News update
  • Global secondhand apparel market may reach $367 bn by 2029     |     
  • Volker Turk for probe into Russian attack killing 9 Ukr kids      |     
  • OIC Condemns Execution of Medical, Humanitarian Personnel by Israel     |     
  • Calamity could be game-changer that leads to peace in Myanmar     |     
  • World Health Day: Focuses on women’s physical, mental health     |     

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ক্যাম্পাস 2025-04-06, 3:18pm

retretretdsfsf-1d311b4f5554b0ac1891f6a19e89f9e21743931119.jpg




উন্নত ক্যারিয়ার ও উত্তম জীবনযাত্রার উৎকৃষ্ট নির্ণায়ক হলো বিদেশে উচ্চশিক্ষা। আর সেজন্যেই প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান তাদের স্বপ্নের দেশে। বিদেশি ইউনিভার্সিটির প্রাঙ্গনে প্রবেশের প্রথম দিনটির পেছনে থাকে শত প্রচেষ্টা। নূন্যতম এক বছরের একটি সুপরিকল্পিত কার্যকলাপের উত্তরোত্তর সফলতার চূড়ান্ত ফল হিসেবে পেরনো যায় যায় দেশের সীমানা।

এই পরিকল্পনার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সঠিক তথ্য ভান্ডার। এই জায়গাটিতে ঘাটতি থাকলে পুরো পরিকল্পনাটাই বিফলে যেতে পারে। আজকের ফিচাটি তেমনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে, যেগুলো সেই পরিকল্পনায় রশদ যোগাতে পারে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?

সবার আগে যে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে তা হলো- দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্য চূড়ান্তভাবে মনস্থির করা। সম্পূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক দিক হলেও পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের সময় এর প্রভাব পড়ে থাকে। যেহেতু এখানে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের পরীক্ষা দিতে হয় তাই মানসিক ও শারীরিক শ্রমের পাশাপাশি একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সময় ও অর্থের খরচ করতে হয়।

এক্ষেত্রে প্রথমেই যেকোনো সম্ভাব্য কার্যক্রমের জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য মনস্থির করাটা আবশ্যক।

আর এর মনস্থির হওয়া সামনের প্রতিটি কাজের জন্য পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে। অনেকের ক্ষেত্রে এই সংকল্প ও পরিকল্পনার যুগপৎ ক্রমবিকাশ ঘটে ব্যাচেলর ডিগ্রী নেয়ার শুরু থেকেই। জব মার্কেটের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বিষয়টি নির্বাচন সাধারণত এ সময়েই করা হয়ে থাকে। এর ধারাবাহিকতাতেই পরবর্তীতে ব্যাচেলর শেষ করে সেই বিষয়েই উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া যায়।

আন্ডারগ্রাজুয়েশনের এই সময়টাতে উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনায় রশদ যোগাতে সহায়ক হতে পারে ক্যারিয়ার ও বিদেশে উচ্চশিক্ষার উপর বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ অথবা কাউন্সিলিং। তবে দিন শেষে মনস্থির করতে হবে নিজেকেই।

ভাষার দক্ষতা পরীক্ষা

ভাষা দক্ষতার ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা যাচাই বিদেশে উচ্চশিক্ষার যোগ্যতা প্রমাণের প্রথম ধাপ। অধিকাংশ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজন হয় ইংরেজি ভাষার। ইউরোপের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অন্য ভাষাতে দক্ষ হওয়ার প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে প্রধান ভাষাগুলো হলো- ম্যান্ডারিন চাইনিজ, জার্মান, ফরাসি, আরবি, জাপানিজ। ইংরেজি ভাষার শংসাপত্রগুলোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক আইইএলটিএস(ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম), টিওইএফএল(টেস্ট অফ ইংলিশ এ্যাজ এ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ) গ্রহণ করে থাকে।

যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল, আইডিপি (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট সেরা মাধ্যম।

গবেষণা, বিশ্লেষণ এবং নির্বাচন

পূর্বে পরিকল্পনার খসড়াটাকে পরিপূর্ণ রূপ দান করতে পারে এই বিশ্লেষণধর্মী গবেষণাটি। এটি মূলত কোন পর্যায়ক্রমিক ধাপ নয়; বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই গবেষণা প্রয়োজন।

প্রাথমিকভাবে কোর্স, বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অবস্থানগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। কোর্সের ভেতরে কি কি অন্তর্ভুক্ত আছে, নির্দিষ্ট বিষয়টি নিয়ে গবেষণার সুযোগ, ক্যাম্পাস জীবন এবং কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাগুলো যাচাই করতে হবে। এর জন্য ক্যারিয়ার ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনার, কাউন্সিলিং খুব কাজে লাগে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষকদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তি যুগে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সহজেই করা যায় ফেসবুকের মাধ্যমে। এখন বেশ কিছু ফেসবুক গ্রুপ আছে যেগুলোতে প্রায়ই উচ্চশিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার খরচ এবং বৃত্তির ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে জেনে নেয়া বাঞ্ছনীয়।

এসব দিক বিবেচনা করে ২ থেকে ৩টি আদর্শ গন্তব্য বাছাই করা যেতে পারে। অতঃপর প্রতিটির সুবিধা এবং অসুবিধা তুলনা করতে হবে।

একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন

শীর্ষ সিজিপি প্রাপ্তরাও এই কাজটি করে থাকে। এই একাধিক আবেদনের মূলে থাকবে চূড়ান্ত শিক্ষাবর্ষের থিসিস বা প্রোজেক্ট পেপারটি। এই গুরুত্বপূর্ণ নথিটির মাধ্যমে আরো ভালোভাবে অল্প কথায় পরিবেশন করতে হবে থিসিসের সম্ভাবনাময় দিকগুলো।

এই আবেদনের মুহূর্তে সর্বপ্রথম খেয়াল রাখতে হবে ভর্তির প্রয়োজনীয় নির্দেশনাগুলো ঠিক ভাবে পড়া হচ্ছে কিনা। আবেদন সফল হওয়া এই নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে অনুসরণের উপর নির্ভরশীল।

এর জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটির আদ্যোপান্ত ভালভাবে দেখা উচিত। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনের জন্য সংগত কাগজপত্রের শুধুমাত্র ডিজিটাল কপি চায়; কিছু আছে ডিজিটাল স্ক্যান ছাড়াও পোস্টের মাধ্যমে ফিজিক্যাল কপি পাঠানোর নির্দেশনা দেয়। এই কাগজপত্রগুলোর ব্যবস্থা করা বিশেষ করে প্রতিটি সার্টিফিকেটে তথ্যের সামঞ্জস্যতা বিধান করতে হবে। 


ফান্ডিং-এর ব্যবস্থা

ইতোমধ্যে যে দেশ বা বিশ্ববিদ্যালয়টি পড়াশোনার জন্য ঠিক করার হয়েছে; এবার তার জন্য আনুষঙ্গিক খরচ যোগাড়ের পালা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশগুলোতে টিউশন ফি’র পরিমাণ অনেক বেশি।

পড়াশোনা করার সময় কাজ করা যেতে পারে, কিন্তু শুধুমাত্র খণ্ডকালীন চাকরি করে পড়াশোনার খরচ বহন সম্ভবই নয়। তাছাড়া এটি পড়াশোনায় চাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজের জন্য প্রতি সপ্তাহে সীমিত সংখ্যক ঘন্টা বরাদ্দ থাকে।

নরওয়ে, জার্মানি, চীনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের জাতীয়তা নির্বিশেষে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডিগ্রি প্রদান করে। কিন্তু এর বাইরেও আছে জীবনযাত্রার বিশাল খরচ। তাই বৃত্তির জন্য আবেদন করা ফান্ডিং-এর সেরা উপায়।

এছাড়া দেশের বাইরে যাবার পূর্বে সে দেশে থাকার যাবতীয় ব্যায়ভার বহনের জন্য ব্যাংক-ব্যালেন্স দেখানোর ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে।

ভিসা প্রক্রিয়াকরণ

যে দেশে পড়াশোনার জন্য চেষ্টা চলছে সে দেশে যাবার জন্য এবার অনুমতি নেয়ার পালা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে সংক্ষিপ্ত ভাষা কোর্সে কখনও কখনও ট্যুরিস্ট ভিসায় অধ্যয়নের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তিন মাসের বেশি সময় ধরে প্রায় সমস্ত কোর্সের জন্য স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হবে। সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করার আগে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির জন্য অফার লেটার পেতে হবে। প্রয়োজনীয় ভর্তি ফি প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সরবরাহ করবে।

ভিসা প্রক্রিয়া দেশ থেকে দেশে ভিন্ন হয়। তাই ভিসা আবেদনের মূহূর্তে প্রাসঙ্গিক নিয়মগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করতে হবে।

আবাসনের ব্যবস্থা করা

কিছু কিছু বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের প্রোগ্রামে ভর্তি বাবদ শিক্ষার্থীদের আবাসন সরবরাহ করে বা ভালো পরিমাণের বৃত্তি পাওয়া গেলে তাতে আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। এর বাইরে বিভিন্ন ধরণের আবাসনের ব্যবস্থার সময় শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। তাই থাকার জায়গাটি নিজের দেশ থেকে ঠিক করে যাওয়াটাই উত্তম।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার সময় স্টুডেন্ট ডরমিটরি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি থাকার জন্য বেশ ভালো উপায়। সাধারণত সব ডর্মগুলোই আলাদা থাকে কিন্তু কখনো রান্নাঘর বা বাথরুম শেয়ার করতে হতে পারে।

স্থানীয়দের সাথে শেয়ার করে থাকাটা সাশ্রয়ের মধ্যে আরেকটি ভালো উপায়। এটি হতে পারে কোন একজন বা পুরো পরিবারের সাথে বসবাস করা; বাংলাদেশে যেটাকে সাবলেট বলা হয়।

এগুলোর বিকল্প হিসেবে আছে অ্যাপার্টমেন্ট। এই মাধ্যমটিতে আলাদা ভাবে নিজের মত করে থাকা গেলেও একটু বেশি খরচ গুনতে হবে। অনেকে একসাথে কয়েকজন মিলে একটা অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে থাকে।

ভ্রমণ প্রস্তুতি

সবকিছুর প্রস্তুতি শেষ; এবার সময় হলো প্লেনে উঠার। যতটা সম্ভব আগে ভাগে প্লেনের টিকেট করে রাখাটা ভালো। এতে টিকেট খরচ বাঁচানো যায়। টিকিটের জন্য বাতিল বা পরিবর্তন নীতিগুলো যাচাই করে নিতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস কবে শুরু হবে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তার আগে যথেষ্ট সময় রেখেই সেই দেশে পৌছাতে হবে। কেননা পারিপার্শ্বিকের সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন।

লাগেজ গুছানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনের নির্দেশনাগুলোর দিকে যথাযথ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রত্যেকটি এয়ারলাইনেরই নির্দিষ্ট সীমারেখা থাকে। অতিরিক্ত স্যুটকেস বা লাগেজের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়।

তবে গোছ-গাছের সময় যে জিনিসগুলো মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি সেগুলো হলো স্টুডেন্ট আইডি, পাসপোর্ট এবং কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র। এর সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের

এই পদক্ষেপগুলোর সঠিক অনুসরণ বিদেশে উচ্চাশিক্ষার জন্য যাবতীয় পরিশ্রমকে সার্থক করে তুলতে পারে। এখানে বলা বাহুল্য যে, জীবনের প্রতিটি অর্জনের অন্তরালে নিজেকে প্রমাণের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা অনস্বীকার্য। বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ফাইনাল পরিক্ষার মতই দেশের বাইরের বিদ্যাপীঠগুলোতে পড়াশোনার জন্য নিজের যোগ্যতা প্রমাণের পরীক্ষায় উতড়ে যেতে হয়। স্বভাবতই পরিক্ষার আগের দিনগুলোর প্রস্তুতির মত এখানেও উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করে এই পূর্ব প্রস্তুতির উপর।