
কুড়িগ্রামে শীতের প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা কমে জনজীবনে নেমে আসছে স্থবিরতা।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।
রাজারহাট কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জেলায় তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। একই সঙ্গে একটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনাও রয়েছে। বর্তমানে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, প্রচণ্ড শীতে কুড়িগ্রামের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। দিন ও রাত দু’সময়ই হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে গোটা জেলা। ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত কুয়াশার কারণে অনেক যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় দিনের বেলায়ও তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কম থাকছে। সূর্যের তাপ তেমনভাবে ছড়াতে পারছে না। ফলে দিনের বেলাও কনকনে ঠান্ডায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষজন, বিশেষ করে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষরা।
এসময় জেলার মাধ্যমিক, মাদরাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা ও তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা চলায় শীত উপেক্ষা করে সকালবেলা শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হচ্ছে। হিমেল বাতাস ও কনকনে ঠান্ডার মধ্যে অনেক কষ্টে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে তারা।
এছাড়া জেলার পাঁচটি উপজেলার নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। নদী পার হয়ে চলাচল করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে হাসপাতালে প্রতিদিনই বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর চর ও দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দারা হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
অন্যদিকে, প্রবল শীতের কারণে জেলার লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে চরম ব্যস্ততা দেখা দিয়েছে। লেপ-তোষক বানাতে হিড়িক পড়েছে। পাশাপাশি শীতের পোশাক কিনতে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন শীতার্ত মানুষজন।