Kalapara people are benifiting from the agriculture entrepreneur project.-17-06-25
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ঝূঁকির মুখে থাকা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই জীবিকার লক্ষ্যে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাস্তবায়িত হচ্ছে “ধরিত্রী” বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝূঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরী ও বাজারজাতকরণ প্রকল্প। ক্যাথলিক এজেন্সি ফর ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট (ক্যাফোড)-এর অর্থায়নে এবং কারিতাস বাংলাদেশের বাস্তবায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ মেয়াদে। এটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়ন ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নে চালু রয়েছে।
প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কৃষি অনুশীলনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও দরিদ্র কৃষকদের জন্য টেকসই আয়ের পথ তৈরি করা এবং নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা। প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৬৯৪ জন সরাসরি উপকারভোগী হয়েছেন, যার মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। পরোক্ষভাবে উপকারভোগী হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪৬৭ জন, যারা জৈবসার ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব কৃষি ও বাজার সংযোগের সুবিধা পাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২৮০ জন কৃষক কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন ও বিক্রয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট কেঁচো সার ১৪টি বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বাজারজাত করা হচ্ছে।
প্রকল্পের ‘ভার্মি গ্রুপ’ নামক উদ্যোগের মাধ্যমে ১০টি দলে ভাগ করে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বৈঠক ও অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচি চালু রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯৩ জন কৃষককে কেঁচো সার উৎপাদনে সহায়তা হিসেবে ৫,০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
ফসল ও সবজি চাষে ১৩৫ জন কৃষক পেয়েছেন ৩,৫০০ টাকা করে অনুদান এবং ৪ জন নারী উদ্যোক্তাকে নারী কর্নার স্থাপনের জন্য দেয়া হয়েছে ২৩,৫২৫ টাকা করে।
উপজেলার পুরান মহিপুর গ্রামের মোসা. পারভিন বেগম বলেন, “আমার নয় সদস্যের পরিবারের উপার্জনের কেউ ছিল না। কারিতাস মহিপুর অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করি। পরে তারা আমাকে ৩,৫০০ টাকা সহায়তা দেয়। এখন শাকসবজি চাষ করে প্রতি মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করি।”
মনোহরপুর গ্রামের মায়া রানী জানান, “তিনটি চারি ও পাঁচটি রিং ব্যবহার করে কেঁচো সার উৎপাদন করি। এতে মাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় হয়।”
বিপিনপুর গ্রামের হেনা বেগম জানান, “অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকলেও কারিতাসের ২৩,৫২৫ টাকা সহায়তা পেয়ে একটি দোকান শুরু করেছি। এখন সংসার ভালোভাবে চালাতে পারছি।”
ধরিত্রী ও একরাব প্রকল্পের জুনিয়র কর্মসূচি কর্মকর্তা মি. জর্জ বৈরাগী, বলেন, "ধরিত্রী” প্রকল্প চলমান রেখে পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে মানুষকে স্বাবলম্বী করা সম্ভব"
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.আরাফাত হোসেন বলেন, “কারিতাসের উদ্যোগে মহিপুরের প্রান্তিক কৃষকরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পরিহার করে কেঁচো সার ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। এ ধরনের কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া উচিত।” - গোফরান পলাশ