News update
  • 3,665 Israeli Crimes in a Week Targeting All Forms of Palestinian Life     |     
  • Rooppur NPP: Turbine installed at the first unit     |     
  • Dhaka 3rd most polluted city in the world Tuesday morning     |     
  • 5 DB policemen of RMP suspended over 'abduction', 'ransom'     |     

যে উদ্দেশ্যে বিনামূল্যে মুরগি বিতরণ করে ইউরোপের কিছু শহর

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2025-03-24, 9:04am

img_20250324_085923-cd175e7739d5f040acdfa708420541e51742785489.png




ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামের শহরগুলো বছরের পর বছর ধরে মুরগি বিতরণ করে চলেছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো, শহরের বাসিন্দাদের যে খাদ্য বর্জ্য তৈরি হয়, সেই বর্জ্যের সুহারা করা। এরপর আশ্চর্যজনক ফলাফল পাওয়া গেছে।

ফ্রান্সের কোলমারে এই উদ্যোগের সূচনা হয়েছিল ২০১৫ সালে, ইস্টারের সময় থেকে। শহরের খাদ্য বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করার জন্য সেখানকার বর্জ্য সংগ্রহকারী বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছিল এই উদ্যোগ। তারপর থেকেই সেখানে এই প্রকল্প চলে আসছে।

কোলমার অ্যাগ্লোমেরেশন (মেয়রের অনুরূপ ভূমিকা)-এর প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট মেয়ার ২০১৪ সালে পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন যে স্লোগানের হাত ধরে সেটা ছিল- 'একটা পরিবার, একটা মুরগি।'

স্লোগানের লক্ষ্য ছিল, স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা করে মুরগি দত্তক নিতে উৎসাহিত করা। পরের বছরই ওই প্রকল্প বাস্তবায়নও করা হয়। এই উদ্যোগে অংশীদার করা হয় নিকটবর্তী মুরগির খামারগুলোকে।

জনসাধারণকে এটা ভাবতে উৎসাহিত করা হয়েছিল, যে মুরগি পালন করতে তাদের যে পরিশ্রম করতে হবে, তার ফলও তারা সত্ত্বর পেতে চলেছেন। কারণ বিনামূল্যে ডিম পাবেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রাথমিকভাবে সেখানকার চারটে পৌরসভার অন্তর্গত ২০০টারও বেশি বাড়ি এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়। তাদের প্রত্যেককে দু'টো করে মুরগি দেওয়া হয়েছিল- হয় রেড চিকেন (পুলে রুজ প্রজাতি) বা সেখানকার স্থানীয় প্রজাতি আলসাসি।

অংশগ্রহণকারী প্রতিটা পরিবার মুরগি পালনের অঙ্গীকার জানিয়ে স্বাক্ষরও করে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা যে কোনও সময় বাড়িতে উপস্থিত হয়ে খতিয়ে দেখতে পারেন মুরগিগুলোকে কি অবস্থায় রাখা হচ্ছে- সেটা ভালভাবেই জানতেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তবে মুরগিগুলোর জন্য কোনও 'হেনহাউজ' সরবরাহ করা হয়নি। বরং বাসিন্দাদের উপরই এই সিদ্ধান্তটা ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল যে তারা নিজেরাই মুরগিদের জন্য থাকার জায়গা তৈরি করবেন না কি বাজার থেকে 'হেনহাউজ' কিনে আনবেন।

প্রকল্প পরিচালনাকারী বিভাগ এই বিষয়টা নিশ্চিত করেছিল যে প্রত্যেকটা বাড়িতে মুরগির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের মানদণ্ড ছিল আনুমানিক আট থেকে দশ বর্গ মিটার জায়গা, যা মুরগি পালনের জন্য যথেষ্ট।

কোলমারে এই প্রকল্প বেশ সাফল্য পেয়েছে এবং এখনও তা চলছে।

কোলমার অ্যাগ্লোমেরেশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরিক স্ট্রুমান বলেছেন, "গত কয়েক বছরে অন্যান্য পৌরসভাও এই প্রকল্পে যোগ দিয়েছে। ২০২২ সাল থেকে অ্যাগ্লোমেরেশনের ২০টা পৌরসভাই এই প্রকল্পের অংশ।"

এখনও পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের ৫,২৮২টা মুরগি বিতরণ করা হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসেও মুরগি বিতরণ করা হবে এবং তার জন্য আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছে।

এই প্রকল্পের হাত ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা যে শুধুমাত্র পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিম পেয়েছেন এমনটাই নয়, খাদ্য বর্জ্য মোকাবিলাও করতে সক্ষম হয়েছেন।

পালন করা মুরগিগুলোকে খাওয়ানোর জন্য তারা 'কিচেন ওয়েস্ট' ব্যবহার করেছেন। এই বর্জ্য তাদের কোথাও না কোথাও ফেলতে হতো, তার পরিবর্তে সেগুলো মুরগিদের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

মি. স্ট্রুমান ব্যাখ্যা করেছেন, "যেহেতু একটা মুরগির গড় আয়ু চার বছর এবং প্রতিদিন তারা ১৫০ গ্রাম জৈব বর্জ্য গ্রহণ করে, তাই হিসাব করে দেখা গিয়েছে (২০১৫ সাল থেকে) ২৭৩.৩৫ টন জৈব-বর্জ্য আমরা এড়াতে পেরেছি।"

প্রসঙ্গত, অন্যান্য বর্জ্য পদার্থের চাইতে খাদ্য বর্জ্য বায়ুমণ্ডলে আরও বেশি পরিমাণে মিথেন নির্গমন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে বলতে গেলে বর্জ্য পদার্থ থেকে বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ মিথেন নির্গত হয় তার প্রায় ৫৮ শতাংশই আসে খাদ্য বর্জ্য থেকে।

কার্বন ডাই অক্সাইডের চাইতে মিথেন বায়ুমণ্ডলে স্বল্পস্থায়ী হলেও বিশ্বের উষ্ণায়নে এর প্রভাব কার্বন ডাই অক্সাইডের চাইতে বেশি। বিশ্ব উষ্ণায়নের দিক থেকে ২০ বছরের সময় সীমায় মিথেনের প্রভাব কার্বন ডাই অক্সাইডের চাইতে ৮০ গুণ বেশি।

বিশ্ব জুড়ে মানুষের জন্য উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ অপচয় বা নষ্ট হয়, যার মোট পরিমাণ প্রতি বছর ১৩০ কোটি টন।

খাদ্য অপচয় এবং খাদ্য বর্জ্যের কারণে বিশ্বজুড়ে বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের হার আট থেকে দশ শতাংশ। এই অঙ্কটা বিমান পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ইন্ডাস্ট্রির কারণে গ্রিনহাউজ নির্গমনের প্রায় পাঁচগুণ।

সংক্রমক রোগের উদ্বেগের কারণে যুক্তরাজ্যে মুরগিকে কিচেন স্ক্র্যাপ খাওয়ানোর বিষয়টা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তবে বিশ্বের অন্যত্র কিন্তু এটা একেবারে আইনসম্মত। এতে খাদ্য বর্জ্যের পরিমাণ যেমন হ্রাস করা যায় তেমনই এটা এমন একটা চক্রের সূচনা করা যায়, যা সব পক্ষের জন্যই উপকারী।

মি. স্ট্রুমান বলেছেন, "খাদ্য বর্জ্য হ্রাস করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত এই উদ্যোগের মাধ্যমে একটা ট্র্যাডিশনাল সার্কুলার ইকনমি -র (ঐতিহ্যবাহী বৃত্তাকার অর্থনীতি) প্রচার করা সম্ভব যা আজও প্রাসঙ্গিক, বিশেষত গ্রামের ক্ষেত্রে।"

"তবে খাদ্য বর্জ্য মুরগিগুলোকে খাওয়ানো এবং তার বিনিময়ে তাজা ডিম পাওয়ার এই চল এখন শহরাঞ্চলেও দেখা যাচ্ছে।"

এই প্রকল্পের একটা বিশেষ দিকের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।

মি. স্ট্রুমান জানিয়েছেন, এর একটা অতিরিক্ত সুবিধা হলো মুরগি পালন থেকে কোলমারের শিশুরা কিন্তু প্রাণী এবং প্রকৃতির সম্ভারকে রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পেরেছে।

প্রসঙ্গত কোলমার কিন্তু একমাত্র শহর নয় যেখানে বিনামূল্যে মুরগি বিতরণের এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি কোলমারেই যে এই প্রকল্প প্রথম শুরু হয়েছিল, এমনটাও নয়।

২০১২ সালে উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আরেকটা ছোট্ট ফরাসি শহর, পানসিতে জৈব বর্জ্য কমানোর জন্য এই জাতীয় একটা উদ্যোগ শুরু হয়। সেখানকার প্রতিটা পরিবারকে দু'টো করে মুরগি দেওয়া হয়েছিল।

সেই সময় পানসির মেয়র লিডি পাস্টিউ সেখানকার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, "শুরুতে এটা মজার বিষয় ছিল, কিন্তু পরে আমরা বুঝতে পারি যে এই ভাবনাটা বেশ ভাল।"

মোট ৩১টা পরিবারকে মুরগি এবং একব্যাগ ফিড (মুরগির খাবার) দেওয়া হয়েছিল। এই উদ্যোগের সাফল্য 'বিস্ময়কর' ছিল বলেই জানিয়েছিলেন মেয়র লিডি পাস্টিউ।

বেলজিয়ামের মুস্ক্রন, অ্যান্টওয়ার্প শহর এবং লিম্বাগ প্রদেশে মুরগি বিতরণ করা হয়েছিল। সেখানকার বাসিন্দাদের অবশ্য কমপক্ষে দুই বছর মুরগি না খাওয়ার জন্য একটা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল।

শুধুমাত্র লিম্বাগ প্রদেশে এক বছরে ২,৫০০ এরও বেশি পরিবারকে পালনের জন্য মুরগি দেয়া হয়েছিল।

অন্যদিকে, রিপোর্ট অনুযায়ী মুস্ক্রনে প্রথম দফায় এই উদ্যোগ সফল হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় ৫০ জোড়া মুরগি বিতরণ করা হয়। মুরগি পালনের জন্য যে তাদের বাগানে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে তা প্রমাণ করতে হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই প্রকল্প পরিচালনাকারী বিভাগের তরফে উদ্যোগে অংশগ্রহণকারীদের মুরগি পালনের জন্য প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

তত্ত্বগত দিক থেকে এই উদ্যোগ বেশ ভাল বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষত বিশ্বের এমন কিছু অংশে যেখানে ডিমের ঘাটতি রয়েছে বা ডিম ব্যয়বহুল।

উদাহরণ স্বরূপ- ক্যালিফোর্নিয়া বা নিউ ইয়র্কে এক ডজন ডিমের দাম প্রায় নয় ডলার। কিছু কিছু প্রজাতির মুরগি প্রতি বছর ৩০০টা পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। তাই হিসাব কষলে দেখা যাবে একটা মুরগি প্রতি বছর ২২৫ ডলার পর্যন্ত দামের ডিম দিতে পারে।

যদিও খাদ্য ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাস্তব ক্ষেত্রে কিছু বাধা রয়েছে বলে মনে করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল বেহরেন্স।

তার কথায়, " যুক্তরাজ্যে এটা চালু করা যেতে পারে বলে আমি নিশ্চিত হলেও এই বিষয়ে নিশ্চিত নই যে এই ভাবনাটা ভাল কি না।"

"বার্ড ফ্লু এখন নিত্যদিনের উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান নিয়মে আপনাকে বেড়া দেওয়া অংশে বা বাড়ির ভিতরে পাখি রাখতে হবে। সেটা প্রাণী কল্যাণের দিক থেকে একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আবার যদি এমনটা না করা হয়, তাহলে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।"

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সাস্টেনেবল ফুড প্রোগ্রাম' বা টেকসই খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক মার্ক বোমফোর্ড বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এই ভাবনা ভাল কাজ করবে না।"

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বার্ড ফ্লুর কারণে ডিমের ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এর ফলে ডিমের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। তবে এটা মোকাবিলার জন্য বিনামূল্যে মুরগি বিতরণের এই প্রকল্প 'উপযুক্ত' মাধ্যম হবে না বলেই মনে করেন মি. বোমফোর্ড।

এর নেপথ্যে তিনি যুক্তি দিয়ে বলেছেন, "অর্থনৈতিক দিক থেকে ডিমের মতো একটা মৌলিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধনীদের চেয়ে দরিদ্ররা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুরগির যত্ন নেওয়ার জন্য খাদ্য, জল, আবাসন, স্থান এবং অবসর সময় প্রয়োজন।"

"নিম্ন আয়ের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই এগুলো নেই। এই সমস্ত বিষয়গুলোকে হিসাবের আওতায় আনলে এবং এর জন্য খরচ ধরলে, মুরগিকে আর বিনামূল্যে বলা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে খুব কম মানুষের কাছে ডিমের জন্য মোট ব্যয়ের সাশ্রয়টা উপলব্ধি করতে পারবেন।"

এক দম্পতি অবশ্য এর একটা অনন্য সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। সেটা ছিল মুরগি ভাড়া দেওয়া।

নিউ হ্যাম্পশায়ারের 'রেন্ট দ্য চিকেন'-এর ক্রিস্টিন এবং ব্রায়ান টেম্পলটন ছয় মাসের জন্য মুরগি, তার ফিড এবং অন্যান্য সহায়তা সরবরাহ করেন। গ্রাহকরা বাড়িতেই তাজা মুরগির ডিম যোগান পেয়ে যান। তাদের ব্যবসা বেশ ভাল চলছে বলেই জানিয়েছেন এই দম্পতি।

তবে এক্ষেত্রে 'প্রতাশ্যা পূরণের' দিকটাও মনে রাখা দরকার বলে সতর্ক করে দিয়েছেন অধ্যাপক পল বেহরেন্স।

তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, "ব্যবসার খাতিরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পরিসরে পালন করা মুরগি গৃহপালিত স্বাস্থ্যকর মুরগির চেয়ে অনেক বেশি ডিম দেয়। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আধুনিক প্রজাতির মুরগি প্রায়শই তাদের পুরো জীবন জুড়ে ব্যথার সম্মুখীন হয়। এর জন্য আংশিকভাবে দায়ী তাদের জেনেটিক্স যা মূলত আউটপুটের (ডিম দেওয়ার) উপরই মনোযোগ দেয়।"

"আর যদি পুরানো প্রজাতির মুরগি পালন করলে, আপনি যদি তাদের দীর্ঘ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকটা নিশ্চিত করেন তাহলে প্রাণী কল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো এড়াতে পারবেন। তবে নিজেদের প্রত্যাশা এবং তার বদলে কী হারাতে হবে, সেটা মানুষকে বুঝতে হবে। তাদের বুঝতে হবে কম ডিমের বিনিময়ে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর মুরগি পাওয়া যাচ্ছে।"

প্রসঙ্গত, খাদ্য বর্জ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকেই মনে করেন এই সংক্রান্ত সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার সবচেয়ে আদর্শ পন্থা হলো খাবার নষ্ট না করা। কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন যে কম্পোস্টিং খাদ্য বর্জ্য বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

অধ্যাপক বেহরেন্স বলেছেন, "তারা মনে করে- ওহ, আমরা তো (খাদ্য বর্জ্য) কম্পোস্ট হিসাবে ব্যবহার করছি। তাই (খাদ্য অপচয়ের ব্যাপারটা) ঠিক আছে।"

"প্রাথমিকভাবে বলতে গেলে খাবারের অপচয় করা খারাপ। তার উপর এর সঙ্গে মুরগি পালনের বিষয়টা জুড়লে তা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায়। এক দিকে খাদ্য বর্জ্যের ব্যবহার হচ্ছে আবার মুরগি থেকে ডিমও পাওয়া যাচ্ছে। কম্পোস্টিং করলে মানুষ যে পরিমাণে খাবার অপচয় করত এক্ষেত্রে হয়তো তার চেয়েও বেশি পরিমাণে খাবার নষ্ট করবে।"

তবে এই উদ্যোগের এমন একটা উপকার কোলমারে লক্ষ্য করা গিয়েছিল যা কেউ প্রত্যাশাও করেনি। না, মুরগি পালনের পরিবর্তে ডিমের যোগান বা খাদ্য বর্জ্য মোকাবিলার সঙ্গেও এর কোনওরকম সম্পর্ক ছিল না।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে বিষয়টা লক্ষ্য করা গিয়েছিল তাহল, মুরগি পালনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যে একাত্মতা।

স্থানীয় মানুষরা মুরগি পালনের বিষয়ে একে অপরকে সাহায্য করতেন। কোনও পরিবার ছুটি কাটাতে অন্যত্র গেলে, তাদের পালিত মুরগির যত্ন নেন প্রতিবেশীরা।

মি. স্ট্রুমানের কথায়, "এই উদ্যোগ শুরু হওয়ার সময় থেকেই এখানকার বাসিন্দারা একে স্বাগত জানিয়েছেন। ঠিক সেই কারণেই কোলমারের সমস্ত পুরসভা এখনও এই উদ্যোগে সামিল হয়।"