সরকার উদার হস্তে ঋণ করেছে মেগাপ্রকল্পে। এমনকি বিভিন্ন প্রাইভেট সেক্টর যে ঋণ করেছে সেগুলোরও জিম্মাদার হয়েছে সরকার। কেননা এই সেক্টরের বেশিরভাগ হচ্ছে সরকারের লোক। এমন মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রবাসীরা দেড় মাসে যে রেমিটেন্স পাঠায় আইএমএফ তিনবছর ধরে সেই পরিমাণ ঋণ দেবে। তাও সেটি পুরো পাবে কিনা সেটি নিশ্চিত নয়। পরিমাণগত দিক থেকে এই ঋণ সঙ্কট কমাবে না। তবুও এত শর্ত মেনে ঋণ নিয়েও সরকার খুশি হওয়ার কারণ, এই নেওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গা থেকে আরও ঋণ গ্রহণের স্বীকৃতি পেল। তারা আরও ঋণ নিতে পারবে। এই কারণে তারা খুশি। তবে আমাদের জনগণের খুশি হওয়ার কারণ নেই, এই ঋণ আমাদের ঘাড়েই চাপবে।
শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ও বিশ্ব পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক সভায় এসব কথা বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সভাপতি এস এম কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার আইএমএফের ঋণ নেওয়ার কারণ দেখালো, বৈদেশিক ঋণের সঙ্কটের কারণে আমদানি ব্যয় মেটানো যাচ্ছে না, এলসি খোলা যাচ্ছে না, প্রয়োজনীয় মেডিকেল সরঞ্জাম আনা যাচ্ছে না, উৎপাদনের কাঁচামাল জাহাজ থেকে খালাস করা যাচ্ছে না। কিন্তু যে পরিমাণ রিজার্ভ দেখানো হচ্ছে তাতে এরকম সঙ্কট হওয়ার কথা নয়।
সরকার খুশি হয়েই তেল বিদ্যুতের দাম বাড়ায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়েছে। সরকারের কিছু করার নাই এমনটি মনে হবে। এটি কিন্তু অনিবার্য ছিল না। ইউক্রেন সঙ্কট বাংলাদেশের জন্য অনিবার্য ছিল না। বাংলাদেশ যদি নিজস্ব গ্যাস সম্পদ, নবায়নযোগ্য এনার্জি, জাতীয় সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে জ্বালানি বিদ্যুতে মহাপরিকল্পনা এবং অবকাঠামোগত পরিকল্পনা করত তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে যতই বাড়ুক আমাদের তেমন প্রভাব পড়ত না বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।