News update
  • Fire breaks out at jacket factory in Chattogram     |     
  • Dhaka, Delhi agree to bring down border killings to zero     |     
  • Natore’s Baraigram OC closed over negligence in bus robbery case     |     
  • Imported fruit prices surge by up to Tk 100 per kg     |     
  • 35% of air pollution in BD originates from external sources: Experts     |     

ন্যায্য অধিকারের দাবিতে রাজপথে শ্রমিকরা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-05-01, 3:29pm

ehiwurowiopr-7b6ddc3409830ceaee5bd4e82158ee221714555847.jpg




আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে র‍্যালি ও সমাবেশ করছে শ্রমিকরা। প্রখর রোদ আর গরমকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন খাতের শ্রমিকরা। ভরা রাজপথে ন্যায্য অধিকারের পুরনো দাবিগুলো আরো একবার তুলে ধরেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো।

বুধবার (১ মে) সকাল থেকেই জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় এসব খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। সেখানে আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের দাবি তোলেন শ্রমিকরা। দ্রব্যমূল্য ও জীবন যাপনের ব্যয় বিবেচনা করে জাতীয় মজুরি আইন ঘোষণা ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি শ্রমিকদের মতামত উপেক্ষা করে সংসদে তোলা শ্রম আইন ও অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল প্রত্যাহারসহ জানানো হয় ৯ দফা দাবি। পাশাপাশি বেসরকারি শিল্পের নারী শ্রমিকদের ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি চালু, মজুরি আন্দোলনে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চান শ্রমিকরা।

তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে বুধবার সকাল থেকে মাথায় লাল পট্টি, হাতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন আর পতাকা, গায়ে নিজ নিজ শ্রমিক সংগঠনের টি-শার্ট জড়িয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা।

সেখানে অবস্থান ও বক্তব্যের পর বেলা ১১টার দিকে মিছিল যায় পল্টন মোড়ে। মিছিলের স্রোত গিয়ে মেলে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) সমাবেশে প্রাঙ্গণে। সেখানে স্লোগান দিতে দিতে নিজেদের কর্মী নিয়ে একে একে যোগ দেন স্কপের ১২টি জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। এরপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সব কর্মীদের নিয়ে মিছিল বের করেন স্কপ নেতারা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্কপ সমাবেশে এবারের মে দিবসের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি আশিকুল আলম চৌধুরী। সেখানে বলা হয়, ১৩৮ বছর পর এবারের মে দিবস শ্রমজীবীদের সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে।

আশিকুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ৭ কোটি ৩৬ লাখ শ্রমশক্তির ৮৫ শতাংশ অপ্রতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাদের শ্রম ঘণ্টা, ন্যায্য মজুরি, কাজের নিশ্চিয়তা এবং নিরাপত্তা কোনটাই নাই। জাতীয় মজুরি আইন নিয়ে চলছে দীর্ঘসূত্রতা। শ্রমিকদের সংগঠন করার স্বাধীনতাকে বিভিন্নভাবে সঙ্কুচিত করে রাখা হয়েছে। সবশেষ শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সর্বোচ্চ উপায় হিসেবে ধর্মঘট করার অধিকারও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইনের খড়গের নিচে।

এ অবস্থায় সব শ্রেণির শ্রমিককে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জোটের যুগ্ম সমন্বয়কারী মইনুল আহসান জুয়েল। তিনি বলেন, সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চরমে, শ্রমিকরা দুই বেলা ভাত জোটাতে পারছে না। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমরা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আদায় করতে পারিনি। আর সরকার বার বার বলছে, উন্নয়নের জোয়ারে বাংলাদেশ ভাসছে।

সমাবেশে উত্থাপিত স্কপের ৯ দফা দাবিগুলো হল-

• ৮ ঘণ্টা কর্ম দিবস বাস্তবায়ন

• আউট সোর্সিং বন্ধ করা

• অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহার

• ধর্মঘটের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব না করা

• আইন করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা এবং সেক্টার ভিত্তিক মজুরি নির্ধারণ

• শ্রমিকদের রেশন, আবাসন, শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক ধারাসমূহ বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রবর্তন

• প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং মালিকানা নির্বিশেষে ইপিজেড, ইডিজেডসহ সকল সেক্টরের শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদান করা

• শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

• কর্মক্ষেত্রে নিহত-আহতদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

পুরানা পল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত সড়কে সমাবেশ ও মিছিল নিয়ে যোগ দেয় জাতীয় শ্রমিক জোট, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন, বহুমুখী হর্কার্স সমিতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ দর্জি শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশন, ইমারত শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ, বাংলাদেশ টেড ইউনিয়ন সংঘ, কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন, গ্রীন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, ঢাকা মহানগরীর প্রাইভেট কার ও ট্যাক্সি ক্যাব ড্রাইভার্স ইউনিয়ন, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, লেবার পার্টি, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কসহ বিভিন্ন সংগঠন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এদিন ঢাকার পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও পরে লাল পতাকা মিছিল করে। এছাড়া জাতীয় শ্রমিক লীগ ও জাতীয়বাদী শ্রমিক দল বিকেলে যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও নয়া পল্টনের সড়কে সমাবেশ করবে।