননি সদ্য নিয়োগ পাওয়া মোসাম্মৎ শাহানারা মনিকা।

তবে নানান জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় মিনিষ্টার (স্থানীয়) ও ডেপুটি হাইকমিশনার পদে যোগদান করেন মোসাম্মত শাহানারা মনিকা। কিন্তু এক হাইকমিশনে দুই জন ডেপুটি হাইকমিশনারের কাজ কি সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে জানা যায় খোরশেদ আলম খাস্তগীর যে কোনমূল্যে মালয়েশিয়াতেই থাকতে চান। শেষ মূহুর্তে যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে ইউএন শরনার্থী কার্ড নিবেন। খবর চাউর হয়েছে ইতোমধ্যে শরনার্থী কার্ড প্রাপ্তির আবেদনও করছেন, তবে সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরের বিরুদ্ধে পহাড়সম অভিযোগ থাকলেও এখনও বহাল তবিয়তেই আছেন হাইকমিশনে। তার ভয়ে তটস্থ থাকেন দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমনকি মতের বিরুদ্ধে গেলেই ভরা মিটিংয়ে করেন অপমান, দেন টার্মিনেট করার হুমকি।

বিএফএসএ গ্রুপে মালেয়শিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে অত্যন্ত নেতিবাচক মন্তব্য করতে দেখা যায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয়ে। যা তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের আলাপেই ফুটে উঠে।

তিনি ওই গ্রুপে 'BFSA' অন্দোলনকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেন এবং পরে তার তত্ত্বাবধানে কুয়ালালামপুরের কাজাং থানায় মামলাও করা হয়।

এছাড়াও পররাষ্ট্র ক্যাডারদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএসএ) হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ফাঁস হওয়া চ্যাটে দেখা যায়, ফ্যাসিস্ট সরকারকে খুশি করতে খোরশেদ আলম খাস্তগীর প্রবাসে যারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের পাসপোর্ট বাতিলেরও সুপারিশ করেছিলেন।

এছাড়া, খাস্তগীরের বিরুদ্ধে সত্য নিউজ প্রকাশ করায় তৎকালিন ডিবিসি নিউজ এর মালয়েশিয়া প্রতিনিধি মো: মনিরুজ্জামানকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন এবং হলুদ সাংবাদিক হিসেবে মন্তব্য করেন।

এদিকে আরটিভির হাতে এসেছে একটি অডিও রেকর্ড। যেখানে ইএসকেএলের ব্যবস্থাপস্থনা পরিচালক বিদেশি পাসপোর্টধারী গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে বলতে শোনা যায়, খাস্তগীর প্রলোভন দেখিয়ে এই লাইনে আমাকে নিয়ে এসে উল্টো বিপদে ফেলেছে।

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক মোকাম্মেল হোসেন বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী খোরশেদ আলম খাস্তগীর জুলাই বিপ্লবে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের হুমকি দিয়েছিলেন জেলে ভরার। খুনী হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় মামলাও করেছিলেন। সেই খাস্তগীর এখনো প্রবাসীদের নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন। হুমকি-ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা প্রবাসীরা অতি দ্রুত এই দুর্নীতিবাজের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচার করার দাবি জানাচ্ছি। আরটিভি