ভারতকে কাঁদিয়ে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। জশ বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটিতে আজ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ভারতকে।
বাটলার-হেলস উদ্বোধনী জুটিতেই ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ১৬৯ রানের টার্গেটে পৌঁছে যায়। জুটিতে ১৭০ রান তুলে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের ইতিহাসে যেকোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ড গড়েন বাটলার ও হেলস। বাটলার ৮০ ও হেলস ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
এ ম্যাচে ইংল্যান্ড তাদের সেরা পারফরমেন্স বলে মনে করেন বাটলার। ইংল্যান্ড অধিনায়কের সাথে একমত পোষন করেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও।
আবারও বিশ্ব কাপ খেলতে পারবেন কখনও চিন্তাও করেননি ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্ব কাপের আগ মুর্হূতে মাদক সেবন করে দল থেকে বাদ পড়া হেলস। সেমিফাইনালের সেরা খেলোয়াড় অ্যালেক্স হেলসের কাছে এই রাত ক্যারিয়ারের সেরা।
অ্যাডিলেডে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে বিরাট কোহলি ও হার্ডিক পান্ডিয়ার জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ১৬৮ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। কোহলি ৪০ বলে ৫০ ও পান্ডিয়া ৩৩ বলে ৬৩ রান তুলেন।
জবাব দিতে নেমে ভারতের করা ১৬৮ রানকে হাতের মোয়া বানিয়ে ফেলেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বাটলার ও হেলস।
পাওয়ার-প্লেতে ৬৩, ১১তম ওভারে ১শ এবং ১৬তম ওভারে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করেন বাটলার ও হেলস। বিনা উইকেটে ১৭০ রান করে ভারতকে ১০ উইকেটে লজ্জার হারের স্বাদ দেয় ইংলিশরা। বিশ্ব কাপে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ১০ উইকেটে হারলো ভারত। গত বিশ^কাপে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছিলো ভারত। অন্য দিকে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মত ১০ উইকেটের ব্যবধানে জিতলো ইংল্যান্ড।
বিশ^কাপের মঞ্চে সেমিফাইনালে এমন দাপটের জয়কে সেরা পারফরমেন্স বলছেন বাটলার। এর মাঝেও গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ডের কাছে বৃষ্টি আইনে ৫ রানে হারকে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাটলার।
ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ডের হারের পর থেকে টুর্নামেন্টে আমরা নিজেদের চরিত্র দেখিয়েছি এবং আজ আমাদের সেরা পারফরমেন্সই দেখা গেছে। এটি ছিল অসাধারন পারফরমেন্স । আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি, যত সম্ভব এবং আক্রমণাত্মকভাবে শুরু করতে চেয়েছি। হেলস দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। মাঠের সুবিধাটা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে সে। বিশেষভাবে ক্রিস জর্ডানের প্রশংসা করতে হয়। বিশ^কাপে প্রথমবার খেলতে নেমে দারুন বোলিং করেছে সে।’
অন্য দিকে,ভারতের এমন পারফরমেন্সে হতাশ রোহিত। ইংল্যান্ডের প্রশংসা করতেও ভুল করেননি তিনি, ‘আজ আমাদের পারফরমেন্স ছিল খুবই হতাশাজনক। এটি অবশ্যই এমন উইকেট ছিল না, যেখানে একটি দল ১৬ ওভারেই টার্গেট পূরণ করবে। আমরা বল হাতে আমাদের শুরুটা ভাল হয়নি। নক-আউট পর্বে আমরা চাপ নিতে পারিনি। ইংল্যান্ডের ওপেনাররা সেরা ক্রিকেট খেলেছে। আমাদের কোন সুযোগই দেয় না তারা।’
৪৯ বল খেলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৮০ রান করেন বাটলার। ৪৭ বলে ৮৬ রান তুলে অপরাজিত থাকেন হেলস। ৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় নিজের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজান হেলস। ম্যাচ সেরা হয়েছেন হেলস।
জনি বেয়ারস্টোর ইনজুরিতে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া হেলস সেমিতেই নিজের জাত চিনিয়েছেন । তিনি বলেন, ‘আমি কখনও ভাবিনি আবারও বিশ্বকাপ খেলতে পারবো। সুযোগ পাওয়াই ছিল বিশেষ অনুভূতির। এই দেশে আমি খেলতে ভালোবাসি এবং অনেক সময় কাটিয়েছি এখানে। আজকের রাতটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা। বাটলারও অসাধারণ খেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিজের খেলার ধরনে আমি সত্যিই সন্তুষ্ট। আমি মনে করি ব্যাট করার জন্য বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্রাউন্ড এটা। শর্ট স্কয়ার বাউন্ডারি দিয়ে শট খেলাটা দারুণ। এই মাঠে আমার দারুণ সব স্মৃতি আছে।’ তথ্য সূত্রঃ বাসস।