News update
  • New Approach Must for Dhaka to Break Climate Aid Debt Trap     |     
  • UN High Seas Treaty Clears Ratification, Set for 2026     |     
  • UAE Suspends Visas for Bangladesh, Eight Other Nations      |     
  • Young disabled people of BD vow to advocate for peace     |     
  • World Leaders Urged to Defend Human Rights and Justice     |     

গভীর কাঠামোতে অনুসন্ধানে তেল গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল

খবর 2021-08-15, 11:54am

EP Talks



দেশে আরও তেল গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল উল্লেখ্য করে প্রফেসর এম তমিম বলেন, যুদ্ধের সময়তো কামান গোলাবারুদ কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা যাবে না। তেল গ্যাস অনুসন্ধানও যুদ্ধের মতো। তাই বাপেক্সকে নানা সরকারি নিয়ম-নীতির জালে বেঁধে রেখে অনুসন্ধান কাজে সাফল্য পাওয়া যাবে না। শনিবার (১৪ আগস্ট) অনুষ্ঠিত ইপি টকসে প্রধান অতিথি হিসাবে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেছেন। এই আয়োজনে যুক্ত জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইতোমধ্যে হাতে থাকা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে গভীর কাঠামোতে তেল গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা আরও যাচাই-বাছাই করে ৭-১০টি লোকেশনে গভীর স্তরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান কাজ শুরুর পরমর্শ দিয়েছেন।
মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের এমটুকে ইপি টকস অন ডিপ অ্যান্ড হাইপ্রেসার জোন হাইড্রোকার্বন এক্সপ্লোরেশন প্রসপেক্ট ইন বাংলাদেশ শিরোনামের ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে যুক্ত ছিলেন বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর ড. এম তামিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপেক্স এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মতুর্জা আহমেদ ফারুক চিশতি। প্যানেলিস্ট হিসাবে কানাডা থেকে যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. বদরুল ইমাম, ঢাকা থেকে যুক্ত ছিলেন ইউএমসি ও ওশান এনার্জির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এম ফরিদউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূ-তত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্ন থেকে যুক্ত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আবদুস সালেক সূফি।
প্রফেসর তামিম বলেন, হঠাৎ করে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহ কমে গেলে জ্বালানি সরবরাহে বড় বিপর্যয় হতে পারে। কেননা এলএনজির জোগান বৃদ্ধি করে এই ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না। আশা করতে চাই হঠাৎ উৎপাদন কমবে না। যদিও গত এক বছর সময়কালে দেশীয় উৎপাদন ১৫০-২০০ এমএমসিএফডি কমে গেছে।
বিদেশি কোম্পানিকে যখন কাজ করার অনুমোদন দেয়া হয় তখন যথাযথভাবেই ডেপথ লিমিট করে দেয়া উচিত। ডিপ জোনকে আলাদা জোন হিসেবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
আমাদের যেকোনো সম্ভাবনা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। ঝুঁকি কম থাকা এলাকায় যেমন ড্রিল করতে হবে তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতেও কাজ করতে হবে। আগে ভার্জিন ফিল্ডে কাজ করে ৩টা ড্রিল করে একটায় গ্যাস পাওয়া গেছে। এখন অন্তত ৫টা ড্রিল করা উচিত। ড্রিল করে সবসময় সাফল্য পাওয়া যাবে এমন নয়। কিন্তু সাফল্য না আসলেও অনুসন্ধান অব্যাহত রাখতে হবে।
অফশোরে কাজ করার জন্য আমাদের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যেতেই হবে, বাপেক্স একা এটা করতে পারবে না। তবে সবার আগে অফশোরে মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে শেষ করে তথ্য ভান্ডার গড়ে তুলতে হবে। নইলে কেউ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিনিয়োগ করবে না।
বাপেক্স এর পরামর্শক এম ফরিদউদ্দিন বলেন, গ্যাস শেষ যাচ্ছে এমন ভেবে আতংকিত নই, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাপেক্স ব্যবস্থা নিচ্ছে। যেভাবে গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে তা কিভাবে মেটানো যায় তা নিয়ে কাজ হচ্ছে। নিজেদের উৎস থেকে গ্যাস সংগ্রহ করতে হবে। এজন্যই গভীর স্তরে কূপ খনন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
আগে আমরা খুব কম গভীরতায় খনন করেই গ্যাস পেয়েছি। তখন গভীরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বলছে আমাদের তা শুরু করতে হবে।
ইতোমধ্যে হাইপ্রেসার জোনে খননের জন্য ৪টি ইওআই আহ্বান করা হয়েছে, বাপেক্স আরও ৫টির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামসহ তিতাস, বাখরাবাদ, রশিদপুরসহ আরও কিছু জায়গায় এখনই গভীর স্তরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের সুযোগ আছে।
প্রফেসর বদরুল ইমাম বলেন, আমাদের ওভারপ্রেসার জোনে গ্যাস আছে কি নেই তা নিয়ে এখনো যথেষ্ট সমীক্ষা হয়নি। এটা করা প্রয়োজন। অন্যদিকে বেশ কিছু কাঠামোতে গভীর স্তরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের সুযোগ আছে। যদিও তা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই হাতে থাকা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মডেলিং করার পর গভীর স্তরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করা উচিত।
প্রফেসর আনোয়ার হোসেন ভূইয়া বলেন, বাপেক্সের ২ডি এবং ৩ডি সিসমিক পর্যালোচনা করে দেখা গেছে অঞ্চল ভেদে ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ কাঠামো রয়েছে। তথ্য বলছে, তিতাস, বাখরাবাদ, ফেঞ্চুগঞ্জ, শাজবাজপুর ও পাবর্ত্য চট্টগ্রামে এখনো গভীর স্তরে অনুসন্ধানের সুযোগ আছে এবং বড় সাফল্য পাওয়া যেতে পারে। একই সাথে বাপেক্সের হাত থাকা তথ্য বিশ্লেষণ করে আগামী কয়েক বছরে আরও সাড়ে ১০ হাজার লাইন কিলোমিটার ২ডি এবং ৩০০০ বর্গ কিলোমিটার ৩ডি সিসমিক সার্ভে করার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। যা তেল গ্যাস অনুসন্ধানে সম্ভাবনাময় অঞ্চল চিহ্নিত করতে সহায়ক হবে।
খন্দকার আবদুস সালেক সালেক সূফি বলেন, গভীর কূপ খননে চ্যালেঞ্জ আছে। কিছু বিদেশি কোম্পানির ভুলের কারণে কয়েকটি ফিল্ড ব্লোআউট হয়েছে। ফলে গভীর কূপ খনন নিয়ে সরকারের এক ধরনের আতংক আছে। বর্তমানে বিদেশি অভিজ্ঞ কোম্পানি বা কন্ট্রাকটরের সঙ্গে গভীর কূপ খনন নিয়ে চুক্তি করা প্রয়োজন। অথবা বাপেক্সের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার করা যেতে পারে। বাপেক্সকে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এনে, বাংলাদেশি এক্সপার্ট যারা দেশের বাইরে কাজ করছেন তাদের সংশ্লিষ্ট করে নতুন পরিকল্পনা করা যেতে পারে।
মূল প্রবন্ধে মর্তুজা আহমেদ ফারুক চিশতি বলেন, আমাদের মজুদ গ্যাস আগামী ১০ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। দেশে এ পর্যন্ত স্থলভাগে ১৬টা ডিপ ড্রিলিং করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪টায় গ্যাস পাওয়া গেছে। অফশোরে ৯টা ডিপ ড্রিল হয়েছে। তবে তেল বা গ্যাসক্ষেত্র পাওয়া যায়নি। সিসমিক সার্ভে তথ্যানুসারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবিষ্কৃত গ্যাস ক্ষেত্রে ও কাঠামোতে এখনই ৭
ফেঞ্চুগঞ্জে কূপ-২ ৪৯০০ মিটার পর্যন্ত খনন করা গেছে। এটা হাই প্রেশার জোন। ফ্রান্সের সহায়তায় আমরা এটা করেছি। তবে এটা নিয়ে বেশ সমস্যা হয়েছিল। নতুন রিগ দিয়ে মাড ম্যানেজমেন্ট করা যায়নি। ফেঞ্চুগঞ্জ-১ এ তেল বা গ্যাস ক্ষেত্র পাওয়া যায়নি।
তিতাস গ্যাসফিল্ড থেকে আরও গ্যাস পাওয়া সম্ভব। লোয়ার জোনে থ্রি-ডি জরিপ করার পর ৬টা জোন পাওয়া গেছে। এখানে ৩টা কূপ খননের প্রস্তাবনা রয়েছে। আশা করা যায় এখানে আরও নিচের দিকে গ্যাস পাওয়া যাবে। এখানে গভীর কুপ খনন করা গেলে গভীরে না পাওয়া গেলেও উপরের অংশের গ্যাস দিয়ে খরচ তুলে ফেলা সম্ভব।
দেশে হাই প্রেশার জোনে ব্লোআউট ঝুঁকি থাকলেও গভীর কূপ খনন করা জরুরি। তবে পিপিআর অনুসরণ করে বাপেক্সের পক্ষে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। বাপেক্সের ড্রিলিং রিগ নেই। বাপেক্সকে বিদেশি কোম্পানি নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। - ইপি টকস