News update
  • CA Yunus pays homage to Liberation War martyrs on Victory Day     |     
  • Bangladesh capital market extends losing streak for second day     |     
  • Bangladesh celebrates Victory Day Tuesday     |     
  • 'Different govts presented history based on their own ideologies': JU VC     |     

দেশের প্রথম ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন হচ্ছে চবিতে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 2025-04-09, 6:02pm

rewrwerwe-45f7db3b1c7074a13e3ab14bad426e5e1744200130.jpg




বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পূর্বাভাসের সক্ষমতা বাড়াতে দেশের প্রথম ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।

স্ট্যাশনটি ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে উপকূলীয় এলাকার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হবে। বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্রবিন্দু ধরে স্ট্যাশনটি চীনের স্যাটেলাইটগুলোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এটি দ্রুত নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

এর মাধ্যমে দেশের সমুদ্র ও বিমানবন্দর  সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য, পূর্বাভাস, সতর্কতা ও পরামর্শ দেয়া সম্ভব হবে।

জানা যায়, সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের সেকেন্ড ইন্সটিটিউট অব ওশানোগ্রাফির সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান অনুষদে দেশের প্রথম ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়।

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান অনুষদে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ কোটি টাকার কারিগরি ও যান্ত্রিক সহায়তা দিচ্ছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্টেশনটির পরিচালনায় লোকবল, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গবেষকসহ অন্যান্য ইনকাইন্ড সেবা প্রদান করবে।

আরও জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ মেরিন ডেটা হাবে রূপান্তর এবং জলবায়ু অভিযোজনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘এসজিএসএমআরএস ২০৩৫ মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করা হচ্ছে, যা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করবে।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস পেতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ), জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার (জেটিডব্লিউসি) এবং ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি) এর মতো বিদেশি সংস্থার স্যাটেলাইট তথ্যের ওপর নির্ভর করে। এসব সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাস দিতে ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এটি একদিকে যেমন সময় সাপেক্ষ, অন্যদিকে একটি পরনির্ভরশীল প্রক্রিয়া।

প্রকল্পটির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে আমরা বিদেশি সংস্থার স্যাটেলাইট তথ্যের ওপর নির্ভরশীল, যা সময়সাপেক্ষ। এসজিএসএমআরএস বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীনের এইচওয়াই-১এসআই/ডি ও এফওয়াই-৪বি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, বাতাসের গতিবিধি, মেঘের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগেই সতর্কতা দেয়া সম্ভব হবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এর মূল কাজ হচ্ছে সমুদ্রের রিসোর্সগুলোকে এক্সপ্লোর করা। এটা পুরোটাই গবেষণার উদ্দেশ্যে করা। আমাদের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে উপাত্ত নিয়ে গবেষণা করবে। সমুদ্র গবেষণাকে তরান্বিত করার জন্য যে ডেটা তা এই গ্রাউন্ড স্টেশনের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগকে চিহ্নিত করতে পারবে। বাতাসের গতিবেগ, সাইক্লোন এগুলো প্রেডিক্ট করার জন্য এটি ব্যবহার করা হবে। এই ডাটা দিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও চুক্তি করা যাবে। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হবে।’

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এর বাজেট প্রায় ২ কোটি টাকা। যার পুরোটাই চায়না সরকার অর্থায়ন করছে। আমরা শুধু জায়গা দিয়েছি, সহযোগিতা করছি।’

ইতোমধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে। ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০৩৫ সালের মধ্যে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের আশা ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি বছরের মধ্যেই গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ ও স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন তারা।