News update
  • 5mmcfd gas to be added to national grid from Kailashtila gas field     |     
  • ArmArmed Forces Day: Tarique's message draws on historic closeness     |     
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     

ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন জেলেনস্কি

বিবিসি কুটনীতি 2025-02-27, 1:40pm

rterwrqweq-127dab3c1b79f6a88bd35f5c037a90be1740642009.jpg




ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকার বিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মি. জেলেনস্কি যদিও এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে প্রাথমিক হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, তিনি চান যে এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বলয়ে অন্তর্ভুক্ত হোক— যাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর নতুন করে কোনও আগ্রাসন চালালে তা প্রতিহত করা যায়।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র "খুব বেশি" নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেবে না, বরং ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেওয়ার এই দায়িত্ব ইউরোপের নেওয়া উচিত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার সম্ভাবনাকেও একপ্রকার নাকচ করে দিয়েছেন, যদিও এটি পাওয়া মি. জেলেনস্কির দীর্ঘদিনের একটি লক্ষ্য।

গত বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ক্যাবিনেটে বলেন, বিরল খনিজ পদার্থ উত্তোলন করতে ইউক্রেনের মাটিতে আমেরিকার কর্মীদের উপস্থিতিই ইউক্রেনকে "স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা" দিবে।

মি. ট্রাম্প বলেন, কিয়েভকে ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার চিন্তা "ভুলে যেতে" হবে। এসময় তিনি রাশিয়ার দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন যে এই বিষয়টিই যুদ্ধ শুরুর অন্যতম কারণ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, "মানুষ মারা বন্ধ করতে আমরা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সাথে একটি চুক্তি করবো।"

কিন্তু মি. জেলেনস্কি বলেছেন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া "আমরা যুদ্ধবিরতিতে যাবো না, কিছুই কাজ করবে না, কিছুই সফল হবে না।"

তিনি বলেন, "আমি ন্যাটো বা তার অনুরূপ কোনও পথের সন্ধান পেতে চাই।"

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিরোধিতা করে আসছে। কারণ রাশিয়া মনে করে, এটি হলে ন্যাটোর সামরিক বাহিনী রাশিয়ার সীমান্তের খুব কাছাকাছি চলে আসবে।

বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক জোট ন্যাটো ২০০৮ সালে বলেছিলো, ইউক্রেন এতে যোগ দিতে পারে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের পরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু রাশিয়া এর বিরোধিতা করেছে।

এদিকে, ওয়াশিংটনে রাশিয়ার সাথে প্রাথমিক আলোচনায় ইউরোপের কাউকে রাখা হয়নি।

গত বুধবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ কায়া কালাস বলেছেন, "ইউরোপের মাটিতে কোনও চুক্তি কার্যকর করতে হলে তাতে ইউরোপীয়দেরও সম্মতি দিতে হবে।"

গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে কায়া কালাসের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবেই সেই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে।

বাতিলের কারণ হিসাবে উভয় পক্ষই সময়সূচি সংক্রান্ত জটিলতার কথা বলেছে।

মি. জেলেনস্কি বলেছেন, খনিজ সম্পদ চুক্তির সাফল্য নির্ভর করবে চলতি সপ্তাহে ট্রাম্পের সাথে তার বৈঠকের ফলাফলের ওপর। বুধবার সন্ধ্যায় তার সরকারও এতে সমর্থন দেয়।

চুক্তির বিস্তারিত এখনও প্রকাশ হয়নি। তবে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিহাল বলেন, এই চুক্তিতে ইউক্রেনকে পুনর্গঠনের জন্য একটি "বিনিয়োগ তহবিল" আছে।

গত বছর এই চুক্তির বিষয়টি সর্বপ্রথম প্রস্তাব করেছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেই, যাতে ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাস্তব কোনও কারণ থাকে।

তবে চুক্তির মূল বিষয়বস্তু নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মি. জেলেনস্কির মধ্যকার মতপার্থক্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

প্রাথমিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের কাছ থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের খনিজ সম্পদ চাইলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন।

কিন্তু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ওই দাবি এখন বাদ দেওয়া হয়েছে।

এখন দুই পক্ষ চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছে। ডোনাল্ড ত্রাম্প এটিকে "খুব বড় চুক্তি" হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এতদিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যে অর্থ সহায়তা দিয়েছিলো, সেগুলো ফেরত পাবার সুযোগ এটি।

কিন্তু জেলেনস্কি এটিকে "ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি" বলছেন, যার ভিত্তিতে তিনি আরও চুক্তি করতে চান।

কী ধরনের খনিজ আছে ইউক্রেনের

বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের ৫ শতাংশই ইউক্রেনের হাতে আছে বলে মনে করা হয়।

১৯ মিলিয়ন টন গ্রাফাইটের প্রমাণিত মজুদ আছে। এটি ইলেকট্রিক যানবাহনের ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়

ইউরোপে যত লিথিয়াম মজুদ আছে তার এক তৃতীয়াংশই ইউক্রেনে। এটি এখন যে ব্যাটারি তৈরি হয় তার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

তিন বছর আগে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের আগে বিশ্বে যত টাইটানিয়াম উৎপাদন হতো তার ৭ শতাংশ আসতো ইউক্রেন থেকে। এটি উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত সবকিছুতেই ব্যবহৃত হয়।

ইউক্রেনের ভূমিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিরল খনিজের মজুদ আছে। সতেরটি উপাদানের এসব খনিজ অস্ত্র উৎপাদন, বায়ু টারবাইন, ইলেকট্রনিকসসহ আধুনিক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অনেক পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।

এর মধ্যে কিছু খনি রাশিয়া দখল করেছে। ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেঙ্কো হিসেবে অন্তত সাড়ে তিনশ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রাশিয়ান অধিকৃত এলাকায় আছে।