
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। অবশেষে ১০ হাজার ২১৯টি সহকারী শিক্ষক পদে বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন করে বড় পরিসরে জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হলো।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে। প্রথম ধাপে রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।
ডিপিই’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হবে।
এই নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী, যা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২ নভেম্বর প্রকাশ করেছে। এর আগে ২৮ আগস্ট একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও কিছু ত্রুটির কারণে তা স্থগিত ছিল।
৩১ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চেয়ারম্যান করে আট সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
নতুন বিধিমালায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হয়েছে। আগে যেখানে “অন্যান্য বিষয়ে” শব্দটি ছিল, সেখানে এখন “বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন” শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
এছাড়া প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক উভয় পদের সরাসরি নিয়োগের জন্য স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য হবে না।
উভয় পদের সরাসরি নিয়োগের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ বছর। প্রধান শিক্ষক পদে ৮০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। পদোন্নতির জন্য সহকারী শিক্ষক হিসেবে ন্যূনতম ১২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর আগে জানান, বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে এবং নভেম্বরের মধ্যেই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা ছিল।