জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখ সারিতে লড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবি থেকে শুরু করে ফ্যাসিবাদ পতনের একদফা পর্যন্ত আন্দোলনের প্রাণভোমরা ছিলেন তারা। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই হন এই আন্দোলনের প্রথম শহীদ। শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রতিরোধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে পালাতে বাধ্য হয় নিপীড়নকারীরা। মহাসড়ক, রেলপথসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করলে আন্দোলনে যোগ হয় নতুন মাত্রা।
১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সর্বপ্রথম ছাত্রসমাবেশ ও বিক্ষোভের মাধ্যমে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত। পরবর্তীতে বাংলা ব্লকেড ও শাহবাগ অবরোধসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনকে চাঙা করে রাখেন ঢাবির শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপত্তিকর মন্তব্যের পর সেই রাতেই সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়র বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে প্রতিবাদ জানান তারা। ১৫ জুলাই প্রতিবাদ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলে পড়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ বহিরাগতরা। এর পরও দমে না গিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলপাড়ায় মিছিলের সময় বিজয় একাত্তর হলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হলে, নিপীড়কদের ভীত নড়বড়ে হয়ে যায়। ক্রমেই হল ছেড়ে পালাতে থাকে নির্যাতনে জড়িতরা।
হলে না থাকলেও ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগঠিত হয়ে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র, গুলিস্তানের নুর হোসেন চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে শহীদ হলে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে যায় সারা দেশে।
১৮ জুলাই উত্তরার আজমপুরে শহীদ হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান। আন্দোলনকারীদের জন্য তার পানি সরবরাহের দৃশ্য নাড়া দেয় দেশবাসীর হৃদয়ে।
জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিবাদের দোসরদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে কাঁপিয়ে তোলেন রাজপথ। আন্দোলনে শহীদ হন দুই শিক্ষার্থী- ফরহাদ হোসেন ও হৃদয় তরুয়া।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচিতে পুরো আন্দোলনজুড়ে সক্রিয় ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজপথে সক্রিয় ছিলেন রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অবদান নিয়ে রোববার থাকছে বিশেষ প্রতিবেদন। সময়