জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ঢাকা সফরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর ইঙ্গিত নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আন্তোনিও গুতেরেসের বক্তব্য গতানুগতিক। কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা নেই। তাই বাংলাদেশকে বসে না থেকে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গার একজনকেও গেল আট বছরে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। উল্টো সম্প্রতি দেশটির চলমান সংঘাতের মুখে অনুপ্রবেশ করেছে আরও প্রায় লাখ খানেক রোহিঙ্গা। এই অবস্থায় প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ঘুরে দেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংকট সমাধানে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে জোর দিয়ে আন্তেনিও গুতেরেস বলেন, বাস্তুচ্যুতদের ফেরত পাঠানোর আগে মিয়ানমারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর এ দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। তার এই বক্তব্যকে গতানুগতিক অভিহিত করে বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে প্রত্যাবাসন শুরুর ইঙ্গিত নেই।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন,রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বা জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ কার্যবিধি গ্রহণ করা হয়েছে বা এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- এমন কোনো বক্তব্য নির্দিষ্টভাবে দেয়া হয়নি। তাই সেখানে আমাদের আশার তেমন কিছু নেই।
এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টাকে আমরা এগিয়ে নিচ্ছি না। এতে খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রত্যাবাসন দুটিই আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব নিরাপত্তার ওপর সার্বিকভাবে হুমকি সৃষ্টি করবে।’
এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন,
জাতিসংঘ মহাসচিব এক ধরনের গতানুগতিক বক্তব্য দিয়েছেন। জাতিসংঘের যে প্রক্রিয়া, নিরাপত্তা পরিষদের যে রাজনীতি, সেখানে কিন্তু জাতিসংঘ ভূমিকা রাখতে পারছে না।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করা উচিত। কিন্তু সেক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাব নেয়া হয়নি। ফলে এ জায়গাগুলোতে আমাদের নজর দেয়া উচিত, জাতিসংঘেরও নজর দেয়া উচিত।’
রোহিঙ্গাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতিশ্রুতি সফরের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক বলছেন বিশ্লেষকরা। সময়।