জাতীয় নিরাপত্তাজনিত কারণে, কানাডা তাদের দেশের ফাইভ-জি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে, চীনের টেলিযোগাযোগ কোম্পানী হুয়াওয়ে এবং জেডটিই-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন কানাডার কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের পর কানাডাও দীর্ঘ প্রতিক্ষীত এই পদক্ষেপটি গ্রহণ করল। হুয়াওয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটকের কারণে, কানাডা এবং চীনের মধ্যে সৃষ্ট একটি কূটনৈতিক বিবাদের ধারাবাহিকতায় এমন এক পদক্ষেপের ঘোষণা আসল। যুক্তরাষ্ট্রের এক গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে ঐ কর্মকর্তাকে আটক করেছিল কানাডা। বিষয়টির এখন নিস্পত্তি হয়েছে।
চীনের প্রযু্ক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোতে প্রবেশাধিকার দিলে নিরাপত্তার উপর তার প্রভাব সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই সতর্ক করে আসছিল। এমন প্রবেশাধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে গুপ্তচরবৃত্তিতে ব্যবহার করা হতে পারে বলে বলা হয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তায় ।
হুয়াওয়ে এবং বেইজিং, উভয়েই এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। একই সাথে, টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম সরবরাহকারী এই প্রতিষ্ঠানের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে, তার প্রতিক্রিয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছে চীন।
কানাডার নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে এএফপি হুয়াওয়ের কাছে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করলে, কোম্পানিটি তাৎক্ষণিকভাবে তাতে সাড়া দেয়নি।
কানাডার শিল্পমন্ত্রী ফ্রসোঁয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেন এবং জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মার্কো মেনডিসিনো এক সংবাদ সম্মেলনে ঐ ঘোষণা দেন।
কানাডা কয়েক বছর ধরেই ফাইভ-জি প্রযুক্তি এবং নেটওয়ার্কে প্রবেশাধিকারের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আসছে। প্রাথমিকভাবে ২০১৯ সালে সিদ্ধান্তের বিষয়ে আশা করা হলেও, কানাডা বারবারই সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিলম্বিত করেছে।
কানাডার দুই নাগরিককে চীন কারাবন্দী করলেও টেলিযোগাযোগ বিষয়ে কানাডা নিশ্চুপ থেকেছে। কানাডার ঐ দুই নাগরিক হলেন কূটনীতিক মাইকেল কোভরিগ এবং ব্যবসায়ী মাইকেল স্পাভর। পর্যবেক্ষকরা ধারণা করেন যে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে, হুয়াওয়ের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মেং ওয়াংঝুকে ভ্যাঙ্কুভারে্ আটকের প্রতিশোধ হিসেবেই, কানাডার এই দুই নাগরিককে আটক করা হয়েছিল।
তাদের তিনজনকেই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তি দেওয়া হয়। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটরদের সাথে, মেং তার বিরুদ্ধে আনীত জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে এক সমঝোতায় পৌঁছান। এর ফলে তার নিজ দেশে ফেরার আইনী লড়াইয়ের অবসান হয়। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।