News update
  • Prof Yunus back home after his week-long Doha, Rome visits     |     
  • 5 of a family burn injuried in Gazipur gas cylinder blast      |     
  • River erosion threatens south Padma Bridge Project Site     |     
  • Dr Kamal urges vigilance on his 88th birthday      |     
  • Dhaka’s air ‘moderate’ for the second day on Sunday     |     

ছুটির দিনে রাজধানীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক অর্থনীতি 2025-03-14, 1:04pm

rtertert-0d92f767aa1f729402b87b760e7133e81741936914.jpg




কিছুদিন পরই ঈদ। চারদিকে ঈদ ঈদ আমেজ। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পরিবার-পরিজনদের জন্য কেনাকাটা। পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দমতো জামা, জুতা, আনুষঙ্গিক কেনা শুরু হয়ে গেছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর গাউছিয়া, চাঁদনি চক ও নিউমার্কেট ঘুরে দেখো গেছে এলাকায় একসঙ্গে অনেকগুলো মার্কেট আর সব ধরনের পণ্য পাওয়ার সুবিধা থাকায় ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে এখানে আসেন কেনাকাটা করতে। বিশেষত, যে কোনো উৎসব ঘিরে সেখানকার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। প্রতি বছর ঈদের আগেও দেখা যায় এমন চিত্র। ঈদ ঘিরে ভিড় বাড়ে সেখানকার মার্কেটগুলোতে৷ এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। বলা চলে, এবার রমজানের শুরু থেকেই এসব মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। 

দেখা গেছে, শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ কেনাকাটা করতে এসেছেন। ক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগ মুহূর্তে মার্কেটে ভিড় বেশি থাকে, তাই ঝামেলা এড়াতে তারা আগেভাগেই কেনাকাটা করতে এসেছেন।

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ সামনে রেখে প্রতি বছরই তাদের বাড়তি বিক্রির আশা থাকে। এবারও তেমনটিই আশা করছেন তারা। তবে রমজানে দিনের তুলনায় সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভিড় বেশি থাকে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা৷

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে কেনাকাটা করতে নিউমার্কেটে আসা ফাহিমা আক্তার বলেন, প্রতি বছর নিজের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য নিউমার্কেট থেকে কেনাকাটা করি৷ কিছুদিন পর ভিড় বেড়ে যাবে। তাই আগেই কেনাকাটা সেরে ফেললাম।

আরেক ক্রেতা মিনহা তাবাসসুম বলেন, আগামী সপ্তাহে গ্রামের বাড়ি চলে যাবো। এজন্য কাপড় কিনতে আসা৷ পরিবারের লোকজনের জন্য কিনে নিয়ে যাবো৷ এখানে একসঙ্গে অনেক দোকান থাকায় পছন্দমতো কেনাকাটা করা যায়।

সরেজমিনে এসব মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, হালকা-পালতা ও গরমে আরামদায়ক পোশাকের দিকে বেশি ঝুঁকছেন ক্রেতারা৷ মার্কেটগুলোতে থ্রি-পিস ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ শাড়ি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে আট হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। তবে এগুলো মধ্যম মানের দাম বলছেন বিক্রেতারা। এর চেয়ে বেশি দামের পোশাকও বিক্রি করছেন তারা। তবে মাঝারি দামের পোশাকের চাহিদা বেশি।

দেখা গেছে, এবার সুতি শাড়ির প্রাধান্য দেখা গেল। শাড়ির জমিনে হাতের কাজ, মেশিনের কাজ, স্ক্রিন বা ব্লক প্রিন্ট, হ্যান্ড পেইন্টের মাধ্যমে ফুলপাতা আর জ্যামিতিক নকশা। 

এ ছাড়াও দেশি তাঁতে বোনা শাড়ি, জামদানি প্রিন্টের হাফ সিল্ক শাড়ি, সুতি শাড়ির প্রাধান্য থাকবে। হালকা সবুজ, আকাশি, ঘিয়ে, ধূসর, হালকা গোলাপি রং দেখা যাচ্ছে বেশি। এক হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে ক্রেতারা পেয়ে যাবেন হাফ সিল্ক, তাঁতের শাড়ি। সিল্ক, মসলিন বা জর্জেটের শাড়িতে এমব্রয়ডারি, কাটওয়ার্ক, পুঁতি ও জরির কাজ করা শাড়িগুলো দেড় হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।

কাপড়ের পাশাপাশি ঈদের অন্যতম আকর্ষণ গয়না। গাউছিয়া, চাঁদনি চকের গয়নার বাজারে জার্মান সিলভার ও ভারতীয় গয়নার আধিক্য রয়েছে। রুপার ওপরে মিনাকারির কাজ, কৃত্রিম মুক্তা, পাথর দিয়ে সাজানো হচ্ছে গলার মালা, কানের দুল ও চুড়ি। আছে আয়না, কাপড় ও সুতার তৈরি গয়না। ধাতু ও কাঠের তৈরি আংটিগুলোর দাম শুরু ১০০ টাকা থেকে। ২৫০ থেকে ৪০০ টাকার ভেতরেই পেয়ে যাবেন জার্মান সিলভারের গলার মালা ও কানের দুলের সেট। টানা ঝুমকা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। চাঁদনি চক ও গাউছিয়ার দোকানগুলোয় আজকাল মখমল লাগানো কাচের চুড়িও পাওয়া যাচ্ছে। ১২ পিসের এক সেট মখমল লাগানো কাচের চুড়ির দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া ৫০ টাকাতেই পেয়ে যাবেন ছিমছাম একগুচ্ছ রেশমি কাচের চুড়ি। বর্তমানে ২২ ক্যারেট রুপার দাম চলছে ২ হাজার ৫৭৭ টাকা আর ১৮ ক্যারেট রুপা পাবেন ২ হাজার ১১০ টাকায়। এ ছাড়া গয়নার ডিজাইনভেদে মজুরি শুরু হয় ৫০০ টাকা থেকে।

ঈদে অনেকেই তাই জামার সঙ্গে মিলিয়ে নতুন ব্যাগ ও জুতা কেনেন। এবারের জুতা-ব্যাগের চলটা অবশ্য দেশি-পাশ্চাত্য—দুটো মিলিয়েই। নিউমার্কেট ও গাউছিয়ায় পেয়ে যাবেন দেশি–বিদেশি বিভিন্ন ধরনের জুতা। নকশার পাশাপাশি জুতার রং ও কাটে দেখা গেছে বৈচিত্র্য। বেশির ভাগ চলছে ইন্ডিয়ান নাগরা, দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে কেডস পরতে চাইলে গুনতে হবে ১ থেকে ২ হাজার টাকা।

চামড়ার বিভিন্ন জুতাও পেয়ে যাবেন নিউমার্কেটের দোকানগুলোয়। নিউমার্কেটের ব্যাগ ও জুতার দোকানের বেশির ভাগ জুতাই এসেছে চীন ও থাইল্যান্ড থেকে। এসব জুতার দাম শুরু হাজারের ওপর থেকে। চামড়ার তৈরি ব্যাগও পেয়ে যাবেন, মিলবে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। চাঁদনি চকের তৃতীয় তলায় ক্রিসবেলা, রোবো টিফেনি, সাইবা, ক্রিস্টিনা অ্যান্ড ওকের ব্যাগ। দাম পড়বে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া নিচতলায় থাকা নন–ব্র্যান্ডেড ব্যাগ পেয়ে যাবেন ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।

ঈদের শাড়ির সঙ্গে সাধারণত ভারী গোছের ব্লাউজই বেছে নেওয়া হয়। তৈরি করা কাতান ব্লাউজের দাম পড়বে ৩৫০ টাকা। এ ছাড়া সুতি শাড়ির জন্য ৩০০ টাকাতেই পাবেন চিকেন কাপড়ের ব্লাউজ। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত শুক্রবার থেকেই ঈদের কেনাবেচা মূলত শুরু হয়েছে। পুরোদমে বিক্রি শুরু না হলেও, অন্যবারের তুলনায় এবার কেনাবেচা ভালো হওয়ার আশা ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া ছেলেদের টি-শার্ট দেড়শ থেকে শুরু করে ৪০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। জিন্স প্যান্ট ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে৷ ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় শার্ট বিক্রি হচ্ছে৷ মার্কেটের বাইরে ফুটপাতেও কেনাবেচার হিড়িক পড়েছে৷

ফুটপাতের বিক্রেতারা বলছেন, ফুটপাতে দোকান ভাড়া না থাকায় কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারেন তারা। অপেক্ষাকৃত কম দামে পণ্য পেয়ে ফুটপাতের মার্কেটে ভিড় করছেন অনেক ক্রেতা।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আসিফুল আলম বলেন, ঈদের আগে প্রতি বছরই আমাদের প্রত্যাশা থাকে অনেক৷ এবছরও প্রত্যাশা আছে। বিক্রিও ভালোই হচ্ছে৷ ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন৷ কয়েকদিন পরে ভিড় আরও বাড়বে৷ আশা করছি ভালো বিক্রি করতে পারবো৷

নিউমার্কেটের চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী বলেন, বিক্রি শুরু হইছে মাত্র। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বিক্রিও বাড়তে থাকবে৷ আশা করছি এবার ভালো বিক্রি হবে৷

প্রতি বছরের মতো ঈদ কেন্দ্র করে সেখানকার মার্কেটগুলোতে প্রচুর লোকসমাগম হয়৷ তাই নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়৷ এবারও কন্ট্রোল রুমসহ মার্কেটের আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে৷ আরটিভি