News update
  • Conflict, hunger, poverty impede children's early growth: Türk     |     
  • Dhaka’s air quality ‘unhealthy’ Friday morning     |     
  • Guterres to urge more humanitarian assistance for Rohingyas     |     
  • Iran, US tensions up as Trump sends letter to Khamenei      |     
  • Sea erosion shrinking Sundarbans forests      |     

মুঘল স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শন তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ধর্মবিশ্বাস 2025-03-14, 7:39am

2fa46fbf485a4a6abe91fc98e090d38e969b27b0116dc91e-bcdceab24f637d61647144439d00de6d1741916351.jpg




মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ। মসজিদটির আসল নাম খান বাহাদুর কাজী সালামতউল্লাহ জামে মসজিদ। স্থানীয়ভাবে মিয়ার মসজিদ, আবার অনেকের কাছে তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ নামে পরিচিত।

মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা মৌলবি কাজী সালামত উল্লাহ খান বাহাদুর তেঁতুলিয়ার জমিদার ছিলেন। উনিশ শতকের মাঝামাঝি তিনি মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে জনশ্রুতি থাকলেও নির্দিষ্ট সময় নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ছয় গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি মুঘল স্থাপত্য অনুকরণ করে ১৮৫৮-৫৯ সালে নির্মিত হয়।

আগ্রার তাজমহলের অপরূপ নির্মাণশৈলী সামনে রেখে তেঁতুলিয়ার এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি খুলনা-পাইকগাছা কবি সিকান্দার আবু জাফর সড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত। মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি সুগভীর বড় পুকুর। পুকুরের তলদেশ থেকে সিঁড়ি উঠে গেছে মসজিদ চত্বরে।

মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে ৯ ফুট উচ্চতা ও ৪ ফুট প্রস্থের সাতটি দরজা। প্রতিটি দরজার ওপর বিভিন্ন রঙের কাচের ঘুলঘুলি। মসজিদের অভ্যন্তরে ১০ বর্গফুটবিশিষ্ট ১২পি পিলার রয়েছে, যেগুলোর ওপর ছাদ নির্মিত। চুন-সুরকি ও চিটাগুড়ের গাঁথুনিতে নির্মিত মসজিদটিতে ১৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ছয়টি বড় গম্বুজ এবং ৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ১৪টি মিনার রয়েছে। চার কোণে রয়েছে ২৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ৪টি মিনার। মসজিদের ভেতরে পাঁচ সারিতে ৩২৫ এবং বাইরের চত্বরে ১৭৫ জন নামাজ আদায় করতে পারেন।

কমপ্লেক্সের পাশে ঝুলন্ত ছাদযুক্ত একটি লম্বা বারান্দা রয়েছে, যা দুটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এটি জমিদারদের দাফতরিক কাজে ব্যবহৃত হতো।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদটি একসময় সমতল থেকে বেশ উঁচুতে ছিল। বর্তমান অবস্থান সমতলভূমি বরাবর। মসজিদের সীমানাপ্রাচীরের মধ্যে অনেক অজানা ব্যক্তির কবরের চিহ্ন থাকলেও সেগুলো অরক্ষিত। অযত্ন এবং অবহেলায় মসজিদটি সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। মেঝে ও পশ্চিম পাশের দেয়ালের উপরের অংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। মসজিদের ৮টি ছোট মিনার ভেঙে পড়েছে, বাকিগুলোও ভেঙে পড়ার উপক্রম।

১৯৮২ সালে সালাম মঞ্জিলের প্রবেশদ্বার ‘সিংহ দরজা’ ধ্বংস হয়ে যায়। আগে এই তোরণ দিয়ে প্রবেশের সময় সবুজ প্রকৃতির সমারোহ দেখা যেত। বর্তমানে এটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে, যদিও সালাম মঞ্জিলের অন্যান্য অংশ এখনও ধ্বংসপ্রাপ্ত।

এলাকাবাসী জানান, মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। নাহলে সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে যাবে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ। তা ছাড়া এর মাধ্যমে ইতিহাস-ঐতিহ্য যেমন সংরক্ষণ হবে, তেমনি গড়ে উঠবে পর্যটন।

ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা হয়ে তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ যাওয়ার উপায়

রাজধানী ঢাকা থেকে সাতক্ষীরাগামী বিভিন্ন এসি/নন-এসি বাস সার্ভিস যেমন: এসপি গোল্ডেন লাইন, একে ট্রাভেলস, গ্রিনলাইন, মামুন এন্টারপ্রাইজ, ঈগল, সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস এবং শ্যামলী পরিবহন গাবতলী, নবীনগর, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও সাভার থেকে ছেড়ে যায়।

সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে তেঁতুলিয়া জামে মসজিদের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। সেখান থেকে বাস, রিকশা অথবা ভ্যানের মতো স্থানীয় পরিবহনে তালা-পাইকগাছা সড়ক ধরে সহজেই তেঁতুলিয়া শাহি মসজিদে পৌঁছানো যায়।

তেঁতুলিয়া শাহি জামে মসজিদ শুধু একটি মসজিদ নয়, এটি বাংলাদেশের স্থাপত্যকলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এর নির্মাণশৈলী, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং জমিদার পরিবারের স্মৃতিচিহ্ন এটিকে বিশেষ করে তুলেছে। সময়।