মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫২তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে কুয়ালালামপুরের পাঁচ তারকা হোটেল জে ডাব্লিউ মেরিয়টে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও সিনেটর দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিয়ান বিন ইসমাইল বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল, সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। পরে, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার মালয়েশিয়ার সরকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে প্রার্থনা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর, বাংলাদেশের হাই কমিশনার আগত প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিবৃন্দকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। সকলের উপস্থিতিতে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে কেক কাটা হয় এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা, পর্যটন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার তার স্বাগত বক্তব্যে শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া, তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ আত্মোৎসর্গকারী মা-বোনদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া শিক্ষা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা, সংস্কৃতি, পর্যটন, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও জ্বালানি এবং প্রবাসীদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করেছে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩৭ সালের মধ্যে ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সংকল্পের কথাও তিনি তুলে ধরেন। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু মালয়েশিয়াকে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের স্থানীয় বাজার, ৩০০ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক বাজার এবং বৃহত্তর বৈশ্বিক বাজারের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নিতে নতুন প্রতিষ্ঠিত ১০০ টি অর্থনৈতিক জোন, ৩৮ টি হাইটেক পার্ক এবং বাংলাদেশে অন্যান্য মেগা অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালিয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন বিন ইসমাইল। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিকবৃন্দ, মালয়েশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, গণমাধ্যমকর্মী, এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মালাক্কা প্রদেশের গভর্নর ও প্রভাবশালী রাজনীতিক তুন সেরি সেতিয়া ডা. হাজী মো. আলী বিন মো. রুস্তম ও তাঁর সহধর্মিনী তো পুয়ান ড. হাজা আসমা আব্দুর রহমান, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তুয়ান মুস্তাফা মোহাম্মদ ইউনুস বিন সাকমুদ; মহাসচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় টি.এস.ড. নাগুলেন্দ্রান কাঙ্গাইয়াতকারাসু; সিনেটর দাতু সেরি ভেল পার; উপ-মহাসচিব (দ্বিপাক্ষিক বিষয়), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দাতু নরম্যান বিন মুহাম্মাদ এবং উপ-মহাসচিব (বাণিজ্য), আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় হেরিল ইয়াহরি ইয়াকুব।
এরপর, উপস্থিত অতিথিগণ বাংলাদেশী শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।