পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। পরিবারের সঙ্গে আনন্দমুখর দিন কাটিয়ে আবারও ছুটতে হচ্ছে কর্মব্যস্ত নগর জীবনের দিকে।
বুধবার (১১ জুন) রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে গ্রাম ছেড়ে আসা মানুষের ভিড়।
প্রত্যেকেই পরিবারের মায়া, ঈদের আনন্দ আর গ্রামের স্মৃতি বুকে নিয়ে ফিরছেন কর্মস্থলে। হাতে লাগেজ, চোখে ক্লান্তি— তবুও সামনে এগিয়ে চলার তাড়া যেন সবাইকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা যায়, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন যাত্রীরা। স্টেশনজুড়ে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়।
রাহাত নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘ঈদের লম্বা ছুটি কাটালাম পরিবারের সঙ্গে। এবার কাজে যোগ দেয়া পালা। পরিবার রেখে কাজে ফেরা বরাবরের মতোই কষ্টের। মায়ের মুখটা বারবার ভেসে উঠে। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তো মানতেই হবে।’
সদরঘাটেও দেখা গেছে একই চিত্র। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। একই চিত্র বাস টার্মিনালগুলোতেও— যাত্রীরা ফিরছেন কুড়িগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফিরোজ আলম বলেন, ‘এই ক’দিন গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। এখন আবার ফিরলাম কর্মস্থলে। ঈদের আনন্দ শেষ, এখন জীবনযুদ্ধ শুরু।’
পরিবার ফেলে ফিরে আসার বেদনা সবার চোখেমুখে স্পষ্ট। তবে জীবিকার তাগিদে আবার ছুটে চলা ছাড়া উপায় নেই।
রেলওয়ে, বিআইডব্লিউটিএ ও বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদ ও ঈদ পরবর্তী যাত্রীচাপ সামাল দিতে বাড়তি ট্রেন, লঞ্চ ও বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও মোতায়েন রয়েছেন।
কমলাপুর স্টেশন মাস্টার মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফিরতি পথে ট্রেনের কোনো সংকট নেই। গতকাল মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৫টি ট্রেন ঢাকায় প্রবেশ করেছে।
ঢাকায় ফেরা এই কর্মজীবীদের ঢল আগামী কয়েকদিন চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শহর আবারও ফিরে পাচ্ছে তার চেনা গতি, কর্মচাঞ্চল্য আর ব্যস্ততা।